চলমান সংবাদ

ইন্দিরা গান্ধীর ১০৫তম জন্মদিন উদযাপিত

– পাকিস্তান কারাগার থেকে বঙ্গবন্ধুকে মুক্ত করতে ইন্দিরা গান্ধী কঠোর পদক্ষেপ নেনঃ মেয়র

মুক্তিযুদ্ধের সময় এবং তৎপরবর্তী সময়ে বাংলাদেশকে সর্বোচ্চ সহায়তাকারী ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীর ১০৫তম জন্মদিন বর্ণাঢ্যভাবে পালন করেছে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব। শুক্রবার সকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের এস রহমান হলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী। এতে প্রধান আলোচক ছিলেন ভারতের সহকারী হাই কমিশনার অনিন্দ্য ব্যানার্জী। ইন্দিরা গান্ধী শুধু স্বাধীনতা যুদ্ধে সহযোগিতা নয়, স্বাধীনতার পর পাকিস্তান কারাগার থেকে বঙ্গবন্ধুকে মুক্ত করতে তিনি কঠোর পদক্ষেপ গ্রহন করেছেন। তা না হলে হয়তো এই মহান নেতাকে ফিরে পাওযা যেতো না বলে মন্তব্য করেন মেযর। প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিটি মেয়র রেজাউল করিম বলেন, বাঙ্গালী জাতির স্বাধীনতার কা-ারী বঙ্গবন্ধুর বলিষ্ট নেতৃত্বে দেশ স্বাধীন হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর যোগ্য নেতৃত্বকে শানিত করেছেন ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বাঙ্গালীর পরম বন্ধু শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী। তিনি যদি এক কোটির বেশি বাঙ্গালিকে আশ্রয় না দিতেন, আমরা মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ না দিতেন, প্রবাসী সরকার গঠনের সুযোগ করে না দিতেন, তাহলে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য আরো অনেক বেশি রক্ত প্রবাহিত হতো। তিনি আরো বলেন, শুধু স্বাধীনতা যুদ্ধে সহযোগিতা নয়, স্বাধীনতার পর পাকিস্তান কারাগার থেকে বঙ্গবন্ধুকে মুক্ত করতে তিনি কঠোর পদক্ষেপ গ্রহন করেছেন। তা না হলে আমরা হয়তো আমাদের এই মহান নেতাকে ফিরে পেতাম না। প্রকৃত বন্ধুত্বের প্রমাণ হয় সুখে দুঃখে রাজার আলয়ে। ভারত আমাদের চুক্তিকৃত বন্ধু নয়, দূর্দিনে বন্ধুত্বের প্রমাণ দিয়ে চির আপন হয়েছেন। প্রধান আলোচকের বক্তব্যে অনিন্দ্য ব্যানার্জী বলেন, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের কালরাতে স্বাধীনতার মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখমুজিবুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে স্বাধীনতাকামী বাঙালির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী। তারা নারকীয় হত্যাযজ্ঞ শুরু করে। কোটি মানুষ প্রাণের ভয়ে প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতে আশ্রয় নেয়। তখন ইন্দিরা সরকার তাদের খাদ্য ও জীবনের নিরাপত্তা দেয়। ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল মুজিবনগরের আ¤্রকাননে গঠিত বাংলাদেশ সরকার তখন পাকিস্তানি বাহিনীর ক্রমাগত আক্রমনে সরকার পরিচালনা কঠিন হয়ে পড়লে এগিয়ে আসেন ইন্দিরা গান্ধী। তিনি ভারতের কলকাতায় অবস্থান করে অস্থায়ীভাবে সরকার পরিচালনার সব ব্যবস্থা করে দেন। কলকাতা অবস্থান করেই প্রবাসী সরকার পৃথিবীব্যাপী স্বাধীন বাংলাদেশের পক্ষে জনমত গড়ে তোলেন। শুধু তাই নয়, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র গঠন করে বিশ্বের সাথে যোগাযোগের পাশাপাশি সংবাদ, গান, আবৃত্তির মাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপ্রেরণার ব্যবস্থা করেন শ্রীমতি গান্ধী। এই সময় দিল্লীতে দিনব্যাপী ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অব বাংলাদেশ’র আয়োজনের ব্যবস্থা করেন তিনি। এই সম্মেলনে ৮০ দেশের ৭০০ জনপ্রতিনিধি অংশ নেয়। পরবর্তীতে তিনি বিশ্ব জনমত গঠন ও বঙ্গবন্ধুর মুক্তির দাবীতে বিভিন্ন দেশে চিঠি প্রেরণ করেন। তিনি ৭১’এ পূর্ববঙ্গ থেকে আশ্রয় নেয়া সকল বাঙালিদের ভারতে আশ্রয় দিয়ে তাদের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করেন। ১৯৭১ এর সেপ্টেম্বরে সব সমস্যা মোকাবেলা করে তিনিই স্বীকৃতি দেন বাংলাদেশকে। তিনি একজন মহিয়সি নারী। চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব সভাপতি আলী আব্বাসের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হাশেম, চট্টগ্রমে প্রেস ক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি সালাউদ্দিন মো. রেজা, বিএফইউজে’র সহ-সভাপতি শহীদুল আলম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মহসিন কাজী, সিইউজের সাধারণ সম্পাদক ম শামসুল ইসলাম। সভাপতির বক্তব্যে আলী আব্বাস আগামীতে চট্টগ্রামে প্রেসক্লাবে ইন্দিরা গান্ধীকর্ণার স্থাপনের উদ্যোগ নেয়ার ঘোষণা দিয়ে বলেন, ইন্দিরা গান্ধী এগিয়ে না আসলে দেশ স্বাধীন হতো কিনা তানিয়ে আলোচনার অবকাশ আছে। চট্টগ্রাম শহরে একটি ইন্দিরা গান্ধী স্কয়ার বা কর্ণার করার জন্য তিনি সিটি মেয়রকে অনুরোধ জানান।
# ১৯.১১.২০২১ চট্টগ্রাম #