চলমান সংবাদ

তিন অভিযানে রোমানিয়া পুলিশের হাতে আটক ৩৮ অভিবাসী

চলতি সপ্তাহে সীমান্ত থেকে আটক হওয়া একদল অভিবাসীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে রোমানিয়া কর্তৃপক্ষ। ছবি: রোমানিয়া বর্ডার পুলিশ।

বিভিন্ন সীমান্তে পরিচালিত আলাদা তিনটি অভিযানে বিভিন্ন দেশের মোট ৩৮ জন অভিবাসীর বেআইনি সীমান্ত পারাপার ঠেকিয়ে দিয়েছে রোমানিয়া সীমান্ত পুলিশ। আটককৃতরা ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, নেপাল, সিরিয়া এবং আফ্রিকার দেশগুলোর নাগরিক বলে জানিয়েছে বুখারেস্ট।

রোমানিয়া বর্ডার পুলিশ মঙ্গলবার প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, মঙ্গলবার ভোররাত চারটার দিকে গিউরগিউ সীমান্ত পয়েন্টে আসা একটি রেফ্রিজারেটেড ট্রাক থেকে আটজন অভিবাসীকে খুঁজে পেয়েছে।

তুরস্কে নিবন্ধিত গাড়িটির চালকের ভূমিকায় ছিলেন ২৬ বছর বয়সি এক তুর্কি নাগরিক। তিনি শুল্ক কর্মকর্তাদের তুরস্ক থেকে জার্মানিতে মশলা পরিবহনের তথ্য দিয়েছিলেন।

উদ্ধার হওয়া ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সি অভিবাসীরা আফ্রিকা এবং এশিয়ার কয়েকটি দেশের নাগরিক। তাদের মধ্যে সাতজন পুরুষ এবং একজন নারী অভিবাসী ছিলেন। ফ্রিজার ট্রাক থেকে বের করার পর অভিবাসীরা হাইপোথার্মিয়ায় ভুগছিলেন।

রোমানিয়া সীমান্ত পুলিশের দল তাদেরকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে জরুরী পরিষেবার কাছে অধিকতর সহায়তা চেয়েছিল। কয়েকজনকে গিউরগিউ কাউন্টি হাসপাতালের জরুরী বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয়।

বুখারেস্ট কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে, সংশ্লিষ্ট অভিবাসীদের শারীরিক অবস্থা স্বাভাবিক হলে তাদেরকে বুলগেরিয়া ও তুরস্ক পুলিশের কাছে অধিকতর তদন্তের জন্য হস্তান্তর করা হবে।

একই সীমান্তে দ্বিতীয় অভিযানটি পরিচালিত হয় বুধবার। ওই সময় সুপেয় পানি পরিবহনকারী একটি ট্রাক থেকে ১৩ জন সিরীয় অভিবাসীকে খুঁজে পায় পুলিশ।

গিউরগিউ বর্ডার পয়েন্টের সীমান্ত পুলিশ কর্মকর্তারা বলেন, ‘‘জর্জিয়া-লিথুয়ানিয়া রুটে চলাচলকারী একটি ট্রাককে থামিয়ে চেক করার পর গাড়ির ভেতর লুকিয়ে রাখা ১৩ জন সিরীয় নাগরিককে খুঁজে পান কর্মকর্তারা।’’

৪১ বছর বয়সি একজন তুর্কি নাগরিক রেফ্রিজারেটেড ট্রাকটি চালিয়ে আসছিলেন। তিনি জর্জিয়া থেকে লিথুয়ানিয়ায় পানি পরিবহনের তথ্য দিয়েছিলেন।

তবে চালকের অতীত রেকর্ড ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় সীমান্ত পুলিশ ট্রাকটির ভেতরে চেক করার সিদ্ধান্ত নেয়। এক পর্যায়ে ভেতরে থাকে নয় জন পুরুষ এবং চারজন নারী অভিবাসীকে খুঁজে পায় পুলিশ।

তদন্তের সময়, সীমান্ত পুলিশ সদস্যরা অভিবাসীদের শরীরে তল্লাশি চালিয়ে কোন নথি খুঁজে না পেলেও জিজ্ঞাসাবাদে তাদের সবাই স্বীকার করেছেন তারা সিরীয় নাগরিক।

এ ঘটনায় উক্ত চালককে দ্রুত বিচারের আওতায় পাঁচ বছরের জন্য রোমানিয়া ভূখণ্ডে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়। এছাড়া মানব পাচার নিয়ে বিশদ বিচারিক তদন্ত চালিয়ে যেতে আটক হওয়া অভিবাসীদের এবং জব্দকৃত ট্রাকটিকে বুলগেরিয়ান বর্ডার পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

সবশেষ অভিযানটি পরিচালিত হয় বুধবার মধ্যরাতে আরাদ কাউন্টির নাদলাক-২ সীমান্ত পয়েন্টে।

বর্ডার পুলিশ জানায়, সীমান্তে আসা একটি গাড়ি থেকে ১৭ জন অভিবাসীকে খুঁজে পায় সীমান্তের কর্মকর্তারা। গাড়ির চালক একজন রোমানীয় নাগরিক। ঘোষিত নথিতে তিনি রোমানিয়া-ফ্রান্স রুটে পণ্য পরিবহনের তথ্য দিয়েছিলেন।

জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পুলিশ নিশ্চিত হয় আটক হওয়া ১৭ অভিবাসী পাকিস্তান, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, ভারত, নেপাল এবং আফগানিস্তানের নাগরিক। তারা বেআইনি উপায়ে পশ্চিম ইউরোপীয় দেশগুলিতে পৌঁছানোর লক্ষ্যে হাঙ্গেরি সীমান্ত অতিক্রম করার চেষ্টা করেছিলেন।

চালকের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে মানবপাচারের অভিযোগ তদন্ত করা হচ্ছে। এছাড়া অভিবাসীদের বিরুদ্ধে বেআইনি সীমান্ত পাড়ি চেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে। তদন্ত শেষে তাদের বিরুদ্ধে রোমানিয়া ত্যাগের আইনি নোটিশ প্রদান করা হবে।

এমএইউ/এআই