চবি চারুকলা ইনস্টিটিউটে ৮২ দিন পর আন্দোলন স্থগিত শিক্ষার্থীরা ক্লাস করবেন মাঠে

৮২ দিন পর ক্লাস বর্জনের আন্দোলন স্থগিত করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। সেই সঙ্গে ক্লাসে ফেরার সিদ্ধান্তও নিয়েছেন। তবে তারা ঝুঁকিপূর্ণ শ্রেণিকক্ষে নয়, ক্লাস করতে চান খোলা আকাশের নিচে চারুকলা চত্বরে। এছাড়া আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে আশ্বাস দেয়া দাবিসমূহের কোনো অগ্রগতি দেখা না গেলে পুনরায় আন্দোলনে যাবেন বলেও হুঁশিয়ারি দেন। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনের সঙ্গে গতকাল সকাল সাড়ে ১০টা থেকে ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক শেষে এই ঘোষণা দেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতিনিধিও সেখানে ছিলেন। এর আগে গত শনিবার আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈঠক করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। এ সময় ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী, চবি উপাচার্য ও উপ–উপাচার্য। আন্দোলনকারী ও চবি চারুকলা ইনস্টিটিউটের স্নাতকোত্তর বর্ষের শিক্ষার্থী মো. শহীদ আজাদীকে বলেন, উনারা আমাদের জানিয়েছেন চারুকলাকে মূল ক্যাম্পাসে স্থানান্তরের দাবির বিষয়টি যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে লিখবেন। জেলা প্রশাসকও এ নিয়ে নিজ উদ্যোগে কাজ করবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন। আমরা তাদের আশ্বাসের ভিত্তিতে আন্দোলন স্থগিত করে শ্রেণিকক্ষে ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে আমরা এটাও জানিয়েছি, আমরা ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে ক্লাস করব না। আমরা চারুকলা প্রাঙ্গণে খোলা মাঠে ক্লাস করব।

তিনি বলেন, শ্রেণি কার্যক্রমে ফেরার জন্য আমাদের আবাসিক ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। শিক্ষক ক্লাব অপসারণ করে সেখানে মেয়েদের আবাসন ব্যবস্থা করা হবে বলে আশ্বাস দেয়া হয়েছে। ক্যান্টিন ও শৌচাগারের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। সর্বোপরি চারুকলাকে মূল ক্যাম্পাসে স্থানান্তর প্রক্রিয়া চলমান থাকতে হবে। এ বিষয়ে চারুকলা ইনস্টিটিউটের অচলাবস্থা নিরসনে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক গঠিত সমন্বয়ক কমিটির সদস্য সচিব ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর মোহাম্মদ ইয়াকুব বলেন, শিক্ষার্থীরা আমাদের সাতদিনের সময় দিয়েছে। তবে আমরা আজকে থেকেই কাজ শুরু করে দিয়েছি। প্রকৌশল দপ্তর থেকে লোক সেখানে গেছে। স্থানান্তরের বিষয়ে তিনি বলেন, সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জেলা প্রশাসক চিঠি দেবেন বলেছেন। পাশাপাশি তাদের আর যে দাবি–দাওয়া ছিল সেটা নিয়ে আজ (গতকাল) থেকে কাজ শুরু হয়ে যাবে।

প্রসঙ্গত, চারুকলা ইনস্টিটিউটের বিভিন্ন সমস্যা ও সংস্কারের দাবিতে গত বছরের ২ নভেম্বর থেকে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। এক পর্যায়ে ইনস্টিটিউট বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসে স্থানান্তরসহ ২২ দফা দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবস্থান কর্মসূচি ও ক্লাস বর্জন শুরু করেন। পরে ২২ দফা থেকে ক্যাম্পাসে ফেরার এক দাবিতে আন্দোলন করতে থাকেন শিক্ষার্থীরা।