চলমান সংবাদ

মাটির ‘মটকা’র ওপর ৩০০ বছর ধরে দাঁড়িয়ে হাজার বর্গফুটের দোতলা ভবন

মাটির তৈরি মটকার ওপর ৩০০ বছর ধরে দাঁড়িয়ে ছিল হাজার বর্গফুটের একটি দোতলা ভবন। মটকার ওপর ২২ ইঞ্চি ইট-সুরকির আস্তর, এর ওপরই ছিল এই ভবনটি। চট্টগ্রাম নগরীর পাথরঘাটা নজুমিয়া লেইনে ৩০০ বছরের পুরোনো ভবন পুনঃনির্মাণ করতে গিয়ে বেরিয়ে এসেছে বিস্ময়কর তথ্য।

দ্বিতলের সমান ভবনটির মেঝের মাটি খুঁড়ে পাওয়া গেছে শতাধিক মাটির ‘মটকা’। মটকা হচ্ছে মাটি থেকে তৈরি করা একপ্রকার বিশালাকৃতির পাত্র, যা দেখতে অনেকটা কলসের মতো মনে হয়। মটকার ওপর তৈরি ভবনটির দেয়ালও ২২ ইঞ্চি পুরু। ঘরের মাঝখানে কুয়া। সেই কুয়াতে এখনও রয়েছে বিশুদ্ধ পানির ধারা।

ভবনটি থেকে পাওয়া এই ‘মাটির মটকা’গুলো প্রত্ন সম্পদ হিসেবে সংরক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছে চট্টগ্রাম ইতিহাস সংস্কৃতি গবেষণা কেন্দ্র। চট্টগ্রামের বনেদি ব্যবসায়ী শরিয়ত উল্লাহ প্রায় ৩০০ বছর আগে মিয়ানমারের রেঙ্গুন (ইয়াঙ্গুন) থেকে সার বোঝাই জাহাজে এই মাটির মটকাগুলো এনেছিলেন। মটকাগুলো মাটিতে পুঁতে রেখে তার ওপর ইট-চুন ও সুরকি দিয়ে ভবনটি তৈরি করেছিলেন বলে জানিয়েছেন শরিয়ত উল্লাহর চতুর্থ প্রজন্ম মোহাম্মদ আবুল মনসুর।

এ তথ্য শুনে বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) বিকেলে ভবনটি পরিদর্শন করেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও চট্টগ্রাম ওয়াসার চেয়ারম্যান ড. জাহাঙ্গীর আলম। এসময় তিনি বলেন, ‘ভবনটি ভূমিকম্প ও জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষা করতে এই মাটির মটকা পদ্ধতি ব্যবহার করা হতে পারে। তবে ৩০০ বছর ধরে হাজার টন ওজনের ভবনটি মাটির মটকা কিভাবে ধারণ করেছে, সেটি পরীক্ষা ও গবেষণা করে নিশ্চিত হওয়া যাবে। চট্টগ্রাম ইতিহাস সংস্কৃতি গবেষণা কেন্দ্রের চেয়ারম্যান আলীউর রহমান বলেন, ৩০০ বছরের পুরনো মটকাগুলো এখন প্রত্ন সম্পদ হিসেবে বিবেচিত হবে। ২০১৫ সালের প্রত্ন আইনে স্থাবর সম্পত্তি ১০০ বছর ও অস্থাবর সম্পত্তি ৭৫ বছরের পুরানো হলে তা প্রত্ন সম্পদ হিসাবে বিবেচিত হয়। তিনি বলেন, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে এগুলো সংরক্ষণ করে আগ্রাবাদ জাতিতাত্ত্বিক যাদুঘরে সংরক্ষণ করতে সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

# ০৯.০৭.২০২১ চট্টগ্রাম #