চলমান সংবাদ

সীতাকুন্ড কনটেইনার ডিপো বিস্ফোরণ অক্ষত পণ্য রপ্তানি নিয়ে অনিশ্চয়তা, দ্রুত শিপমেন্টের দাবি

চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোর ভয়াবহ আগুন-বিস্ফোরণের ঘটনার তদন্ত কাজ শেষ না হওয়ায় ওই কনটেইনার ডিপোতে অক্ষত থেকে যাওয়া পণ্য রপ্তানি নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। আগুন থেকে বেঁচে যাওয়া পণ্যগুলো দ্রুত রপ্তানির উদ্যোগ নেওয়ার তাগিদ দেয়ার পরও কোনো পক্ষই এখন পর্যন্ত এ ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি বলে জানিয়েছেন তৈরি পোশাক রপ্তানিকারকরা।

তাদের প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, ডিপোটিতে ১৫৮টি প্রতিষ্ঠানের পোশাক ছিল। এর মধ্যে কি পরিমাণ নষ্ট হয়েছে, আর কতটুকু রপ্তানি উপযোগী রয়েছে, তার সঠিক হিসাব এখনও পাওয়া যায়নি। তবে অন্তত এক-তৃতীয়াংশ পণ্য আগুন থেকে রেহাই পেয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। রপ্তানিকারকরা জানান, ঘটনার তদন্ত শেষ না হওয়ায় অক্ষত কনটেইনারগুলো বের করা যাচ্ছে না।

সংশ্লিষ্টরা জানান, ক্ষতিগ্রস্ত ডিপোর অক্ষত পণ্য রপ্তানিতে অনেক জটিলতা আছে। বিশেষ করে সরকারি বিভিন্ন সংস্থার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোনো কনটেইনার ডিপো থেকে বের না করার নির্দেশনা রয়েছে। এছাড়া বিমার বিষয় জড়িত থাকায় বিদেশি বায়ার এবং দেশি বিমা প্রতিষ্ঠানগুলোও ডিপো পরিদর্শন করতে চায়। ডিপোটির মালিক পক্ষও ক্ষয়ক্ষতির বিস্তারিত হিসাব তৈরি করছে। এ অবস্থায় অক্ষত পণ্য রপ্তানি প্রক্রিয়া আরও দীর্ঘায়িত হতে পারে।

বাংলাদেশ গার্মেন্টস মেনুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন-বিজিএমইএ নেতারা গত সোমবার (২০ জুন) চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের কমিশনার এম ফখরুল আলমের সঙ্গে বৈঠকে যেসব পণ্য চালান ভালো আছে সেগুলো দ্রুত শিপমেন্টের দাবি জানান। এর আগেও একই দাবি জানিয়েছিল বিজিএমইএ।

বাংলাদেশ ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপোটস অ্যাসোসিয়েশনের (বিকডা) তথ্য অনুযায়ী, ডিপোটিতে ৪ হাজার ৩০০ কনটেইনার ছিল। এর মধ্যে ৮০০টি ছিল রপ্তানি পণ্যবোঝাই, আর ৪০০টি আমদানি পণ্যের। খালি কনটেইনার ছিল ৩ হাজার। পণ্য ও অবকাঠামোগত মিলিয়ে মোট ১ হাজার ৩০০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে বিকডা। অক্ষত কনটেইনারগুলো যদি দ্রুত রপ্তানির উদ্যোগ নেওয়া হয়, তাহলে ক্ষতি কিছুটা হলেও কমে আসবে। পণ্য দীর্ঘদিন ডিপোতে পড়ে থাকলে ক্রেতা গ্রহণ নাও করতে পারেন। সেক্ষেত্রে আরও ভারী হবে লোকসানের পাল্লা।

বিজিএমইএ প্রথম সহ-সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বিএম ডিপোতে অক্ষত পোশাকের চালানগুলো রপ্তানির ব্যবস্থা করতে আমরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, কাস্টমস, ডিপো কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলাম। কিন্তু এতে কোনো অগ্রগতি হয়নি। রপ্তানি চালানগুলো ডিপোতেই পড়ে আছে। ডিপোতে কি পরিমাণ কনটেইনর অক্ষত আছে, সেই হিসাবও ডিপো কর্তৃপক্ষ বা অন্য কেউ দিতে পারেনি। কিছু কনটেইনার পুড়ে গেলে বেশিরভাগ পণ্য আগুন থেকে বেঁচে গেছে। এসব চালানের শিপমেন্ট মিস হয়েছে। তারপরও যত দ্রুত সম্ভব পাঠাতে পারলে দুর্ঘটনার কথা বিবেচনা করে হয়তো বায়াররা গ্রহণ করবেন। বেশি দেরি হয়ে গেলে সেই সুযোগও আর থাকবে না।

# ২২.০৬.২০২২ চট্টগ্রাম #