চলমান সংবাদ

চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় নির্বাচনী সহিংসতার ঘটনায় ২৩টি মামলায় গ্রেপ্তার ৫১

ভিডিও ফুটেজ দেখে অস্ত্রবাজিতে জড়িত আরো দুইজনকে গ্রেপ্তার চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সহিংসতায় জড়িত আরো দ্ইুজনকে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সাতকানিয়ায় নির্বাচনী সহিংসতার ঘটনায় এখন পর্যন্ত ঘটনায় ২৩টি মামলা হয়েছে এবং এ পর্যন্ত ৫১ গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সর্বশেষ দু’জনকে গ্রেপ্তারের পর সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য দিয়েছেন চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার (এসপি) এস এম রাশিদুল হক। তিনি বলেন, সাতকানিয়ায় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিভিন্ন প্রার্থীর পক্ষ হয়ে কিছু দুষ্কৃতকারী সশস্ত্র ভূমিকা রেখেছিল। সাতকানিয়ায় ভোটের দিন অস্ত্রবাজি করে যারা আইনশৃঙ্খলার বিঘœ ঘটিয়েছিল তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে। সংঘর্ষের পর জড়িতরা বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপন করেছে। তাদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে। তিনি বলেন, সর্বশেষ গ্রেপ্তার দু’জনকেই ভোটের দিন অস্ত্র হাতে মহড়া দিতে দেখা গেছে। তাদের ছবিও গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে। রোববার রাতে জেলা গোয়েন্দা ও থানা পুলিশের পৃথক অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন- মো. শামসুদ্দিন ওরফে নিশান (২০) ও জয়নাল আবেদীন ওরফে লেদাইয়া (৪৭)। তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী অভিযান চালিয়ে অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। অস্ত্রগুলো তাদের নিজেদের নাকি কেউ সরবরাহ করেছে সেটা রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করে বের করা হবে। গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে সোমবার তাদের আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে এসপি রশিদুল হক বলেন, নির্বাচনের দিন গত ৭ ফেব্রুয়ারি ভোটের দিন সকালে খাগরিয়া ইউনিয়নের ৬ ও ৭ নম্বর ওয়ার্ডের দুটি কেন্দ্রের বাইরে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। ওই ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি বলেন, সহিংসতার ঘটনার পর আসামিদের ধরতে চট্টগ্রাম ও আশেপাশের জেলায় পুলিশ অভিযান শুরু করে। এক পর্যায়ে নিশানকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার স্বীকারোক্তিতে থাগরিয়া ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের জোড়ার কুল সাচি মিয়া বাড়ির সাকিব নামে এক ব্যক্তির নির্মাণাধীন ঘর থেকে একটি এলজি উদ্ধার করা হয়। আর জয়নাল আবেদীনকে খাগরিয়া ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের আমিরখিল এলাকা থেকে সাতকানিয়া থানা পুলিশ গ্রেপ্তার করে। তিনি বলেন, জয়নালকে আটকের পর তার বাড়ি থেকে একটি দোনলা বন্দুক উদ্ধার করা হয়। প্রসঙ্গত চট্টগ্রামের ১৫ উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে সংঘাতপূর্ণ ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন হয়েছে সাতকানিয়া উপজেলায়। নির্বাচনী প্রচারণা শুরুর পর থেকেই প্রায় প্রতিদিনই সংঘর্ষ, গোলাগুলির খবর এসেছে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে। আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে এসব সংঘাতের ঘটনা ঘটেছে। ভোটের আগের রাতে হামলার শিকার হয়ে গুরুতর আহত হন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক পার্থসারথী চৌধুরী। গত ৭ ফেব্রুয়ারি ভোটের দিন উপজেলার খাগরিয়া, বাজালিয়া, নলুয়া, সোনাকানিয়াসহ কয়েকটি ইউনিয়নে রক্তক্ষয়ী সংঘাতের ঘটনা ঘটে। প্রকাশ্যে অস্ত্রের মহড়া দেয় বিভিন্ন প্রার্থীর সমর্থক সন্ত্রাসীরা। বাজালিয়া ইউনিয়নে এক চেয়ারম্যান প্রার্থীর পক্ষে গিয়ে গোলাগুলিতে প্রাণ হারান বহিরাগত এক ব্যক্তি। নলুয়ায় এক শিশুকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে খাগরিয়া ইউনিয়নে দু’টি ভোটকেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়।
# ১৪.০২.২০২২ চট্টগ্রাম #