চলমান সংবাদ

চট্টগ্রাম বন্দরে কোকেন চোরাচালান মামলায় বিচার শুরু

 চট্টগ্রাম বন্দরে কোকেনের চালান জব্দের ঘটনায় চোরাচালান আইনে দায়ের হওয়া মামলায় দশ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। এর মধ্যদিয়ে বহুল আলোচিত এ মামলার বিচার শুরু হলো। আদালত আগামী ২ মার্চ প্রথম সাক্ষ্যগ্রহণের সময় নির্ধারণ করেছেন। সোমবার (৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে চতুর্থ অতিরিক্ত চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ শরীফুল আলম ভূঁঞার আদালত শুনানি শেষে ১০ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর এই আদেশ দেন। মামলার আসামিরা হলেন- খান জাহান আলী লিমিটেডের কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা সোহেল, মালিক নূর মোহাম্মদ, মোস্তফা কামাল, আইটি বিশেষজ্ঞ মো. মেহেদী আলম, গার্মেন্ট পণ্য রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান মন্ডল গ্রুপের বাণিজ্যিক নির্বাহী আতিকুর রহমান, কসকো বাংলাদেশ শিপিং লাইনস লিমিটেডের ব্যবস্থাপক (করপোরেট, বিক্রয় ও বিপণন) একেএম আজাদ রহমান, সিঅ্যান্ডএফ কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম, নূর মোহাম্মদের ভাই খান জাহান আলী লিমিটেডের পরিচালক মোস্তাক আহমদ খান, দুই যুক্তরাজ্য প্রবাসী ফজলুর রহমান ও বকুল মিয়া। এদের মধ্যে চার্জ গঠনের সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন একে এম আজাদ, সাইফুল ইসলাম, গোলাম মোস্তফা সোহেল, মোস্তফা কামাল ও মো.আতিকুর রহমান। চট্টগ্রাম মহানগর পিপি মো. ফখরুদ্দিন চৌধুরী বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরে কোকেন জব্দ করার ঘটনায় বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় চার্জ গঠনের মধ্যদিয়ে বিচার শুরু হয়েছে। আদালত ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ২৫ (বি) ও (ডি) ধারায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। আগামী ২ মার্চ আদালত সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করেছেন। মামলার ১০ আসামির মধ্যে পাঁচজন পলাতক আছেন। হাজতে থাকা তিনজন এবং জামিনে থাকা দু’জন অভিযোগ গঠনের শুনানিতে হাজির ছিলেন। তারা মামলা থেকে অব্যাহতির আবেদন করলেও আদালত নামঞ্জুর করেন। ২০২০ সালের ২৯ জুন ১০ জনকে অভিযুক্ত করে বিশেষ ক্ষমতা আইনের ওই মামলায় অভিযোগপত্র জমা দিয়েছিল পুলিশ। এদিকে চট্টগ্রাম বন্দরে কোকেনের চালান জব্দের ঘটনায় দায়ের হওয়া মাদক আইনের মামলায় ওই আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণ হয়। সোমবার ২২তম আসামির সাক্ষ্যগ্রহণের পর আদালত ২ মার্চ পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করেছেন। পিপি ফখরুদ্দিন চৌধুরী জানিয়েছেন, সোমবার মাদক আইনের মামলায় বিচারিক হাকিম মো. ফরিদুল আলম সাক্ষ্য দিয়েছেন। তিনি চট্টগ্রাম মহানগর আদালতে হাকিম হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় এ মামলার তিন আসামির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি গ্রহণ করেছিলেন। প্রসঙ্গত ২০১৫ সালের ৬ জুন চট্টগ্রাম নগর গোয়েন্দা পুলিশের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে কোকেন সন্দেহে চট্টগ্রাম বন্দরে সূর্যমুখী তেলের চালান জব্দ করে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিফতর। এরপর ২৭ জুন তেলের চালানের ১০৭টি ড্রামের মধ্যে একটি ড্রামের নমুনায় কোকেন শনাক্ত হয়। বলিভিয়া থেকে আসা চালানটির প্রতিটি ড্রামে ১৮৫ কেজি করে সূর্যমুখী তেল ছিল। পরে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি), মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের রাসায়নিক পরীক্ষাগারসহ চারটি পরীক্ষাগারে তেলের চালানের দুটি ড্রামের নমুনায় কোকেন শনাক্ত হয়। চালানটি উরুগুয়ের মন্টিভিডিও থেকে জাহাজীকরণ করা হয়েছিল। পরে তা সিঙ্গাপুর হয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে আসে। কোকেন জব্দের ঘটনায় চট্টগ্রামের বন্দর থানায় ২০১৫ সালের ২৭ জুন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়। আসামি করা হয় চালানটির আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান খানজাহান আলী লিমিটেডের চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদকে। র‌্যাব নুর মোহাম্মদসহ ১০ জনকে আসামি করে ২০১৭ সালের ৩ এপ্রিল আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়। ২০১৯ সালের ২৯ এপ্রিল মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের এই মামলায় ১০ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। একই ঘটনায় চোরাচালানের অভিযোগে বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় অধিকতর তদন্ত শেষে ২০২০ সালের ২৯ জুন সম্পূরক অভিযোগপত্র আদালতে জমা পড়ে। এতেও আসামি করা হয় ১০ জনকে।
# ০৭.০২.২০২২ চট্টগ্রাম #