চলমান সংবাদ

স্ত্রী হত্যার অভিযোগে কারাগারে থাকা বাবুল আক্তারের সন্তানদের হাজির করতে আদালতের নির্দেশ

স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতুকে হত্যার দায়ে কারাগারে থাকা সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের দুই সন্তানকে ১৫ দিনের মধ্যে মিতু হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে হাজিরের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। মামলার ‘গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী’ হিসেবে বাবুল আক্তারের ছেলে ও মেয়েকে জিজ্ঞাসাবাদ করা জরুরি। এ সংক্রান্তে বারবার উদ্যোগ নিয়েও ব্যর্থ হওয়ায় আদালতের শরণাপন্ন হন তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) চট্টগ্রাম মহানগরের পরিদর্শক সন্তোষ কুমার চাকমা। তদন্তকারী কর্মকর্তার আবেদন আমলে নিয়ে রোববার (১৩ জুন) চট্টগ্রামের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহনাজ রহমান এ আদেশ দেন। কারাগারে থাকা সাবেক এসপি বাবুল আক্তারের ছেলে-মেয়েকে মামলার তদন্ত কর্মকর্তার মুখোমুখি করতে বাবুলের বাবা ও ভাইকে এ আদেশ দিয়েছেন। রোববারই আদালতে আবেদনটি করেছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। পিবিআই পরিদর্শক সন্তোষ কুমার চাকমা বলেন, ‘আসামি বাবুল আক্তারের ছেলে ও মেয়ে অর্থাৎ দুই সন্তানই আমাদের মামলার গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী। কারণ ছেলের সামনেই তার মাকে খুন করা হয়েছে। সুতরাং ছেলে-মেয়েকে জিজ্ঞাসাবাদ করা খুবই জরুরি। আমরা গত ১৫ দিনেরও বেশি সময় ধরে চেষ্টা চালিয়ে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারিনি। বারবার হাজির করতে বলার পরও করেনি। বাবুল আক্তারের বাবা ও ভাইসহ পরিবারের সদস্যরা তাদের অজ্ঞাতস্থানে লুকিয়ে রেখেছেন বলে আমাদের কাছে মনে হয়েছে। এ অবস্থায় আমরা আদালতের কাছে আবেদন করেছি। আদালত আবেদন মঞ্জুর করেছেন।’ ২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে নগরীর পাঁচলাইশ থানার ও আর নিজাম রোডে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে বাসার অদূরে গুলি ও ছুরিকাঘাত করে খুন করা হয় মাহমুদা খানম মিতুকে। স্ত্রীকে খুনের ঘটনায় পুলিশ সদর দফতরের তৎকালীন এসপি বাবুল আক্তার বাদী হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। গোয়েন্দা কার্যালয়ে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদসহ নানা নাটকীয়তার পর ওই বছরের আগস্টে বাবুল আক্তারকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। শুরুতে মামলা তদন্তের দায়িত্ব নগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হাতে থাকলেও ২০২০ সালের জানুয়ারিতে তদন্তভার পড়ে পিবিআই’র ওপর। গত ১১ মে বাবুল আক্তারকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পিবিআই। তদন্তে বাবুল আক্তারের সম্পৃক্ততা পাওয়ায় তার বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের লক্ষ্যে ১২ মে ওই মামলার ৫৭৫ পৃষ্ঠার চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেয় পিবিআই। একইদিন দুপুরে নিহত মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন বাদী হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় বাবুল আক্তারসহ আটজনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে বাবুল আক্তারকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পিবিআই। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আদালতে জবানবন্দি দেয়ার কথা থাকলেও পরে তা দেননি বাবুল আক্তার। মামলা করতে এসে মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন অভিযোগ করেছিলেন, চার বছর ধরে তাদের সঙ্গে মিতুর ছেলে-মেয়েদের কোনো যোগাযোগ নেই। তারা নাতি-নাতনির মুখও দেখতে পারছেন না। বাবুল আক্তার ও তার পরিবারের সদস্যরা ইচ্ছাকৃতভাবে মিতুর ছেলে-মেয়েদের তাদের কাছ থেকে দূরে সরিয়ে রেখেছেন। # ১৩.০৬.২০২১ চট্টগ্রাম #