চলমান সংবাদ

চসিক ৬ষ্ঠ নির্বাচিত পরিষদের নবম সাধারণ সভায় মেয়র

চট্টগ্রামের সকল উন্নয়ন কর্মকান্ডে চসিকের সম্পৃক্ততা বাড়াতে হবে নগরে সরকারি উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ ঝুঁকিমুক্ত, নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ ও জনদুর্ভোগ এড়িয়ে কাজ তদারকি, সমন্বয় সাধনে চসিককে সম্পৃক্ত করার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী। তিনি বলেন, নগরের যেকোনো কর্মকাণ্ডে জবাবদিহি ও দায়বদ্ধতার বিষয়টি অন্যান্য সেবা সংস্থার তুলনায় চসিকেরই সবচেয়ে বেশি। নগরের চলমান উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ও মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নে সিডিএ, ওয়াসা, বিদ্যুৎসহ অন্যান্য সেবা সংস্থার বড় ধরনের যে সংশ্লিষ্টতা রয়েছে সে তুলনায় চসিকের সম্পৃক্ততা সামান্য। তবে প্রকল্প বাস্তবায়নে চলমান কার্যক্রমের অনেক ক্ষেত্রেই নানান সমস্যা, ভোগান্তি এমনকি অনাকাঙ্ক্ষিত প্রাণহানি ঘটছে। এসবের দায় প্রকল্প বাস্তবায়নকারী কর্তৃপক্ষের হলেও সাধারণ মানুষের সমালোচনার তীর থাকে চসিকের দিকেই। কারণ চসিক কর্মপরিষদ নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের নিয়েই গঠিত। বৃহস্পতিবার (২৮ অক্টোবর) চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) আন্দরকিল্লার নগর ভবনের কেবি আবদুস সাত্তার মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত চসিকের ষষ্ঠ পরিষদের নবম সাধারণ সভায় সভাপতির বক্তব্যে মেয়র কথাগুলো বলেন। তিনি বলেন, আমি ক্লিন সিটি দেখতে চাই। পরিচ্ছন্ন বিভাগে কয়েক হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী আছেন, তাদের তদারকি করছেন কাউন্সিলররা। তারপরও চট্টগ্রাম পরিপূর্ণ ক্লিন সিটি হয়ে উঠতে পারেনি। কোনো কোনো স্থানে ময়লা-আবর্জনা পড়ে থাকতে দেখা যায়। এখন থেকে এর দায় বর্তাবে কাউন্সিলরদের ওপর। নগরে আলোকায়নের বিষয়ে কোনো অজুহাত শুনতে চাই না। তার চুরি হয়েছে, বাল্ব নষ্ট হয়ে গেছে এসব ঠুনকো কারণ দাঁড় করানো যাবে না। আলোকায়নের ক্ষেত্রে কোনো ছাড় দেওয়া যাবে না। মেয়র পলিথিনমুক্ত নগরের অঙ্গীকার ব্যক্ত করে বলেন, আপাতত চকবাজার, কর্ণফুলী, কাজীর দেউড়ি কাঁচাবাজারকে পলিথিনমুক্ত করার আওতায় আনা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে পুরো নগরের কাঁচাবাজারগুলো এ কার্যক্রমের আওতায় আনা হবে। নগরীর ফুটপাতগুলো অবৈধ দখল মুক্ত করার প্রত্যয় জানিয়ে তিনি বলেন, ফুটপাতগুলো যতবারই দখলমুক্ত করা হয়েছে ততবারই আবার বেদখল হয়ে যায়! এবারও ফুটপাতগুলো অবৈধ দখলমুক্ত করা হবে। এরপরও যদি কেউ ফুটপাত দখল করে ব্যবসা করে তাদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। অবৈধভাবে নালা-নদর্মা-খালগুলোর ওপর স্ল্যাব ও স্থাপনা জলাবদ্ধতার অন্যতম বড় কারণ উল্লেখ করে বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, অবৈধ স্ল্যাব ও স্থাপনাগুলো নিজ উদ্যোগে সরিয়ে ফেলতে হবে। অন্যাথায় করপোরেশন ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জেল জরিমানাসহ কঠোর ব্যবস্থা নেবে। তবে নালার ওপর স্ল্যাব বসানোর দায়িত্ব চসিকের। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বহদ্দারহাট মোড় থেকে রোজ গার্ডেন পর্যন্ত এবং ডিটি রোডের কিছু অংশের বেহাল অবস্থা ৪ বছরেও কাটেনি। এ অংশগুলো নগরের একটি দুর্বিষহ চিত্র। এলিভেটেড এক্সপ্রেস প্রকল্প ও জলাবদ্ধতার মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে গিয়ে যে মাটিগুলো উত্তোলন করা হয়েছে তা খালের দু’পাশে অন্যদিকে রাস্তার পাশে রাখার ফলে যানজট ও জলজটের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে নাগরিক দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে। এই শুষ্ক মৌসুমে প্রকল্প বাস্তবায়নকারীকে নিজ দায়িত্বে উত্তোলিত মাটি সরিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানাই। এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও প্রকল্প বাস্তবায়ন সংস্থার সঙ্গে সমন্বয়ের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। উপকূলবর্তী ১১টি ওয়ার্ডে আপদকালীন আশ্রয়কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে এবং যেখানে ফায়ার সার্ভিস স্টেশন থাকা উচিত সেখানে তা স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হবে। জন্মনিবন্ধন নিয়ে জটিলতা সম্পর্কে তিনি বলেন, এ প্রক্রিয়াটি খুবই টেকিনিক্যাল। সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে জন্মনিবন্ধন কার্যক্রমকে অধিকতর গতিশীল করা হবে। মশকনিধনের আরো ৩ মাস সময় নির্ধারণের কথা উল্লেখ করে মেয়র বলেন, এ সময়ে যারা স্প্রে করবেন তাদের সুরক্ষা পোশাক দেওয়া হবে। মেয়র নগরে সড়কের যে অংশে ট্রাক, কার্ভাডভ্যান দাঁড়িয়ে থেকে অঘোষিত স্ট্যান্ডে পরিণত করেছে সেগুলো শনাক্ত করে ব্যবস্থা নিতে কাউন্সিলদের পরামর্শ দেন। এ ছাড়া যে সব জায়গা অবৈধ দখলদারদের দখলে আছে তার তালিকা তৈরির জন্য কাউন্সিলরদের প্রতি আহ্বান জানান। চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুল আলমের সঞ্চালনায় সাধারণ সভায় বক্তব্য দেন প্যানেল মেয়র মো. গিয়াস উদ্দিন, আফরোজা কালাম, সচিব খালেদ মাহমুদ, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম, মেয়রের একান্ত সচিব মুহাম্মদ আবুল হাশেম, প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিকসহ ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত কাউন্সিলররা।

# ২৮.১০.২০২১ চট্টগ্রাম #