চলমান সংবাদ

বিএম কন্টেইনার ডিপো দুর্ঘটনায় আহত শ্রমিকদের দিনকাল -১

-কন্টেইনার মেরামতকারী সিয়াম জানে না তার জীবন কীভাবে মেরামত করবে?

।।ফজলুল কবির মিন্টু।।

মোঃ নুরুল ইসলাম সিয়াম, দৈনিক ১২ ঘন্টা কাজ করে মাসে মজুরি পেত মাত্র  ৭ হাজার টাকা। বয়স ১৬ কিংবা ১৭ -এখনো ১৮ পূর্ণ হয়নি। একজন শিশু শ্রমিক হয়েও যুক্ত ছিল ওয়েল্ডিং মত একটি মারাত্মক ঝুকিপূর্ণ কাজে – দেশের প্রচলিত শ্রম আইন অনুযায়ী শিশুদের দিয়ে এধরনের মারাত্মক ঝুকিপূর্ণ কাজ করানো বৈধ নয়। জীবনের তাগিদে শিশু বয়সে মারাত্মক ঝুকিপুর্ণ কাজে যুক্ত হওয়া সিয়াম জীবনের পূর্ণতা আসার আগেই যেন থেমে গেল। মৃত্যুর খুব কাছাকাছি গিয়ে বেঁচে ফিরলেও এমন ফেরা আজ অর্থহীন হয়ে পড়েছে সিয়ামের কাছে।

সিয়াম ওয়েল্ডিং এর মাধ্যমে নষ্ট হওয়া কন্টেইনার মেরামত করতো।  ১ বৎসর ২ মাস চাকরি জীবনে সিয়াম বহু কন্টেইনার মেরামত করলেও সে এখন জানেনা তার নষ্ট হওয়া চোখ, কান, পিঠ এবং পা কিভাবে মেরামত করবে? কে মেরামত করবে? কোথায় মেরামত করবে?

সিয়াম জানালো, দুর্ঘটনার দিন সে মারাত্মক আহত হয়ে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়। প্রায় সারা শরীর আঘাতপ্রাপ্ত হয়। তবে সবচেয়ে বেশি আঘাত পায় চোখে। হাসপাতালে প্রথম দশ দিন দুই চোখে ব্যান্ডেজ ছিল। অর্থাৎ প্রথম ১০দিন সে কোন কিছুই দেখতে পায়নি। চিকিৎসা চলেছে প্রায় ১৬ দিন। এরপর হাসপাতাল থেকে রিলিজ পায়। হাসপাতালে থাকা অবস্থায় সিয়ামের কাছ থেকে ২০/২৫ হাজার টাকা খরচ হয়। হাসপাতাল থেকে বাসায় যাওয়ার পরও বিগত এক বছর যাবৎ সে চিকিৎসাধীন আছে। এখন কানে কম শুনে। ডান কান বন্ধ করলে বাম কানে কোন কিছুই সে শুনে না।

একদিকে আয়রোজগারহীন অন্যদিকে নিয়মিত চিকিৎসা করতে গিয়ে তাকে মাসে ৮/১০ হাজার টাকা খরচ করতে হচ্ছে। এ যেন মরার উপর খাঁড়ার ঘা। দীর্ঘ ১ বছরেও সে কারও কাছ থেকে এক টাকা সহযোগিতাও পায়নি। বিগত এক বছরে তার অনেক টাকা খরচ হয়ে গেছে। সিয়াম আজ জানালো চিকিতসাতো দূরের কথা –দুইবেলা দুইমুঠো ভাত যোগাড় তার জন্য এখন ভীষণ কষ্টকর হয়ে পড়েছে। এই অবস্থায় মালিক কর্তৃক ঘোষিত চার লক্ষ টাকা পেলে হয়তো সে চিকিৎসাটা কোন রকমে করাতে পারতো।

পড়ুন:  বিএম ডিপো দুর্ঘটনায় আহত-নিহতদের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ প্রদানের দাবি জানিয়েছে চট্টগ্রাম যুব ট্রেড ইউনিয়ন নেটওয়ার্ক

চলবে . . .

# ২৮/০৫/২০২৩, চট্টগ্রাম