চলমান সংবাদ

সংবাদ সম্মেলনে সনাতনী শীর্ষ সংগঠনগুলোর নেতারা

– পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বিবৃতি সহিংসতা সৃষ্টিকারীদের উৎসাহিত করবে বক্তব্য প্রত্যহার করে ক্ষমা প্রার্থনার আহবান

দেশজুড়ে সাম্প্রদায়িক হামলা ও সহিংসতা, পুরোহিত হত্যা, মন্দিরে ভাঙচুর-লুন্ঠন, অগ্নিসংযোগের ঘটনা সম্পর্কে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যাচার ও বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছেন সম্মিলিত সনাতনী শীর্ষস্থানীয় সংগঠনসমূহ। মঙ্গলবার (৯ অক্টোবর) চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে এই সংবাদ সম্মেলনে এই প্রতিবাদ জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য সাম্প্রদায়িক হামলাকারীদের উৎসাহিত করেছে উল্লেখ করে বক্তারা অবিলম্বে তার কল্পনাপ্রসূত ও বিভ্রান্তিমূলক মিথ্যা বক্তব্য প্রত্যাহার পূর্বক নিহতদের পরিবারসহ জাতীর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করার আহ্বান জানান। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ইসকন চট্টগ্রাম বিভাগীয় সম্পাদক চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী বলেন, গত ১৩ অক্টোবর কুমিল্লার নানুয়ার দীঘির পাড়ে একটি পূজামন্ডপে কোরআন শরীফ অবমাননার কথা বলে সারাদেশে বিভিন্ন মন্ডপে হামলা-ভাঙচুর, কোথাও কোথাও বাড়ি-ঘরে হামলা করে এমন এক ভীতিকর ন্যাক্কারজনক পরিবেশ তৈরি করা হয়। দেশের সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায় তাদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব সার্বজনীন দুর্গাপূজা নির্বিঘেœ সম্পন্ন করতে পারেনি। মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত বাংলাদেশে এটা কখনোই কাম্য ছিল না। তিনি আরও বলেন, একদিকে যখন প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে পুলিশ প্রশাসন ঘটনায় প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেপ্তার করছে, মূলহোতাদের চিহ্নিত করার চেষ্টা করছে- ঠিক তখনই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বিবৃতি সহিংসতা সৃষ্টিকারী ও অপরাধীদের উৎসাহিত করবে। যেখানে বিশ্বের সমস্ত অসাম্প্রদায়িক ও শুভবুদ্ধিসম্পন্ন জাতি-গোষ্ঠীর লোক এই ঘটনার নিন্দা করেছে, সেখানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী তা স্বীকারই করলেন না। সরকারের একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তির কাছে এরকম বক্তব্য কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়। অবিলম্বে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বিভ্রান্তিমূলক মিথ্যা বক্তব্য প্রত্যাহার পূর্বক নিহতদের পরিবারসহ জাতীর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করার আহ্বান জানানো হয়।সাম্প্রদায়িক সহিংসতার সঙ্গে জড়িত ও এর পেছনের হোতাদের চিহ্নিত, গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি আশীষ ভট্টাচার্য, জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদের সভাপতি সুকুমার চৌধুরী, ইসকন প্রবর্তক শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরের অধ্যক্ষ লীলারাজ গৌরদাস ব্রহ্মচারী, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সহ-সভাপতি দীপংকর চৌধুরী কাজল, চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি হিল্লোল সেন, নন্দনকানন রাধা মাধব মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক নিত্যানন্দ দাস ব্রহ্মচারী প্রমুখ। সংবাদ সম্মেলন থেকে চারদফা দাবি উপস্থাপন করা হয়। দাবিগুলো হলো, (১) সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় জড়িত অপরাধীদের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে শাস্তি নিশ্চিত (২) ক্ষতিগ্রস্থ ও ধ্বংসপ্রাপ্ত মঠ-মন্দির, আশ্রম রাষ্ট্রীয় অর্থায়নে সেনাবাহিনীর দ্বারা পুনঃনির্মাণ এবং অগ্নিদগ্ধ ও লুটপাটকৃত বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পুনঃনির্মাণ ও ক্ষতিপূরণ,(৩) পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মিথ্যা বক্তব্য প্রত্যাহার করে ক্ষমা প্রার্থনা করা এবং (৪) সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, সংখ্যালঘু কমিশন ও সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় গঠন করা।

# ০৯.১১.২০২১ চট্টপগ্রাম #