মতামত

আমি সিরাজুল আলম খান বলছি –একটি রাজনৈতিক পর্যালোচনা  ৬

– অপু সারোয়ার

১৯৪৭ থেকে ১৯৭১ পাকিস্তান রাষ্ট্র ছিল অগণতান্ত্রিক। প্রায় সিকি শতাব্দীর শাসনামলে পাকিস্তান রাষ্ট্র রাজনৈতিক দল গুলির কাছে গ্রহণযোগ্য সংবিধান প্রণয়নের ব্যর্থ হয়েছিল। ১৯৪৭-১৯৫৮ সাল পর্যন্ত মাত্র একবার সংসদ  নির্বাচন হয়েছিল ১৯৫৪ সালে। এই সংসদ ছিল স্বল্প স্থায়ী। ১৯৫৪ সালের নির্বাচন সার্বজনীন ভোটাধিকারের ভিত্তিতে হয় নাই। ১৯৫৪ সালের নির্বাচন ব্রিটিশ প্রণীত নির্বাচন আইন মুসলিম ও হিন্দু  এর জন্য পৃথক নির্বাচন পদ্ধতির এর ভিত্তিতে  হয়েছিল। ১৯৫৮-১৯৬৯ সাল পর্যন্ত ছিল আইউইব খানের সামরিক শাসন। আইউইব খানের পতনের পর থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত পাকিস্তানের ক্ষমতায় ছিল জেনারেল ইয়ায়াহিয়া খান। ১৯৪৭ -১৯৭১ এর মধ্যবর্তী সময়ে সংগঠন করার উপর নানা বিধিনিষেধ ছিল। সমাজতান্ত্রিক মতবাদিক বই পুস্তক নিষিদ্ধ ছিল। কমিউনিস্ট পার্টি  ও  আরএসপি নিষিদ্ধ ঘোষতি হয়েছিল। আইয়ুবের সামরিক শাসনামলে আওয়ামীলীগ নিষিদ্ধ ঘোষিত হয়েছিল। এমন রাজনৈতিক আবহে রাজনৈতিক দল ও গণ সংগঠন গুলি একে অপরের পরিপূরক হওয়ার পরেও  স্বতন্ত্র অস্তিত্ব বজায় রাখতো। কাগজ -কলমে ছাত্র ইউনিয়ন ও কমিউনিস্ট পার্টির কোন সম্পর্ক ছিল না। তেমনি ছাত্রলীগ ও  আওয়ামীলীগের কাগজে কলমে পৃথক  সংগঠন ছিল। ছাত্র ইউনিয়ন ও ছাত্রলীগের রাজনৈতিক সিদ্বান্ত ও ভাঙাগড়া কমিউনিস্ট পার্টি ও আওয়ামীলীগের ভাঙা গড়ার সাথে অঙ্গাঅঙ্গি ভাবে জড়িত ছিল ।

পূর্ব পাকিস্তান  ছাত্রলীগের শুরু   ১৯৪৮ সালের জানুয়ারী মাসে । এই সংগঠনের ভিত্তি ভূমি ছিল ১৯৪৭ পূর্ব মুসলিম ছাত্রলীগ এবং মুসলিম লীগের রাজনীতি। ১৯৪৯ সালে মুসলিম লীগ থেকে আওয়ামী মুসলিম লীগ এবং বিবর্তনের ধারায় আওয়ামীলীগ হিসেবে রাজনীতির ময়দানে জায়গা করে নেয়। পূর্ব পাকিস্তান  ছাত্রলীগের শুরু আওয়ামীলীগ প্রতিষ্ঠার আগে হলেও ছাত্রলীগের পরিচয় ছিল আওয়ামী ঘরাণার ছাত্র সংগঠন হিসেবে। আওয়ামীলীগের নেতা কর্মী সংগ্রহের প্রধান আশ্রয় স্থল ছিল ছাত্রলীগ। আওয়ামীলীগ রাজনীতির ধারক-বাহক ছিল ছাত্রলীগ।

১৯৬৬ সালে শেখ মুজিব ছয় দফা ঘোষণা করেন। ছয় দফা পাকিস্তানের রাজনীতিতে ঝড়ের সৃষ্টি করেছিল । সেই রাজনৈতিক ঝড়ে ভৌগোলিক ভাবে পাকিস্তান রাষ্ট্রের পতন ও  বিভক্তি  হয়েছে ১৯৭১ সালের ডিসেম্বরে । ১৯৭১ সালের যুদ্ধ ছিল বাংলাদেশ অঞ্চলের মানুষের আত্ম  নিয়ন্ত্রণের সংগ্রাম। ন্যায়সঙ্গত দাবীর সংগ্রাম। ছয় দফা আন্দোলনে শেখ মুজিবর রহমান, তাজউদ্দীন আহমেদ সহ বেশ কিছু নেতা জেলে ছিলেন। তৎকালীন সময়ে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগ সাংগঠনিক ভাবে দেশ ব্যাপী গুরুত্ব পূর্ন ভূমিকা পালন করেছে। ছয় দফা ও আওয়ামীলীগের রাজনীতিকে প্রচার ও প্রসারে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের ভূমিকা উজ্জ্বল। ছাত্রলীগ ও আওয়ামীলীগের কোন পৃথক রাজনীতি ছিল না। ১৯৬৬ সালের পরে সব কিছুই ছয়দফা ও শেখ মুজিবর রহমানকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়েছে। ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির প্রধান দুইটি পদ – সভাপতি – সাধারণ সম্পাদকের নির্বাচনে শেখ মুজিবর রহমানের প্রতক্ষ্য -পরোক্ষ অনুমোদন নির্ভর ছিল।  এই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে একদল ছাত্র বুদ্ধিজীবী গড়ে উঠে। ছাত্র বুদ্ধিজীবীদের একাংশ ছাত্রত্ব শেষের পরেও ছাত্র আন্দোলনের সাথে যুক্ত থাকে। কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে এই ধারায় ছিলেন শেখ ফজলুল হক মনি , সিরাজুল আলম খান , আব্দুর রাজ্জাক সহ বেশ কিছু ছাত্রনেতা। সাংগঠনিক ভাবে ছাত্রলীগের সাথে যুক্ত না থাকার পরেও ছাত্রলীগকে সহযোগিতা পরামর্শ দিয়ে আসছিল শেখ মনি ,সিরাজুল আলম খানদের মত নেতারা । সারাদেশেই একই ভাবে প্রাক্তন ছাত্র নেতাদের  অনেকেই  ছাত্রত্ব শেষের পরেও ছাত্র রাজনীতির পরিমন্ডলেই নিজেদেরকে ধরে রেখেছিলেন। ছাত্র বুদ্ধিজীবীদের ক্যাম্পাস বা ছাত্র রাজনীতি কেন্দ্রিক সক্রিয়তার কারণ হচ্ছে নতুন – পুরাতনের বিরোধ। এই বিরোধ ছিল চিন্তার , এই বিরোধ ছিল আওয়ামীলীগের মধ্যে নতুনদেরকে সম্মানজনক ভাবে স্থান না দেওয়ার।

১৯৬৬/৬৭ থেকে ১৯৭১ এই সময় কালের রাজনীতির ইতিহাসে ছাত্র বুদ্ধিজীবীদের নাম বারবার ঘুরে আসবে। শেখ ফজলুল হক মনি ও সিরাজুল ইসলাম খান ছিলেন ছাত্র বুদ্ধিজীবীদের অগ্রগামী নেতৃত্ব ছিলেন । এই দুই জন পৃথক ধারার প্রতিনিধি ছিলেন এমন ভাষ্য বহুল আলোচিত। ১৯৬৬ থেকে ১৯৭১ সালের সবচেয়ে বড় দুটি বিষয় ছয় দফা  ও যুদ্ধকালীন সময়ে বিএলএফ গঠন। ইতিহাস পরিবর্তনকারী  এই দুই সন্দিক্ষনে শেখ মনি ও সিরাজ একই কাতারে ছিলেন। সিরাজুল আলম খানের ইতিহাস বর্ণনায় শেখ ফজলুল হক মনির ইতিবাচক ভূমিকার উল্লেখ নাই বললেই চলে। শেখ মনির দৃশ্যপটে অনুপস্থিত থাকার কারণ হিসেবে শেখ মনির অসুস্থতা ও বিয়ে করার বিষয়টি উল্লেখ করেছেন সিরাজুল আলম খান । মহিউদ্দিন আহমদ এর পর্যবেক্ষণ   ” শেখ মনিকে তাঁদের [ সিরাজ -রাজ্জাক – আরেফ ] চক্র থেকে  বাদ রাখার যে কারণ সিরাজুল আলম খান দেখিয়েছেন , তা পুরাপুরি সত্য নয়। শেখ মনি বিয়ে করেন অনেক বছর পর , ঊনসত্তরের গণ -আন্দোলনের পর। অসুস্থ হওয়া সত্ত্বেও তিনি ছয় দফা আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন। এর পরপর তিনি গ্রেফতার হয়ে যান। ” (১)  ১৯৬৮-৬৯ গণআন্দোলনে শেখ মনির দেখা না পাওয়ার একমাত্র কারণ সেই সময় কালে বিভিন্ন সময় তিনি কারাগারে ছিলেন। ” ঊনসত্তরের আন্দোলনের সময় শেখ ফজলুল হক মনি জেল থেকে ছাড়া পান। (২)  ইতিহাস একক  কোন  প্রতিভাধর ব্যক্তির কীর্তি নয়।  যদিও  প্রতিভাধর  কার্যকলাপের একটা ভূমিকা ইতিহাসে অবশ্যই থাকে। সিরাজুল আলম খানের ভাষ্য ও তাঁকে নিয়ে লেখা পুস্তকাদি প্রকাশের উদ্দেশ্যে হচ্ছে  জনাব খানের কৃতিত্বকে ধরে রাখা।  কৃতিত্ব ধরে রাখার প্রচেষ্টায় অন্য সকলকে যেখানে যতটুকু ছোট করার চেষ্টা করেছেন সিরাজুল আলম খান ও তাঁর লেখক গণ। এই লেখা যত বেশি আলোচনা হবে তত বেশি তার রহস্য উন্মোচিত হবে। খসে পড়বে রহস্যপুরুষ ইমেজ।

সিরাজুল আলম খানের ভাষ্যে জাসদ সৃষ্টির কারণ ” মনির [ শেখ ফজলুল হক মনি ] নেতৃত্বে যুবলীগ গঠিত হওয়াতে আমাদেরও বিকল্প সংগঠন গড়ে তোলা ছাড়া উপায় ছিল না। ” () “১৯৭২ সালের ৩১ অক্টোবর ‘জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল ‘ এর আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। …..যুবলীগ গঠনের পর চার – পাঁচ দিন সময়ের মধ্যে এর চাইতে ভালো কিছু করা সম্ভব ছিল না। ()-  জনাব খানের বক্তব্য অনেক গুলি প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।  জনাব খান স্পষ্টতই বলছেন রাজনীতি নয় শেখ মনির সাথে ব্যাক্তিগত মতবিরোধ ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে তিনি জাসদ সৃষ্টি করেছেন। সিরাজের এমন বক্তব্য জাসদ রাজনীতি করতে যেয়ে যারা নিহত হয়েছেন, রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের শিকার হয়েছেন, যাঁদের পড়াশুনা শিকেয় উঠছে তাঁদের জন্য মোটেই স্বস্তিদায়ক নয়। তবে ১৯৭২ সালের ২১ জুলাই তৎকালীন ছাত্রলীগ বিভক্তির পর থেকেই বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রীদের তৎপরতার সাক্ষী তৎকালীন পত্র পত্রিকা।

যুবলীগের সৃষ্টি ১১ নভেম্বর ১৯৭২।  যুব লীগের যাত্রা ১১ নভেম্বর ১৯৭২এ এই সত্য জানার জন্য তেমন কোনো কাঠখড় পোড়ানোর  বা গবেষক হওয়ার কোন দরকার নেই।  যুবলীগ প্রায় প্রতি বছর ১১ নভেম্বর প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন করে থাকে। সংবাদ পত্রে যুবলীগের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর সংবাদ হরহামেশাই ছাপা হয়ে থাকে। যারা ” .সিরাজুল আলম খান নিজে যেটুকু বলবেন বা অন্য কোনো চাক্ষুষ সাক্ষীর বয়ান থেকে যা জানা যাবে, সেটুকুই ইতিহাসের উপাদান হতে পারে। (৫) এই জাতীয় বাণীতে যাঁদের আস্থা  তাঁরা পত্রপত্রিকা ঘেটে জনাব খানের মিথ্যাচারের নমুনা দেখতে পারেন।  ইন্টারনেট – তথ্য প্রযুক্তির যুগে যাচাইয়ের কাজটি সহজতর হয়েছে।  লেখক গবেষক মহিউদ্দিন আহমদ যুব লীগের প্রতিষ্ঠার সংবাদ  সম্বলিত তৎকালীন বাংলার বাণী পত্রিকার  ফটো প্রতি নায়ক বইয়ে সংযুক্ত করার মধ্য দিয়ে প্রমান করেছেন সিরাজুল আলম খান যা বলেন তা ইতিহাস নয়।  মহিউদ্দিন আহমদের লেখা থেকেও জানা যায় যুবলীগের প্রতিষ্ঠা ১১ নভেম্বর ১৯৭২। () জাসদে জন্ম ৩১ অক্টোবর ১৯৭২। যুবলীগ সৃষ্টির ঘোষণা আসে ১১ নভেম্বর ১৯৭২। যাঁর গণিত শাস্ত্রে স্নাতক পাস্ করেন নাই তাঁদের পক্ষেও সহজেই বুঝা সম্ভব অক্টোবরের পরের মাস নভেম্বর  !

শেখ মুজিবর রহমানের সাথে কথোপকোথনের অনেক একতরফা বর্ণনা দিয়েছেন সিরাজুল আলম খান।  একতরফা কারণ এই সব কথোপকোথনের কোন সাক্ষী নেই। সে সমস্ত কথোপকোথনের নমুনা বইয়ে স্থান করে নিয়েছে প্রায়  সব কথোপকোথন সিরাজকে মহিমানিত্ব করে। দুই এক জায়গায় জনাব খান অন্যের মুখে কথা গুঁজে দিয়েছেন।  ১৯৭২ সালে জুলাই মাসে ছাত্রলীগের ভাঙ্গন পূর্ব সম্মেলন নিয়ে শেখ মুজিব ও সিরাজের কথোপকোথন সিরাজের বয়ানে তুলে ধরেছেন লেখক মহিউদ্দিন আহমদ।  সিরাজের বক্তব্য ও লেখক মহিউদ্দিন আহমদের পর্যবেক্ষণ মন্তব্য দুইটি দৃষ্টি আকর্ষণের দাবী রাখে। সিরাজুল আলম খানের ভাষ্য ” আগের রাতে একটা – দেড়টা পর্যন্ত আমি [ সিরাজ ] মুজিব ভাইয়ের বাসায় ছিলাম। তিনি বলেছিলেন , তিনি কোথাও যাবেন না। এক পর্যায়ে বললেন , সিরাজ , আমি তো কমিউনিস্ট হতে পারব না ?তারপর আমি চলে আসি। শুনেছিলাম, মনি এসেছিল রাত দুইটার দিকে। সে মুজিব ভাইকে সরাসরি বলেছিল , ‘ আপনি যদি সিরাজের সঙ্গে যান, রাজনীতির উত্তরাধিকারের প্রশ্নে তা ঠিক আছে। যদি আমাকে সমর্থন দেন,তাহলে রাজনীতির উত্তরাধিকার ম্যাচেই , রক্তের উত্তরাধিকারও থাকছে। এখন আপনি ঠিক করেন , আপনি কোন দিকে যাবেন।” () শেখ মুজিবর রহমান ও শেখ মনির কথোপকোথনের সময় জনাব খান উপস্থিত ছিলেন না। তারপরেও তৃতীয় পক্ষের কাছে ঘটনার বর্ণনার সময় শেখ মনির নামে দুই /চারটি বক্তব্য যোগ করে দিলেন। শেখ মনির মুখে কথাটা গুঁজে দেওয়ার মধ্য দিয়ে শেখ মুজিব ও শেখ মনির রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত যে পরিবার কেন্দ্রিক তার ইঙ্গিত দিচ্ছেন সিরাজুল আলম খান। লেখক মহিউদ্দিন আহমদ এর পর্যবেক্ষণে বিষয়টি সাবলীল ভাবে ফুটে উঠেছে ” আমি [ মহিউদ্দিন আহমদ ] সিরাজুল আলম খানকে জিজ্ঞেস করেছিলাম , শেখ মুজিবকে শেখ মনি কী বলেছেন , এটা আপনি জানলেন কিভাবে ? তিনি এ ধরনের প্রশ্নের জন্য প্রস্তুত ছিলেন না। বললেন ‘ ফ্রম হর্সেস মাউথ ” ()   শেখ মনির প্রতি সিরাজুল আলম খানের মনোভাব বোঝার জন্য উপরের বয়ান টি যথেষ্ট ব্যাবহারিক।

কোন আলোচনায় অস্বস্তি বা নিজেই নিজের অতিকথনের জালে জড়িয়ে যাওয়া থেকে বাঙালী মধ্যবিত্তের  সহজ  পরিত্রানের পথ হচ্ছে দুই একটা ইংরেজী শব্দ বা বাক্য ব্যবহার। অনেকটা হলিউড সিনেমায় সেক্স দৃশ্য  জুড়ে দেওয়ার সামিল। গল্প যখন প্রায় পথ হারা তখনই দরকার হয়ে  যায় এমন দৃশ্যের। সিরাজুল আলম খানের  ‘ ফ্রম হর্সেস মাউথ ’ From horse’s mouth ব্যবহার হচ্ছে এই জাতীয় উদ্যোগে। কথ্য ইংরেজী ও সাহিত্যে From horse’s mouth বহুল ব্যবহৃত বাক্য  বা প্রবচন। যার অর্থ সরাসরি তথ্য সূত্র থেকে জানা। এই আলোচনার প্রেক্ষাপটে সিরাজুল আলম খান শেখ মনির নামে চালিয়ে দেওয়া  কথোপোকথন শেখ মুজিব অথবা শেখ মনি বা উভয়ের কাছ থেকেই শুনেছেন। সিরাজুল আলম খান  প্রচলিত ইংরেজী অর্থে এই বাক্য ব্যবহার করেছেন এটা ধরে নিতে হবে। লেখক মহিউদ্দিন আহমদ ‘ ফ্রম হর্সেস মাউথ ’ দ্বারা জনাব খান কি বুঝাতে চেয়েছেন সেই জাতীয় প্রশ্ন করা থেকে বিরত থেকেছেন। এই খানেই আমি সিরাজুল আলম খান বইয়ের  অনুলেখক শামসুদ্দিন পেয়ারা ও প্রতিনায়ক লেখক মহিউদ্দিন আহমদের পার্থক্য। সাংবাদিক  শামসুদ্দিন পেয়ারা প্রশ্নাতীতভাবে সব কিছু লিপিবদ্ধ করেছেন। আর লেখক গবেষক মহিউদ্দিন আহমদ ‘ সিরাজুল আলম খান নিজে যেটুকু বলবেন,  সেটুকুই ইতিহাসের উপাদান হতে পারে’ এই সিদ্ধান্তে স্থির থেকে কিছু প্রশ্ন করেছন। তবে প্রশ্ন গুলি যেন সিরাজুল আলম খানকে খুব বেশি কাঠগড়ায় দাঁড় না করায় সে দিকে স্বচেষ্ট ছিলেন।

আরও পড়ুনঃ আমি সিরাজুল আলম খান বলছি –একটি রাজনৈতিক পর্যালোচনা – ৫

     তথ্য সূত্র                           

(১), প্রতিনায়ক – মহিউদ্দিন আহমদ – পৃষ্ঠা ৯৯ । প্রথমা প্রকাশন। ২০০১।

(২) প্রতিনায়ক – মহিউদ্দিন আহমদ – পৃষ্ঠা ১৫২ । প্রথমা প্রকাশন। ২০০১।

(৩) আমি সিরাজুল আলম খান: একটি রাজনৈতিক জীবনালেখ্য, পৃষ্টা ১৬৩

(৪) পূর্বোক্ত – পৃষ্টা ১৬৫

(৫) প্রতিনায়ক – মহিউদ্দিন আহমদ -পৃষ্ঠা ৩৩৭। প্রথমা প্রকাশন। ২০০১।

(৬) পূর্বোক্ত – পৃষ্টা ২৭৮ এবং             জাসদের উত্থান পতন: অস্থির সময়ের রাজনীতি – মহিউদ্দিন আহমদ। পৃষ্ঠা ৮৯। প্রথমা প্রকাশন অক্টোবর ২০১৪।

(৭) পূর্বোক্ত – পৃষ্টা ২৬৬

(৮) পূর্বোক্ত – পৃষ্টা ২৬৬