চলমান সংবাদ

ছাত্র ইউনিয়নের কার্যালয় সিলগালা করার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের আহ্বান সিপিবির

চট্টগ্রাম নগরীর দারুল ফজল মার্কেটে ছাত্র ইউনিয়নের কার্যালয় সিলগালা করার সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির চট্টগ্রাম জেলা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক অশোক সাহা ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর। সিপিবির পক্ষ থেকে এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের জন্য চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের প্রগতিশীল বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামের সূতিকাগার হিসেবে পরিচিত দারুল ফজল মার্কেটে দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে ছাত্র ইউনিয়নের কার্যালয় রয়েছে। এই কার্যালয় থেকেই পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ, স্বৈরাচার ও সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে আন্দোলনসহ বিভিন্ন সংগ্রামে ছাত্র সমাজের পক্ষ থেকে নেতৃত্ব দিয়েছে ছাত্র ইউনিয়ন। আমরা পত্রিকান্তরে জেনেছি, অতিবৃষ্টিতে দারুল ফজল মার্কেটের ছাদের একাংশ ভেঙ্গে পড়ার পর জেলা প্রশাসন ভবনটিকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। আগামী ২৬ জুন এই ভবনের শুধুমাত্র তৃতীয় তলা অর্থাৎ ছাত্র ইউনিয়নের কার্যালয়টি সিলগালা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা প্রশাসন।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, পুরো ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হলেও শুধুমাত্র ছাত্র ইউনিয়নের কার্যালয়টিকে সিলগালা করার এই সিদ্ধান্তে আমরা বিস্মিত হয়েছি। আমরা এই সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা জানাই ও ক্ষোভ প্রকাশ করছি। আমাদের বক্তব্য হচ্ছে, দারুল ফজল মার্কেটে রাজনৈতিকসহ বিভিন্ন সংগঠনের আরও কয়েকটি কার্যালয় আছে। বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আছে। ভবন যদি ঝুঁকিপূর্ণ হয় তাহলে সকল কার্যালয় এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোও তো ঝুঁকির মধ্যে আছে। তাহলে অন্য সব কার্যালয়-ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে বাদ দিয়ে শুধুমাত্র ছাত্র ইউনিয়নের কার্যালয় সিলগালা করার এই সিদ্ধান্ত কেন এবং কাদের স্বার্থে, এই প্রশ্ন আমরা রাখছি। জেলা প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তকে আমরা একপেশে ও অগ্রহণযোগ্য এবং গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করার পাঁয়তারা বলে মনে করছি।
বিবৃতিতে দুই নেতা আরও বলেন, আমাদের ধারণা- স্বার্থান্বেষী কোনো মহল দারুল ফজল মার্কেটটিকে কুক্ষিগত করার অপচেষ্টায় জেলা প্রশাসনের ঘাড়ে বন্দুক রেখে ছাত্র ইউনিয়নকে তাদের কার্যালয় থেকে উচ্ছেদের চক্রান্তে লিপ্ত রয়েছে। আমরা জেলা প্রশাসনকে স্বার্থান্বেষী মহলের চক্রান্তের ফাঁদে পা না দেয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। একইসঙ্গে ছাত্র ইউনিয়নের কার্যালয় সিলগালা করার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা ভবনটির সংস্কার কিংবা পুনঃনির্মাণের বিরোধী নই। কিন্তু সেই সিদ্ধান্ত হতে হবে দারুল ফজল মার্কেটে অবস্থানরত মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, ছাত্র ইউনিয়ন, আওয়ামী লীগ এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর মালিকসহ অপরাপর সবার মতামতের ভিত্তিতে। আমরা জেলা প্রশাসনকে বাস্তব পরিস্থিতি অনুধাবন করে অবিলম্বে সবাইকে নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে দারুল ফজল মার্কেট নিয়ে সুনির্দিষ্ট রূপরেখা তৈরি করে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণের আহ্বান জানাচ্ছি।