চলমান সংবাদ

চট্টগ্রামে সাড়ম্বরে বুদ্ধ পূর্ণিমা উদযাপিত

জগত ও জীবের মঙ্গল কামনায় মন্দিরে-মন্দিরে সম্মিলিত প্রার্থনা, শোভাযাত্রা, আলোচনাসহ নানা ধর্মীয় আয়োজনে চট্টগ্রামে এবার সাড়ম্বরে উদযাপিত হয়েছে বুদ্ধ পূর্ণিমা। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের তীব্রতা বেশি থাকায় গত দুই বছর চট্টগ্রামে সামাজিক দূরত্ব মেনে সীমিত আকারে বুদ্ধ পূর্ণিমার আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়েছিল। এবার সংক্রমণ কমে আসায় বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা সাড়ম্বরে উদযাপন করেন দিনটি। রোববার (১৫ মে) সকাল থেকে নগরীর নন্দনকানন বৌদ্ধবিহারসহ বিভিন্ন মন্দিরে ভক্তদের আনাগোনা শুরু হয়। বিহারে পূজা এবং ভিক্ষুদের সেবা দিয়ে প্রার্থনায় নেন পূজার্থীরা। চট্টগ্রাম জেলায় ৩২৪টি ও নগরীতে ৩১টিসহ মোট ৩৫৫টি বৌদ্ধমন্দিরে প্রতিবছর বুদ্ধ পূর্ণিমা অনুষ্ঠিত হয়। এসব মন্দিরে দিনব্যাপী ত্রিপিটক পাঠ করা হয়। উপাসক ও উপাসিকাদের পঞ্চশীল ও অষ্টশীল দেওয়ার পাশাপাশি সন্ধ্যার পর থেকে শুরু হয় সম্মিলিত প্রার্থনা ও মোমবাতি প্রজ্বলন। বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে বর্ণাঢ্যশান্তি শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। রোববার সকালে নন্দনকানন বৌদ্ধ বিহারের সামনে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে শোভাযাত্রা উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ও আওয়ামীলীগের দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়–য়া। এসময় সংক্ষিপ্ত সমাবেশের আয়োজন করা হয়। সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশে সবাইকে অহিংসা আর মানবতার ধারক হয়ে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহবান জানিয়ে সভায় ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়–য়া বলেন, এদেশে সাম্প্রদায়িক শক্তিকে যারা পৃষ্ঠপোষকতা করবে তাদের শক্ত হাতে দমন করা হবে। প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এই বাংলাদেশ পরিচালিত হবে। আর সেই আদর্শ হচ্ছে ধর্মে ধর্মে কোনও হানাহানি থাকবে না। একটি অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ সৃষ্টি হবে। দেশের সকল নাগরিক সমান অধিকার ভোগ করবে। এদিকে বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে সকালে শোভাযাত্রা বের করে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন। নগরীর আন্দরকিল্লায় পুরাতন নগর ভবন থেকে বের হওয়া শোভাযাত্রার উদ্বোধন করেন চসিক’র ভারপ্রাপ্ত মেয়র গিয়াস উদ্দিন। বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘গৌতম বুদ্ধের আদর্শ ধারণ ও লালন করে আমাদের এই দেশকে শান্তির দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে সবাইকে ভূমিকা রাখতে হবে। সম্প্রীতিময় আদর্শ সমাজ গঠনে সবার ভূমিকা অপরিহার্য। বাংলাদেশের সংবিধানে সবার সমঅধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। এই দেশে ধর্ম যার যার উৎসব সবার।’ এতে আরও বক্তব্য রাখেন- চসিক’র ওয়ার্ড কাউন্সিলর জহরলাল হাজারী, পুলক খাস্তগীর, নির্বাহী প্রকৌশলী জয়সেন বড়–য়া, বোধিমিত্র বড়–য়া, জ্যাতিপ্রিয় বড়ুয়া, বিভাস বড়ুয়া, বিক্রম বড়–য়া, রিপন বড়–য়া। এদিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাসে শনিবার শোভাযাত্রা বের করে চমেক বৌদ্ধ ছাত্র সংসদ ও চমেক বৌদ্ধ পূর্ণিমা উদযাপন পরিষদ। শোভাযাত্রার উদ্বোধন করেন ইউএসটিসির সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. প্রভাত চন্দ্র বড়–য়া। এসময় চমেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. সাহেনা আক্তার, চমেক হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. অংসুই প্রু মারমা, বিএমএ চট্টগ্রামের সাধারণ সম্পাদক ডা. ফয়সল ইকবাল চৌধুরী, চমেক উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. হাফিজুল ইসলাম, চমেক শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মনোয়ারুল হক শামীম, সাধারণ সম্পাদক ডা. প্রণয় কুমার দত্ত, চমেক হাসপাতালের শিশু স্বাস্থ্য ও নবজাতক বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. জগদীশ চন্দ্র দাশ, রেডিওলজি অ্যান্ড ইমেজিং বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সুভাষ মজুমদার উপস্থিত ছিলেন। # ১৫.০৫.২০২২চট্টগ্রাম #