চলমান সংবাদ

যুব ইউনিয়ন চট্টগ্রাম জেলার ত্রয়োদশ সম্মেলন অনুষ্ঠিত


‘গণতন্ত্রহীনতা, লুটপাটতন্ত্র ও বেকারত্ব থেকে মুক্তির লক্ষ্যে যুব সমাজ এক হও’ স্লোগানকে সামনে রেখে যুব ইউনিয়ন চট্টগ্রাম জেলার ত্রয়োদশ সম্মেলন আজ শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর) বিকেলে নগরীর সিনেমা প্যালেস চত্বরে অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে শাহ আলমকে সভাপতি ও জাবেদ চৌধুরীকে সাধারণ সম্পাদক করে ২৭ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষনা করা হয়।

যুব ইউনিয়ন চট্টগ্রাম জেলার বিদায়ী সভাপতি রিপায়ন বড়ুয়ার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক জাবেদ চৌধুরীর সঞ্চালনায় সম্মেলনে বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রণজিৎ কুমার দে, যুব ইউনিয়ন, চট্টগ্রাম জেলার প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আতিক, যুব ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক খান আসাদুজ্জামান মাসুম, প্রেসিডিয়াম সদস্য ত্রিদিব সাহা, সাংস্কৃতিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন প্রমূখ।
এসময় বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতার ৫১ বছর উদযাপিত হচ্ছে। আজও দেশের ১ কোটি ১০ লক্ষ প্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিক, ২ কোটি ৩০ লক্ষ কৃষি শ্রমিক এবং আরও প্রায় ৩ কোটি ২০ লাখ অন্যান্য পেশার শ্রমজীবী মানুষের কারো জন্যই, রাষ্ট্রীয়ভাবে আর্থিক, সামাজিক বা স্বাস্থ্যগত সুরক্ষা নিশ্চিত হয়নি। সাধারণ মানুষ ক্রমে আরো নিঃস্ব হচ্ছে। দেশের ৩ শতাংশ লুটেরা ধনীর বিপরীতে ৯৭ শতাংশ সাধারণ মানুষ। দেশের এক চতুর্থাংশ কর্মক্ষম মানুষের পূর্ণকালীন কাজের ব্যবস্থা নেই। সরকারি চাকরিতে ৩ লক্ষ ৬৯ হাজার ৪৫১টি শূন্যপদ রয়েছে। দেশের উচ্চ শিক্ষিত যুবদের ৪৭ শতাংশের কাজ নেই। দেশের বিপুল এই কর্মহীন যুবদের সাথে করোনাকালীন পরিস্থিতিতে যোগ হয়েছে আরও কোটি বেকার। বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি বলছে, করোনাকালে প্রায় ৩ কোটি মানুষ কাজ হারিয়েছে। কমপক্ষে ১৪ লক্ষ প্রবাসী শ্রমিক বেকার হয়েছে। ফরমাল সেক্টরে ১৩ ভাগ মানুষ চাকরিচ্যুত হয়েছেন। বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে দেশের ৭২% মানুষের আয় কমেছে। দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন বৃদ্ধিতে জনজীবনের সংকট আরো তীব্রতর হচ্ছে। এ অবস্থায় দেশের বিপুল কর্মহীন যুবকদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে কর্মসংস্থানের দাবিতে আন্দোলন গড়ে তোলা ছাড়া বিকল্প নেই।
বক্তারা আরও বলেন,কর্মসংস্থান পরিস্থিতি ক্রমশঃ বিপর্যয়ের দিকে যাচ্ছে। কিন্তু সরকারের সে দিকে ভ্রুক্ষেপ নেই। সরকার দেশের মানুষকে যে উন্নয়নের মডেল দেখাচ্ছেন তা লুটপাটের উন্নয়ন। এই সরকার ২০০৮ সালের ৬৮ হাজার কোটি টাকার বাজেট দিয়ে শুরু করে এখন ৬ লক্ষ কোটি টাকার বাজেট দিচ্ছে। কিন্তু তারপরেও নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে না। যে অর্থনীতি কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারে না তা বন্ধ্যা। যুব ইউনিয়ন এই উন্নয়ন মডেলকে ঘৃণা ভরে প্রত্যাখ্যান করছে।  দেশে নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি অন্যদিকে লুটপাট জনজীবনে দুঃসহ পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। জাতীয় নির্বাচনে যত এগিয়ে আসছে ততই একটি সুষ্ঠু নির্বাচন ও নিজের ভোট নিজে দিতে পারা নিয়ে সংশয় ঘনীভূত হচ্ছে। বিগত কয়েকটি নির্বাচনে ভোটাধিকার বঞ্চিত হয়ে অব্যাহত দুঃশাসনে মানুষের ক্ষোভ পুঞ্জিভূত হয়ে আছে। পাশাপাশি কর্মসংস্থানের বর্তমান তীব্রতম সংকট থেকে উত্তরণে সরকারের কোন প্রচেষ্টা নেই। অন্যদিকে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার একের পর এক ঘটনা অব্যাহত রয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতিতে যুবসমাজকে সংঘটিত করে কর্মসংস্থান ও ভোটাধিকার সংগ্রাম বেগবান করার করতে হবে।
এদিকে বিকাল ৩ টায় বর্ণাঢ্য র‍্যালির মধ্য দিয়ে সম্মেলন শুরু হয়। এরপর জাতীয় সঙ্গীতের  মধ্য দিয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন ঘোষণার পর আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হয়।
নতুন কমিটিতে আরো যারা আছেনঃ সহ-সভাপতি প্রীতম চৌধুরী, রুপন কান্তি ধর, আব্দুল হালিম, নাবিলা তানজিনা, সহ-সাধারন সম্পাদক শেখ শিপন,  রুবেল দাশগুপ্ত, শহিদুল ইসলাম রিপন,শান্তুনু চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক রাশিদুল সামির, কোষাধ্যক্ষ অভিজিৎ বড়ুয়া, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব দাশ, সমাজকল্যান সম্পাদক জুয়েল বড়ুয়া, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মাহবুবা জাহান রুমি, তথ্য ও গবেষনা বিয়ক সম্পাদক রবি শংকর সেন নিশান, ক্রীড়া সম্পাদক মিঠুন বিশ্বাস, নারী বিষয়ক সম্পাদক সালমা আক্তার, আইন বিষয়ক সম্পাদক শেখ নাঈম উদ্দিন, সাংস্কৃতিক সম্পাদক রিপন বড়ুয়া, সদস্য রিপায়ন বড়ুয়া, ইউসুফ সোহেল,ইনতেখাব সুমন, মুজিবুর রহমান, রিপন দেব।