চলমান সংবাদ

চট্টগ্রামে কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় নিহত শ্রমিকদের স্মরণে বিলস যুব ট্রেড ইউনিয়ন নেটওয়ার্কের মোমবাতি প্রজ্জ্বলন

 

বিলস-লেবার রিসোর্স এন্ড সাপোর্ট সেন্টারের তথ্য মোতাবেক চলতি ২০২২ সালে চট্টগ্রামে পরিবহণ খাতে ৪৯ জন, নির্মাণ খাতে ৩৫ জন জাহাজ ভাঙ্গা খাতে ৭ জন সহ মোট ২৩৮ জন শ্রমিক কর্মস্থলে দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন। তাদের স্মরণে বিলস চট্টগ্রাম যুব ট্রেড ইউনিয়ন নেটওয়ার্কের উদ্যোগে আজ ৩১ ডিসেম্বর বিকাল সাড়ে চারটায় চেরাগীর মোড়ে সমাবেশ এবং সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় মোমবাতি প্রজ্জ্বলন কর্মসূচী পালিত হয়েছে।

শ্রমিকনেতা উজ্জ্বল বিশ্বাসের সভাপতিত্বে এবং এডভোকেট মোঃ ইকবাল হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশ ও মোমবাতি প্রজ্জ্বলন কর্মসূচীতে প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন বিলস-এলআরএসসি’র চেয়ারম্যান এবং জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি এ এম নাজিম উদ্দিন অন্যন্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিলস কর্মকর্তা রিজওয়ানুর রহমান খান, টিইউসির’র চট্টগ্রাম জেলা কমিটির যুগ্ম সম্পাদক ইফতেখার কামাল খান, শ্রমিক লীগের সৈয়দ আহাম্মদ বাদল,ফজলুল কবীর মিন্টু, চট্টগ্রাম বিভাগীয় শ্রমিক দলের সহ-সভাপতি শাহনেওয়াজ চৌধুরী, বিএলএফ চট্টগ্রাম মহানগর সাধারণ সম্পাদক আবু আহমেদ, জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশনের জাহিদ উদ্দিন শাহিন, জাতীয় শ্রমিক লীগের মোহাম্মদ আলী, জাতীয় শ্রমিক জোটের জাকির,মুক্ত শ্রমিক ফেডারেশনের শাবনাজ প্রমুখ শ্রমিক নেতৃবৃন্দ।

সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন নুরুল আবছার তৌহিদ, তাজ মোঃ আলমগীর,  মোঃ জাবেদ, নুরুল কবির স্বপন, হাসান মাহমুদ, মোঃ আলমগীর (বিএলএফ), ফজলুল আলম প্রিন্স, আরিফ, অপু সিংহ, নার্গিস, মেহেদী হাসান, জ্যোস্না আক্তার, আলেয়া বেগম, দেলোয়ার হোসেন, আলাউদ্দিন, বিবি আসমা, সালেহা বেগম,  রিবা আক্তার, গুলজার বেগম, জান্নাত, জান্নাতুল ফেরদৌস রুবি, মুন্নি বেগম, মুক্তা হাওলাদার, শারমিন, মোঃ জয়নাল আবেদীন, নূর আলম, আব্দুল লতিফ, উর্মি দে, মৃত্তিকা শানন, রুবি, আমেনা বেগম,রানিসা তাবাসসুম, লাকী আক্তার,মোঃ হানিফ, নূর আলম, রুমি আক্তার, রুপা আক্তার, সায়েম প্রমুখ।

নেতৃবৃন্দ বলেন, নিজের এবং পরিবারের সদস্যদের জীবন ও জীবীকা নির্বাহের জন্য শ্রমিকেরা চাকুরী করে। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় শ্রমিকরা কাজ করতে গিয়ে কর্মক্ষত্রে বার বার দুর্ঘটনার শিকার হয়ে অকালে প্রাণ হারাচ্ছে এবং অনেকে চিরতরে পঙ্গু হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে।

তারা বলেন, তাজরীন ফ্যাশন, রাণা প্লাজা, সেজান জুস কোম্পানী, এস এস পাওয়ার প্লান্ট এবং সর্বশেষ বিএম কন্টেইনার ডিপোসহ বিভিন্ন কলকারখানায় দুর্ঘটনায় মালিক এবং সংশ্লিষ্ট সরকারী কর্মকর্তাদের গাফিলতি প্রমানিত হলেও অদ্যাবধি দায়িদের কারও বিরুদ্ধে কখনোই দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া হয়নি। ফলশ্রুতিতে কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মালিক এবং সংশ্লিষ্ট সরকারী কর্মকর্তারা বরাবরই উদাসীনতার পরিচয় দিচ্ছে।

নেতৃবৃন্দ বলেন, আমাদের দেশে মালিক পক্ষ তাদের কল-কব্জা যন্ত্রপাতির নিরাপত্তার জন্য যেরকম যত্নশীল হতে দেখা যায় শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চয়তা বিধানে ততটুকু আন্তরিকতার পরিচয় দেয়না। অথচ আশংকামুক্ত হয়ে শ্রমিকেরা যদি নিরাপদ কর্ম পরিবেশে কাজ করতে পারে তাহলে একদিকে শ্রমিকের জীবন রক্ষা পায় অন্য দিকে প্রতিষ্ঠানের উৎপাদনশীলতাও বাড়ে।

শ্রমিক নেতৃবৃন্দ বলেন, শ্রম আইনে কোন শ্রমিক কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় আহত হয়ে মারা গেলে ২ লক্ষ এবং চিরতরে পঙ্গু হলে ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়ার কথা উল্লেখ আছে। এটা যেন শ্রমিকদের দারিদ্রতার সাথে চরম উপহাস ছাড়া কিছুই নয়। কেননা মানুষের জীবনের মূল্য ২ লক্ষ কিংবা ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা হতে পারে না। তারা আইএলও কনভেশন ১২১ এর সাথে সামঞ্জস্য বজায় রেখে নিহত ও আহত শ্রমিকদের আজীবন আয়ের সমান এবং ভোগান্তি হিসাব করে ক্ষতিপূরণ প্রদানের আহ্বান জানান এর জন্য শ্রম আইনের প্রয়োজনীয় সংশোধনের দাবিও জানানো হয়।