চলমান সংবাদ

রাঙ্গুনিয়ায় আগুনে পুড়ে এক পরিবারের ৫ জন মারা গেলেন

রাঙ্গুনিয়ায় ভয়াবহ আগুনে একই পরিবারের ছয় সদস্যের মধ্যে মারা গেছেন পাঁচজনই। এর মধ্যে রয়েছে দুইটা শিশুও। গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে উপজেলার পারুয়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মহাজন পাড়ার খোকন বসাকের (৪২) বাড়িতে এই মর্মন্তুদ ঘটনা ঘটে। পরিবারের একমাত্র জীবিত সদস্য সিএনজি টেক্সি চালক খোকনই। তার শরীরের ৪০ শতাংশ পুড়ে গেছে। তিনি আশঙ্কাজনক অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
মারা যাওয়া সদস্যরা হলেন খোকনের বাবা কাঙাল বসাক (৭০), মা ললিতা বসাক (৬২), স্ত্রী লাকি বসাক (৩২), ছেলে সৌরভ বসাক (১২) ও মেয়ে সায়ন্তী বসাক (৬)। তার বৃদ্ধ বাবা কাঙাল বসাক সবজি ব্যবসায়ী, মা ও স্ত্রী গৃহিণী। ছেলে সৌরভ উত্তর পারুয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণিতে এবং সায়ন্তি উত্তর পারুয়া সিবিএস সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশু শ্রেণির শিক্ষার্থী।

পুড়ে যাওয়া বসতঘরে দেখা যায়, আধাপাকা বাড়ির চারদিকে পোড়া গন্ধ। বাড়ির দেয়াল ছাড়া আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। চারটি কক্ষের আসবাব, কাপড়চোপড় পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। রান্নাঘরে চুলার পাশে হাঁড়ি-পাতিল সব এদিক-সেদিক ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। পোড়া বাড়ির পাশের বাড়ির উঠানে আহাজারি করছেন স্বজনেরা। এসময় কথা হয় স্থানীয় পারুয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান একতেহার হোসেনের সঙ্গে।

তিনি জানান, স্থানীয় সবজি ব্যবসায়ী কাঙাল বসাকের বাড়িতে রাত দেড়টার দিকে আগুন লাগে। বাড়িতে শুকনো পাতা দিয়ে রাতের রান্না হয়েছিল। পরে সেই আগুন পুরোপুরি নিভিয়ে না ফেলায় তা থেকে আগুন ছড়িয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, খোকন বৃদ্ধ বাবা-মা, স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে সেমিপাকা ঘরে বসবাস করতেন। তিন কক্ষ বিশিষ্ট ঘরটিতে বের হওয়ার দরজা ছিল মাত্র একটি। সেই দরজার মুখে রাখা আবার তার সিএনজি চালিত টেক্সিতেও আগুন লাগে। ধারণা করা হচ্ছে টেক্সির গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়ে আগুন মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়ে। ভাগ্যক্রমে খোকন বেরিয়ে আসতে পারলেও বাকিরা বের হতে পারেননি। আগুনে দগ্ধ হয়ে মারা যান পরিবারের সবাই। গভীর রাত হওয়ায় প্রতিবেশী ও ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকর্মী আসার আগেই সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে যায়।

ফায়ার সার্ভিসের রাঙ্গুনিয়া স্টেশনের কর্মকর্তা কামরুজ্জামান সুমন বলেন, আগুনের খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিটের চেষ্টায় ভোররাত ৪টার দিকে আগুন নেভানো হয়। এ ঘটনায় পাঁচজন মারা গেছেন। রাঙ্গুনিয়া থানার ওসি মাহাবুব মিল্কি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করেছে। প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

এদিকে শুক্রবার বিকেল ৫টার দিকে অগ্নিকাণ্ডে নিহত পাঁচজনের লাশ গ্রামে এসে পৌঁছায়। এসময় স্বজনদের আহাজারিতে পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে। সাড়ে ৫টার দিকে লাশগুলো পাশাপাশি সৎকার করা হয়।

# ১৪/০১/২০২৩, চট্টগ্রাম #