চলমান সংবাদ

সম্পাদকীয়ঃ ঐতিহ্যবাহী সংগঠন ছাত্র ইউনিয়ন নেতাকর্মীদের উপর সন্ত্রাসী কায়দায় ছাত্রলীগের হামলা কেন?

শতবর্ষী স্যার আশুতোষ সরকারি কলেজের বহুমুখী সংকট নিরসনের দাবিতে এক মানববন্ধনের ডাক দিয়েছিল ঐতিহ্যবাহী সংঠন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন। সেখানে হামলা চালিয়ে ছাত্র ইউনিয়নের মানববন্ধন পণ্ড করে দিয়েছে ছাত্রলীগের একদল বিভ্রান্ত ও বিপথগ্রস্থ নেতাকর্মী। হামলায় ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক-বর্তমান কয়েকজন নেতা ও সাধারণ শিক্ষার্থীসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। কলেজ ক্যাম্পাসের বাইরে সড়কে মানববন্ধন শুরু করার পর ক্লাস শেষ করে সাধারণ শিক্ষার্থীরাও মানববন্ধনে যোগ দিতে আসছিলেন। এসময় পেছন থেকে কলেজ ছাত্রলীগের কয়েকজন দায়িত্বশীল নেতাদের নেতৃত্বে বাঁশ, লাঠি ও লোহার রড দিয়ে অতর্কিতে হামলা করে। ব্যানার কেড়ে নিয়ে রাস্তায় ফেলে মানববন্ধনে অংশগ্রহনকারীদের বেধড়ক পেটাতে থাকে বলে জানিয়েছেন ছাত্র ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ।

পরবরতীতে বোয়ালখালীতে ছাত্র ইউনিয়নের মানববন্ধনে ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে চট্টগ্রামের নিউমার্কেট মোড়ে সমাবেশ করতে গিয়ে আবারও ছাত্রলীগের হামলার শিকার হয়েছেন ছাত্র ইউনিয়ন ও যুব ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা। বেধড়ক পিটুনিতে ছাত্র ও যুব ইউনিয়নের অন্তত ৯ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে ৪ জনের অবস্থা গুরুতর। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আহত ৬ জনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। ঘণ্টাখানেক থানায় আটকে রাখার পর তাদের ছেড়ে দেয়া হয়।

বায়ান্নর ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে গড়ে ওঠা বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন একটি প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠন। মুক্তিযুদ্ধ, স্বৈরাচার ও সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী লড়াইসহ এদেশের সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে সংগঠনটির রয়েছে সর্বোচ্চ ত্যাগ আর গৌরবের ইতিহাস। ছাত্রদের ন্যায্য দাবী নিয়ে কর্মসূচি পালন করার অধিকার এদেশের সকল গণতান্ত্রিক ছাত্র সংগঠনেরই আছে। সেখানে ছাত্র ইউনিয়নের কর্মসূচিতে নেতা-কর্মীদের উপর সরকার দলীয় ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের হামলা কোনভাবেই মেনে নেয়া যায়না। তাদের এই হামলা দেশে বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তোলে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রাখতে এসব ন্যাক্কারজনক হামলা বন্ধ করা খুবই জরুরী। এই দুটি ঘটনায় জড়িত অপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করার জন্য প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানাই।

# ১৫/০৮/২০২২ #