চলমান সংবাদ

মে দিবস উদযাপন পরিষদ

শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রাম জোরদারের আহ্বান

মে দিবস উদযাপন পরিষদ

শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রাম জোরদারের আহ্বান

মহান মে দিবস উপলক্ষে প্রতিবছরের ধারাবাহিকতায় এবারও চট্টগ্রাম নগরীতে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করেছে ‘মে দিবস উদযাপন পরিষদ’। এতে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ যদি গরীব-উন্নয়নশীল থেকে উন্নত হওয়ার পথে এগিয়ে যায়, তাহলে এখনও শ্রমিকদের মজুরির জন্য রাস্তায় নামতে হয় কেন ? এখনও শ্রমজীবী-মেহনতি মানুষের ওপর অন্যায়, জুলুম হয় কেন ?

রোববার (০১ মে) সকালে চট্টগ্রাম নগরীর চেরাগি চত্বরে মে দিবস উদযাপন পরিষদের এ আয়োজনে উদীচী চট্টগ্রাম জেলা সংসদ, বোধন আবৃত্তি পরিষদ, ওডিসি অ্যান্ড টেগোর ড্যান্স মুভমেন্ট এবং সাংস্কৃতিক ইউনিয়নের বিভিন্ন পরিবেশনা ছিল।

উদীচী চট্টগ্রাম জেলা সংসদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ডা. চন্দন দাশের সভাপতিত্বে ও বোধান আবৃত্তি পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রণব চৌধুরীর সঞ্চালনায় আলোচনায় অংশ নেন চট্টগ্রাম জেলা ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সভাপতি মোহাম্মদ মছিউদ্দৌলা এবং কবি কামরুল হাসান বাদল।

শ্রমিক নেতা মোহাম্মদ মছিউদ্দৌলা বলেন, ‘দেশে চোখ ধাঁধানো নানা উন্নয়ন প্রকল্প হচ্ছে। দেশ নাকি উন্নত হচ্ছে, এগিয়ে যাচ্ছে। বাস্তবতা হচ্ছে, উন্নয়নের গল্প যত দীর্ঘ হচ্ছে, শোষণ-বঞ্চনাও তত বাড়ছে। দেশ যদি উন্নত হয়, তাহলে এখনও কেন শ্রমিকদের মজুরির জন্য রাজপথে নামতে হয় ? কেন পুনর্বাসন ছাড়া হকারদের উচ্ছেদ করা হয় ? কেন আজ দেশে শ্রমজীবী মানুষ আরও গরীব হচ্ছে আর পুঁজিপতিরা আরও বড়লোক হচ্ছে ? মালিক কেন শ্রমিকের ন্যায্য পাওনা দেয় না ? গরীব মানুষ মেরে বড়লোক হওয়ার এই প্রবণতা, দেশকে উন্নত করার এই প্রবণতা রুখতে হবে। ইতিহাস বলে, রাজপথের লড়াই-সংগ্রাম ছাড়া কখনও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়নি। লড়াই-সংগ্রামের মধ্য দিয়েই অধিকার আদায় করতে হবে।’

কবি ও সাংবাদিক কামরুল হাসান বাদল বলেন, ‘আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চার মূলনীতি ছিল গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, বাঙালি জাতীয়তাবাদ ও ধর্মনিরপেক্ষতা। এই মূলমন্ত্রে দেশের গরীব-মেহনতি, মধ্যবিত্ত, ধনী সবার কথা আছে। শোষণ-বঞ্চনা থেকে মুক্তির মূলমন্ত্র মুক্তিযুদ্ধের চার মূলনীতি। আমরা একটি সাম্যের বাংলাদেশ চেয়েছিলাম, যেখানে ধনীরা গরীবের ওপর নির্যাতন-জুলুম করবে না, যেখানে ধর্মের নামের মানুষের ওপর নির্যাতন হবে না। মুক্তিযুদ্ধের ধারায় যদি দেশকে নিয়ে যেতে হয়, তাহলে মানুষের ওপর মানুষের শোষণ থাকতে পারবে না।’

ডা. চন্দন দাশ বলেন, ‘আমরা গানের মধ্য দিয়ে, কবিতার মধ্য দিয়ে, সংস্কৃতির মধ্য দিয়ে এদেশের মেহনতি মানুষকে সংগ্রামের ডাক দিয়ে যাচ্ছি। এদেশের একজন মানুষও যাতে তার ন্যায্য অধিকারটুকু পায়, প্রতিটি শ্রমজীবী মানুষ যাতে একজন সুনাগরিকের মর্যাদা নিয়ে বাঁচতে পারে, সেজন্য সংগ্রামের প্রয়োজন। সেই সংগ্রাম হতে হবে সংস্কৃতির সংগ্রাম। সংস্কৃতি ছাড়া রাজনীতি অর্থহীন। মানুষের মধ্যে সাংস্কৃতিক চেতনাবোধ জাগ্রত করতে না পারলে লড়াই-সংগ্রাম বেগবান হবে না।’

অনুষ্ঠানে বোধন ও সাংস্কৃতিক ইউনিয়নের শিল্পীরা একক ও বৃন্দ আবৃত্তিতে অংশ নেন। গণসঙ্গীত পরিবেশন করেন উদীচীর শিল্পীরা।

বিকেলে নগরীর ডিসি হিলের মুক্তমঞ্চে মে দিবস উদযাপন পরিষদের আয়োজনে দ্বিতীয় দফা অনুষ্ঠান হবে।

#০১/০৫/২০২২, প্রেস বিজ্ঞপ্তি #