চলমান সংবাদ

ভোলার নতুন গ্যাসকূপ দেখতে মানুষের ভিড়, দিনবদলের স্বপ্ন

পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ব্যবসায়ী মো. সিরাজুল ইসলাম ঢাকায় রড-সিমেন্টের ব্যবসা করেন। তাঁর এলাকায় গ্যাসকূপ থেকে গ্যাস পাওয়ার খবর পেয়ে গতকাল রাতেই তিনি ভোলায় এসেছেন। আজ সকালে সিরাজুল বলেন, ‘গ্যাস পাওয়া গেছে শুনে আমি আনন্দিত। এ গ্যাসকূপের কারণে ভোলায় ইন্ডাস্ট্রি (শিল্পকারখানা) গড়ে উঠবে আশা করি। সাধারণ মানুষের জমির দাম বাড়বে। বেকারদের চাকরি হবে। সরকার যেন আমাদের এসব আশা পূরণ করে।’

নাতিকে নিয়ে গ্যাসকূপ দেখতে এসেছেন পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়নের আবুল কালাম হাওলাদার। তিনি বলেন, ‘আমগো গ্যাস, আমগোরে আগে দিত অইবো। আমগো গ্যাস দিয়ে ভোলায় ইন্ডাস্ট্রি, কলকারখানা বানাইতে অইবো। তাইলে আমগোর লাব।’

সব মিলিয়ে ভোলায় এখন পর্যন্ত আটটি কূপে গ্যাস পাওয়া গেছে। বাপেক্স জানায়, স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার কাচিয়া গ্রামে প্রথমবারের মতো শাহবাজপুর গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কার হয়। এরপর বাপেক্স সেখানে পর্যায়ক্রমে পাঁচটি কূপ খনন করে। পরবর্তী সময়ে ২০১৮ সালের দিকে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় গ্যাসের সন্ধানে ভূতাত্ত্বিক জরিপ চালানো হয়। তখন তিনটি স্থানে গ্যাসের সন্ধান পাওয়া যায়।

এদিকে ভোলা নর্থ-২ কূপটি খননের জন্য বাপেক্স বাৎসরিক নগদ লগ্নির ভিত্তিতে চার থেকে পাঁচ মাস আগে ছয় একর জমি অধিগ্রহণ করে। ৫ ডিসেম্বর রাশিয়ার একটি প্রতিষ্ঠান আনুষ্ঠানিকভাবে খননের কাজ শুরু করে। প্রায় ৩ হাজার ৪০০ মিটার পর্যন্ত খনন করার পর সেখানে গ্যাসের সন্ধান পাওয়া যায়। চলতি বছরের আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি কূপটি বাপেক্সের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাপেক্সের এক কর্মকর্তা বলেন, ভোলাসহ দক্ষিণাঞ্চলে বিপুল পরিমাণ তেল-গ্যাসের সম্ভাবনা আছে। এ সম্ভাবনা যাচাই করতে ভোলাসহ দক্ষিণাঞ্চলের ১০ জেলায় তেল–গ্যাস অনুসন্ধান করবে বাপেক্স। এ জরিপ কাজে ব্যয় হবে ২৬৬ কোটি টাকা। প্রকল্পটি অনুমোদন পেলে আগামী অর্থবছরের অক্টোবর থেকে সিসমেক সার্ভের (ভূতাত্ত্বিক জরিপ) কাজ শুরু হবে। এতে জ্বালানি খাতে নতুন করে সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হবে।