চলমান সংবাদ

বিএম কন্টেইনার ডিপো দুর্ঘটনায় আহত শ্রমিকদের দিনকাল -২

-ডেকচি ম্যাট নূর হোসেনের ঘরের ডেকচিতে ভাত নেই

নূর হোসেন (ফাইল ছবি)

নূর হোসেন বিএম কন্টেইনার ডিপোর অভ্যন্তরে রহমানিয়া হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্ট নামে একটি ক্যান্টিনে ডেকচি ম্যাট হিসেবে চাকরি করতো। প্রায় ৭/৮ বছর সে চাকরি করেছে। দৈনিক ১৭০ টাকা দিয়ে চাকরি শুরু তার।  তার সর্বশেষ মজুরি ছিল দৈনিক ৫০০/- টাকা। কোন সবেতন ছুটি নাই। বয়স আনুমানিক ২৫/২৬ হবে।

বিএম ডিপো দুর্ঘটনার দিন সেও মারাত্মকভাবে আহত হয়। আহত হওয়ার পর গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীতে চলে যায়। সেখানে সরকারী হাসপাতালে ৪ দিন চিকিৎসাধীন ছিল। পরবর্তীতে উন্নত চিকিৎসার জন্য নোয়াখালী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের পরামর্শক্রমে  চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়ে ১ মাস চিকিৎসা নিয়েছিল। অতঃপর চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ থেকে ছাড়পত্র পেলেও চিকিৎসা থেকে ছাড়পত্র পায়নি এখনো।

নূর হোসেনের ডান চোখ নষ্ট হয়ে গেছে। বাম চোখ বন্ধ করলে ডান চোখ দিয়ে সবকিছুই ছায়ার মত দেখে। ডান কানের পর্দা ফেটে গেছে। বর্তমানে চোখের চিকিৎসার জন্য মাসে দুইবার করে ঢাকায় যেতে হয়। বর্তমানে ঢাকায় জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে। চিকিৎসা বাবদ তাকে মাসে ৭/৮ হাজার টাকা খরচ করতে হয়। এই চিকিৎসার টাকা যোগাড় করা নূর হোসেনের পক্ষে আর সম্ভব হচ্ছেনা।

বিগত এক বছর যাবত নূর হোসেনের চাকরি নাই। টাকার অভাবে সংসার চলে না। একসময়ের ডেকচি ম্যাট নূর হোসেনের ঘরের ডেকচিতে এখন ভাত থাকেনা। প্রায়শঃ অনাহারে অর্ধাহারে সংসার চলছে।

বিএম কন্টেইনার ডিপো কর্তৃপক্ষ থেকে ক্ষতিপূরনের টাকা আদায় করে দেয়ার কথা বলে তার ক্যান্টিন মালিক তার কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা নিয়েছিলেন। কোন ক্ষতিপূরনতো পায়নি উল্টো সে ১০ হাজার টাকা লস করলো। ক্যান্টিন মালিককে দেয়া ১০ হাজার টাকা আজও ফেরত পায়নি।  বিএম কন্টেনার কর্তৃপক্ষ চার লাখ টাকা দেয়ার যে ঘোষণা দিয়েছিল সে টাকাগুলো পেলে নূর হোসেনের কিছুটা হলেও সংকট দূর হতো।

পড়ুন:  বিএম কন্টেইনার ডিপো দুর্ঘটনায় আহত শ্রমিকদের দিনকাল -১ -কন্টেইনার মেরামতকারী সিয়াম জানে না তার জীবন কীভাবে মেরামত করবে?