চলমান সংবাদ

চট্টগ্রামে কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ ওয়ার্ড আ’লীগের

 

নগরীর নগরীর লালখান বাজারে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দিদারুল আলম মাসুম এবং স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আবুল হাসনাত মো. বেলালের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে এলাকার কর্তৃত্ব নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। এ নিয়ে বেশ কয়েকবার রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে প্রাণহানির ঘটনাও ঘটে।

এর মধ্যে ২৮ মার্চ স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে এলাকায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে দুইজনের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। ওইদিন রাতে দুই নেতার অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন আহত হন।

এই ঘটনার পর এক পক্ষ সংবাদ সম্মেলন করে অন্য পক্ষের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলেছে। ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি আবুল হাসনাত মো. বেলালের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে শনিবার (২ এপ্রিল) দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ওই ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতারা। ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের ব্যানারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ওয়ার্ড আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক দিদারুল আলম মাসুম ও ওয়ার্ডের সকল ইউনিটের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে কাউন্সিলর বেলালের বিরুদ্ধে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট, অবৈধভাবে অর্থ উপার্জন, নেতাকর্মীদের দমন-নিপীড়ন ও টিসিবির পণ্যের কার্ড বিতরণে অনিয়মসহ নানা অভিযোগ তোলা হয়। তবে তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন কাউন্সিলর বেলাল।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে লালখান বাজার ওয়ার্ডের গ ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক সমীর কান্তি দে বলেন, বেলাল কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার পর বেপরোয়া হয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের ব্যাপক নির্যাতন ও মামলা-হামলায় ব্যস্ত হয়ে পড়েন। গত এক বছরে ওয়ার্ডের সামগ্রিক উন্নয়ন কর্মকান্ড বাদ দিয়ে শুধুমাত্র ক্রোধের বশবর্তী হয়ে শত শত দলীয় কর্মী ও সাধারণ জনগণের বিরুদ্ধে এক ডজনেরও বেশি মামলা দায়ের করেছেন।

তিনি আরও বলেন, কাউন্সিলর ও তার বাহিনী জনগণের মাঝে সরকারের ভাবমূর্তি বিনষ্ট করার মিশন হিসেবে দলীয় নাম ও পদবি ব্যবহার করে অবৈধভাবে অর্থবিত্ত ও বৈভব গড়ছে। শিক্ষার্থী ও যুবকদের মাদকের নেশায় বুঁদ করে তাদের দিয়ে জুয়া খেলায় মত্ত করে রমরমা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছন এই কাউন্সিলর। নগরের ওয়াসা মোড় এলাকায় মুনতাসির ভবনসহ ওয়ার্ডের বিভিন্ন স্থানে মদ ও জুয়ার আসর বসানো হচ্ছে। এতে পুরো এলাকায় সামাজিক অবক্ষয়, ছিনতাই, চুরি, রাহাজানি-সহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকান্ড বৃদ্ধি পেয়ছে।

সংবাদ সম্মেলনে গ ইউনিটের সভাপতি নুরুল আলম বলেন, কাউন্সিলর হওয়ার পর তিনি ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়িয়েছেন। উনি স্বেচ্ছাসেবক লীগের একটি পদে আছেন। উনাকে তো আওয়ামী লীগের দায়িত দেয়া হয়নি।

তিনি বলেন, লালখান বাজার এলাকায় অধিকাংশ দরিদ্র পরিবার টিসিবি’র পণ্যের কার্ড পেতে বার বার কাউন্সিলর অফিসে ধরনা দিয়েও সেই কার্ড পায়নি। বিএনপি নেতা-কর্মীদের মাধ্যমে টিসিবির কার্ড বিতরণ করা হয়েছে। সরকার ও আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি বিনষ্ট করছেন বেলাল।

তিনি বলেন, ইস্পাহানি মোড়ে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় জনগণ ও দলীয় নেতাকর্মীদের চাপের মুখে সাধারণ সম্পাদক দিদারুল আলম মাসুম প্রকাশ্যে এ বিষয়ে প্রতিবাদ জানান। তখন নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতেই কাউন্সিলর আবুল হাসনাত বেলাল অশোভন আচরণ করে ও হুমকি দেয়। পরদিন তার উপস্থিতিতে দিদারুল আলম মাসুমের কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়। অঙ্গ সংগঠনের নেতা হয়ে তিনি কিভাবে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগকে পরিচালিত করতে চান?

এসব অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কাউন্সিলর বেলাল বলেন, যারা সংবাদ সম্মেলন করে অভিযোগ করেছেন, সেসব ইউনিট কমিটির বিরুদ্ধে রিভিউ কমিটির কাছে অভিযোগ আছে। এখনো এগুলো অনুমোদিত নয়। এরপরও প্রতি ইউনিট কমিটির সুপারিশে ১০০টি করে মোট ৩০০ কার্ড দেয়া হয়েছে। স্থানীয় আওয়ামী লীগ সমর্থক যারা আমার হয়ে নির্বাচনে কাজ করেছেন তাদের দলের সদস্য ফরমই দেয়া হয়নি। তাদের কী আওয়ামী লীগ করার অধিকার নেই?

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন লালখান বাজার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ ক ইউনিটের সভাপতি শফিউল আলম ও সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন, খ ইউনিটের সভাপতি এস এম ইব্রাহিম ও সাধারণ সম্পাদক আসলাম হোসেন মাসুম এবং গ ইউনিটের সভাপতি নুরুল আলম। দিদারুল আলম মাসুম সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত থাকলেও ছিলেন দর্শক সারিতে।

# ০২.০৪.২০২২ চট্টগ্রাম #