চলমান সংবাদ

গোপালগঞ্জে ব্রি ধান ১০১ জাতের ভালো ফলন হয়েছে

বাংলাদেশ ধান গবেষণা  ইনস্টিটিউটের (ব্রি) নতুন উদ্ভাবিত ব্রি ধান ১০১ গোপালগঞ্জে  ভালো ফলন  হয়েছে। প্রতি হেক্টরে ৭.৭৬ মেট্রিক টন থেকে ৮.৫ মেট্রিক টন ফলন হয়েছে। এ জাতটি ব্যাকটেরিয়া জনিত পোড়া রোগ প্রতিরোধী জাত। তাই নতুন এ জাতে তেমন রোগ বালাই নেই। উচ্চ ফলনশীল (ইনব্রিড) এ জাতটি হাইব্রিড ধানের মতই ফলন দিয়েছে। লম্বা ও চিকন জাতের এ ধানের ভাত ঝরঝরে ও খেতে সুস্বাদু। ব্রি-২৮ জাতের বিকল্প হিসেবে ব্রি ধান১০১ চাষাবাদ করা যাবে। ব্রিধান-২৮  জাতের তুলনায় হেক্টরে ১.৭৫ টন থেকে ২.৫০ টন বেশি ফলন পেয়ে কৃষক লাভবান হবেন।
বাংলাদেশ ধান গবেষণা  ইনস্টিটিউট (ব্রি) গোপালগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয়ের প্রধান ও উর্ধতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম এ তথ্য জানিয়েছেন।
ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, চলতি বোরো মৌসুমে প্রথম গোপালগঞ্জে ৫টি প্রদর্শনী প্ল­টে ব্রি ধান১০১ জাতের আবাদ করা হয়। এসব প্ল­ট থেকে নমূনা শস্য কর্তন করে দেখাগেছে, হেক্টর প্রতি নতুন এ জাতের ধান ৭.৭৬ মেট্রিক টন থেকে ৮.৫০ মেট্রিক টন ফলন দিয়েছে।কৃষকরা এ ধান আবাদ করে পরাবর্তী বছরের জন্য বীজ সংরক্ষণ করতে পরেন।প্রদর্শনী প্লটে ধানের বাম্পার ফলন দেখে কৃষকরা আগামী বছর এ জাতের ধান চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন।
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার গোবরা ইউনিয়নের কৃষক  নসরুমোল্লা বলেন, আমি এ ধান প্রথম করেছি। হাইব্রিড ধানের জাতের মতই হেক্টরে ৭.৭৬ মেট্রিক টন ফলন পেয়েছি। এ ধান ব্রিধান-২৮  এর চেয়েও লম্বা ও চিকন। ব্রিধান-২৮ এর তুলনায় নতুন এ ধানে ১.৭৬ মেট্রিক টন বেশি ফলন পেয়েছি। এটি প্রিমিয়াম কোয়ালিটির ধান। বাজারে এ ধানের দাম বেশি পাওয়া যায়। এ ধানে নেক বাস্ট বা অন্য কোন রোগ বালাই হয়নি। ব্রি ধান১০১ এর চালের ভাত ঝরঝরা ও খেতে সুস্বাদু। আমার ক্ষেতের ধান দেখে আশপাশের কৃষক এ জাতের ধান চাষে ব্যাপক আগ্রহ দেখিয়েছেন । আমি আগামী বছরের জন্য এ ধানের বীজ সংরক্ষণ করছি ।
একই গ্রামের কৃষক আলতাফ হোসেন বলেন, এ ধানের ফলন হাইব্রিড ধানের মতই। কিন্তু চাষাবাদে হাইব্রিড ধানের তুলনায় খরচ কম। তাই আগামী বছর আমি লাভ জনক এ ধানের আবাদ করব।।এ ধান দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে উঠবে।
ব্রি,গোপালগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয়ের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা সৃজন চন্দ্র দাস বলেন, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত ব্রি ধান১০১ জাতটি ক্লাইমেট স্মার্ট।তাই গোপালগঞ্জে মাঠ পর্যায়ে প্রথম ৫টি ট্রায়েলে ব্যাপক সাফল্য মিলেছে। কৃষকরা এসব প্রদর্শনী প্লট থেকে হেক্টর প্রতি ৭.৭৬ মেট্রিক টন থেকে ৮.৫ মেট্রিক টন ফলন পেয়েছেন। এ জাতের ধান কৃষকে ধান চাষে আগ্রহী করে তুলবে।এ ধনের চাষ সম্প্রসারিত হলে দেশ ধানে আরো সমৃদ্ধ হবে।কৃষকের আয় আরো বৃদ্ধি পাবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জ খামারবাড়ির উপ-পরিচালক আব্দুল কাদের সরদার বলেন, ব্রি ধান১০১ জাতের ফলন চিকন ধানে নতুন আশা জাগিয়েছে। এ ধান খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে ভূমিকা রাখবে। আমরা কৃষকে এ ধান চাষে উৎসাহিত করব।এ ধানের আবাদ সম্প্রসারিত হলে দেশের কৃষক ও কৃষি আরো সমৃদ্ধ হবে ।

# ১১/০৫/২০২৩, টুঙ্গিপাড়া (গোপালগঞ্জ)