চলমান সংবাদ

সচেতনতার অভাবে আমাদের দেশে থ্যালাসেমিয়া রোগের বাহকের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে চট্টগ্রামে

-জাতীয় রোগী কল্যাণ সোসাইটি

বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবস উপলক্ষ্যে বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের সুচিকিৎসার বাস্তবায়নের একমাত্র সংগঠন জাতীয় রোগী কল্যাণ সোসাইটি চট্টগ্রাম জেলা শাখার উদ্যোগে আলোচনা সভা ও বিনামূল্যে ঔষধ বিতরণ কর্মসূচি জেলা শাখার কার্যালয়ে জাতীয় রোগী কল্যাণ সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় রোগী কল্যাণ সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা ও বিশিষ্ট গবেষক ডা.মুহাম্মাদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ।

বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় রোগী কল্যাণ সোসাইটি কুমিল্লা জেলা শাখার আহবায়ক মুহাম্মাদ আলী আশরাফ,ঝালকাঠি জেলা শাখার আহবায়ক ডা.মোঃ তরিকুল ইসলাম , সিরাজগঞ্জ জেলা শাখার আহবায়ক
ডা.মোঃ আনছার আলী,নোয়াখালী জেলা শাখার আহবায়ক মুহাম্মাদ
আনোয়ার হোসাইন সুমন কমলনগরী সহ চট্টগ্রাম জেলা শাখার নেতৃবৃন্দ।

প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যে বলেন থ্যালাসেমিয়া রক্তস্বল্পতাজনিত বংশগত রোগ। বাবা-মা উভয়ে যদি ত্রুটিপূর্ণ জিন বহন করেন তাহলে তাদের সন্তান থ্যালাসেমিয়া নিয়ে জন্মগ্রহণ করতে পারে। সচেতনতার অভাবে আমাদের দেশে এই রোগের বাহকের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। ব্যাপক জনগোষ্ঠী এখনো এই রোগ সম্পর্কে সচেতন নয় এবং বাহক নির্ণয় হয়নি। ফলে বাহকের সংখ্যা দিনকে দিন বেড়ে যাচ্ছে।

এমন পরিস্থিতিতে ৮ মে পালিত হয়েছে বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবস-২০২২। এবার দিবসটির প্রতিপাদ্য নির্ধারিত হচ্ছে—‘থ্যালাসেমিয়া :নিজে জানি, যত্নবান হই এবং অপরকে সচেতন করি’প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ডা.এম এম মাজেদ আরো বলেন বাংলাদেশে বর্তমানে প্রতি ১৪ জনের মধ্যে একজন থ্যালাসেমিয়ার বাহক। আর ৭০ হাজারের বেশি শিশু থ্যালাসেমিয়া রোগে আক্রান্ত। প্রতি বছর ৬ হাজার শিশু বিভিন্ন ধরনের থ্যালাসেমিয়া রোগ নিয়ে জন্মগ্রহণ করছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিসংখ্যান মতে, বাংলাদেশের জনসংখ্যার ৭ শতাংশ অর্থাৎ প্রায় ১ কোটি ১০ লাখ মানুষ থ্যালাসেমিয়া রোগের বাহক। থ্যালাসেমিয়া বাহকদের পরস্পরের মধ্যে বিয়ের মাধ্যমে প্রতি বছর নতুন করে ৭ হাজার থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত শিশুর জন্ম হচ্ছে। থ্যালাসেমিয়া রোগীরা প্রতি মাসে এক থেকে দুই ব্যাগ রক্ত গ্রহণ করে বেঁচে থাকে। চিকিৎসা না করা হলে এ রোগীরা রক্তশূন্যতায় মারা যায়।

প্রধান অারো বলেন থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের শরীরে রক্তের লোহিতকণিকা পর্যাপ্ত পরিমাণে তৈরি হয় না। ফলে এদের মারাত্মক রক্তশূন্যতা দেখা দেয়। থ্যালাসেমিয়া রোগীরা প্রতি মাসে এক-দুই ব্যাগ রক্ত গ্রহণ করে বেঁচে থাকে। চিকিৎসা না করা হলে এই রোগী রক্তশূন্যতায় মারা যায়। মানবকোষে রক্ত তৈরি করার জন্য দুটি জিন থাকে। কোনো ব্যক্তির রক্ত তৈরির একটি জিনে ত্রুটি থাকলে তাকে থ্যালাসেমিয়া বাহক বলে, আর দুটি জিনেই ত্রুটি থাকলে তাকে থ্যালাসেমিয়া রোগী বলে।

শিশু জন্মের এক থেকে দুই বছরের মধ্যে থ্যালাসেমিয়া রোগ ধরা পড়ে। এই রোগের লক্ষণগুলো হলো ফ্যাকাসে হয়ে যাওয়া, দুর্বলতা, ঘন ঘন ইনফেকশন, শিশুর ওজন বৃদ্ধি না হওয়া, জন্ডিস, খিটখিটে মেজাজ ইত্যাদি। থ্যালাসেমিয়া রোগের কোনো সহজলভ্য স্থায়ী চিকিৎসা বা টিকা নেই। এ রোগ থেকে মুক্তির একমাত্র উপায় হচ্ছে প্রতিরোধ। স্বামী-স্ত্রী দুজনই যদি থ্যালাসেমিয়া বাহক হন, শুধু তখনই সন্তানদের এ রোগ হতে পারে। কিন্তু স্বামী-স্ত্রী দুজনের একজন যদি বাহক হন এবং অন্যজন সুস্থ হন, তাহলে কখনো এ রোগ হবে না। তাই বিয়ের আগে থ্যালাসেমিয়া বাহক কি না, তা সবারই জেনে নেওয়া দরকার। হিমোগ্লোবিন ইলেকট্রোফোরেসিস নামে একটি রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে কোনো ব্যক্তি থ্যালাসেমিয়া বাহক কি না, তা নির্ণয় করা যায়।

এ ছাড়া দিবসটিকে সামনে রেখে জাতীয় রোগী কল্যাণ সোসাইটির কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে থ্যালাসেমিয়া রোগ প্রতিরোধে বিভিন্ন সচেতনতামূলক প্রচারণার আয়োজন করেছে।

# ০৮/০৫/২০২২, প্রেস বিজ্ঞপ্তি #