চলমান সংবাদ

চট্টগ্রামে পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বসতি উচ্ছেদে শুরু হচ্ছে অভিযান

বর্ষায় পাহাড়ধসের আশঙ্কায় চট্টগ্রাম নগরের বিভিন্ন পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বসতির উচ্ছেদ শুরু হতে যাচ্ছে। দুই সপ্তাহের এই উচ্ছেদ অভিযান সোমবার থেকে শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। জেলা প্রশাসন, পরিবেশ অধিদপ্তর, বিদ্যুৎ, গ্যাস ও ওয়াসা কর্তৃপক্ষের সম্মিলিত এই অভিযান নগরীর বায়েজিদ-ফৌজদারহাট লিংক রোডের দুই পাশের পাহাড়ে উচ্ছেদের মধ্য দিয়ে শুরু হবে। চট্টগ্রামের পাহাড় ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত উপকমিটির সদস্য সচিব ও পরিবেশ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম নগরের পরিচালক নুরুল্লাহ নুরী বলেন, সোমবার বায়েজিদ সড়কের পাহাড়ে অভিযানের মধ্য দিয়ে উচ্ছেদ শুরুর সব প্রস্তুতি আমরা সম্পন্ন করেছি। পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন পাহাড়ে অভিযান চালানো হবে।’ তিনি বলেন, ‘যেসব পাহাড়ে গড়ে ওঠা বসতি নিয়ে মামলা রয়েছে, সেগুলোর উচ্ছেদ আপাতত বন্ধ থাকবে। উচ্ছেদের সিদ্ধান্ত জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। পুলিশসহ বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যরা অভিযানে উপস্থিত থাকবেন।’ চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের স্টাফ অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ওমর ফারুক জানান, পাহাড়ে অবৈধভাবে বসবাসরতদের সরিয়ে নেয়ার জন্য পাহাড়গুলো যেসব প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন, তাদের চিঠি পাঠিয়েছে জেলা প্রশাসন। পাশাপাশি তাদের বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানির অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার জন্য ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী ও কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির মহাব্যবস্থাপকের (বিপণন) কাছে চিঠি দেয়া হয়। উচ্ছেদের আগে ওই সব পাহাড়ে মাইকিং করা হচ্ছে। চট্টগ্রামের পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির তথ্য অনুযায়ী, সরকারি ও ব্যক্তি মালিকানাধীন ১৭টি অতি ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ে ৮৩৫টি পরিবার বসবাস করছে। অত্যধিক ঝুঁকিপূর্ণভাবে ব্যক্তিমালিকানাধীন ১০টি পাহাড়ে অবৈধভাবে বসবাসকারী পরিবারের সংখ্যা ৫৩১টি। সরকারি বিভিন্ন সংস্থার মালিকানাধীন সাতটি পাহাড়ে অবৈধ বসবাসকারী পরিবারের সংখ্যা ৩০৪টি। স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় পাহাড়ের গা ঘেঁষে কিংবা পাহাড় কেটে বসতি গড়ে উঠেছে ঝুঁকি নিয়ে বসবাস। সবমিলিয়ে নগরের ২৫টি পাহাড়ে এক হাজারের বেশি পরিবার ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছে। ২০০৭ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত গত ১৩ বছরে চট্টগ্রামে পাহাড়ধসে আড়াই শতাধিক মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। এর মধ্যে পাহাড়ধসে সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা যায় ২০০৭ সালে। ওই বছরের ১১ জুন টানা বর্ষণের ফলে চট্টগ্রামে পাহাড়ধসে ১২৭ জনের মৃত্যু হয়। ২০১৭ সালে মারা যান ৩০ জন। ২০০৭ সালে পাহাড়ধসে ব্যাপক প্রাণহানির পর পাহাড় ব্যবস্থাপনায় একটি শক্তিশালী কমিটি গঠন করা হয়। সেই কমিটি ৩৭ দফা সুপারিশ করে কিন্তু এখনো সেগুলো বাস্তবায়ন করা হয়নি। বরং চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-সিডিএ নতুন করে ১৬টি পাহাড় কেটে বায়েজিদ-ফৌজদারহাট লিংক রোড নির্মাণ করে। সেখানকার আটটি পাহাড়ে নতুন করে অবৈধ বসতি গড়ে উঠেছে। # ১৩.০৬.২০২১ চট্টগ্রাম #