চলমান সংবাদ

রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করছে আমলা-ব্যবসায়ীরা- শাহ আলম

চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে স্থানীয় সাংবাদিকদের সাথে মত বিনিময় করছেন সিপিবি’র নবনির্বাচিত সভাপতি কমরেড মোহাম্মদ শাহ আলম

আওয়ামী লীগ-বিএনপি’র বাইরে বিকল্প শক্তি গড়ে কমিউনিস্ট পার্টি ক্ষমতায় যেতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন দলটির (সিপিবি) কেন্দ্রীয় সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মো. শাহ আলম। বাংলাদেশের রাজনীতি এখন আমলা ও ব্যবসায়ীরা নিয়ন্ত্রণ করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের গণতন্ত্র আজ নির্বাসনে। আমরা যুদ্ধ করেছি, একটি অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রের জন্য। ডেমোক্রেটিক রাজনীতির জন্য। কিন্তু স্বাধীনতার ৫০ বছর পর এসেও আমাদের রাস্তায় নামতে হচ্ছে গণতন্ত্রের জন্য। তিনি বলেন, এদেশের রাজনীতি আমলা-ব্যবসায়ীদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করে আমলা ও ব্যবসায়ীদের একটি সিন্ডিকেট। এ বিশাল সিন্ডিকেট ভাঙতে না পারলে দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন হবে না। পার্লামেন্টেও সব লুটেরা ব্যবসায়ী ও আমলা। রোববার (১৩ মার্চ) চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের এস রহমান হলে গণমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। সিপিবি সভাপতি শাহ আলম বলেন, যে আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছিল, যে আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন করেছিল, সেই বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ আর নেই। এখনকার আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধুর আদর্শের বিপরীতে চলছে। তিনি আরও বলেন, দেশ আজ দুই ভাগ হয়ে গেছে। এর মধ্যে ৫ ভাগ একপাশে আর ৯৫ ভাগ অন্য পাশে। এই ৫ ভাগ সব ধরনের সুযোগ সুবিধা ভোগ করছে। অন্যদিকে ৯৫ ভাগ বিভিন্ন কিছু থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। পাঁচ ভাগ মানুষের বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা আলাদা আর ৯৫ ভাগ মানুষের থাকার জায়গা আলাদা, শিক্ষা-চিকিৎসা-বাসস্থানের জায়গা আলাদা। ওই ৫ ভাগ গণতন্ত্র নিয়ন্ত্রণ করে। এই ৫ ভাগ লুটেরাদের দখলে পার্লামেন্ট। আর ৯৫ ভাগ মানুষের পক্ষে এ লাল পতাকা, এ কাস্তে-হাতুড়ি। দ্বিদলীয় মেরুকরণের বাইরে লাল পতাকার তলে না আসা পর্যন্ত অবস্থার পরিবর্তন হবে না। আওয়ামী লীগ বিএনপির বাইরে গিয়ে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে বিকল্প শক্তি গড়ে কমিউনিস্ট পার্টি ক্ষমতায় যাবে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে ২৮ মার্চ সিপিবি’র নেতৃত্বাধীন বামজোটের ডাকা হরতালে বিএনপির সমর্থন প্রত্যাখ্যান করে সিপিবি’র কেন্দ্রীয় সভাপতি শাহ আলম বলেন, আমরা বিএনপির সমর্থন আমরা চাই না। বাম জোটের হরতালে কেন তারা সমর্থন দেবে। বিএনপি আমাদের কাঁধে বন্দুক রেখে শিকার করতে চাইছে। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে যখন জনগণের নাভিশ্বাস উঠেছে, তখন জনগণের দুর্ভোগকে পুঁজি করে বিএনপি রাজনৈতিক খেলায় মেতে উঠেছে। বাম জোটের হরতালে সমর্থন দিয়ে বিএনপি রাজনৈতিক ফায়দা লুটার চেষ্টা করছে। তাদের কোমরে জোর থাকলে তারা আলাদাভাবে আন্দোলন করুক। তারাও সা¤্রাজ্যবাদের পক্ষে, লুটেরাদের পক্ষে। আমাদের যুদ্ধ সাদ্রাজ্যবাদ, পুঁজিবাদি সমাজের বিপক্ষে। আমার কারও পাওয়ার গেমের হাতিয়ার হতে চাই না। জনগণ দুই দলেকে প্রত্যাখ্যান করেছে। আমরা আওয়ামী লীগ, বিএনপির বাইরে, জোট-মহাজোটের বাইরে আমরা বিকল্প শক্তি হতে চাই। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, দুই হাজার কোটি টাকা লোপাট করার পর ভ্যাট মুক্ত করেছে সরকার। খাদ্য নিরাপত্তার জন্য কেন স্থায়ী রেশন ব্যবস্থা চালু করছে না সরকার। যেখানে যাবেন সব জায়গায় সিন্ডিকেট। এই সিন্ডিকেট ভাঙতে চাই আমরা। আমরা কারও ক্ষমতায় যাওয়ার বাহন হতে চাই না। ডিজিটাল নিরাপত্তার আইনের নামে সাংবাদিকদের স্বাধীনতাকে বন্দি করা হচ্ছে জানিয়ে শাহ আলম বলেন, লুটেরা ব্যবসায়ী-আমলাদের স্বার্থ হাসিলের জন্য এই কালো আইন করা হয়েছে। এখন চাইলেও সাংবাদিকরা সব কিছু প্রকাশ করতে পারেন না। জীবনের ঝুঁঁকি নিয়ে সাংবাদিকরা কাজ করে যাচ্ছে। সভা আরও উপস্থিত ছিলেন সিপিবি চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি অশোক সাহা, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর, সিপিবি চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার সভাপতি কানাই লাল দাশ, সাধারণ সম্পাদক শওকত আলী প্রমুখ। # ১৩.০৩.২০২২ চট্টগ্রাম #