মতামত

বাংলাদেশের শ্রমিক শ্রেণি সুবর্ণ জয়ন্তীতে কেমন দিন কাটাচ্ছেন?

– অধ্যাপক এম এম আকাশ

অধ্যাপক এম এম আকাশ (ফাইল ছবি)

-১ম পর্ব-

বর্তমান পটভূমিতে রয়েছে করোনা সংকট এবং বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা। “মরার উপর খাঁড়ার ঘা” এর মত যুক্ত হয়েছে রাশিয়া বনাম ইউক্রেন ও তার মিত্র ন্যাটো ও পশ্চিমা পুঁজিবাদী শক্তির যুদ্ধ। আশংকা সৃষ্টি হয়েছে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের।

বাংলাদেশে আমরা অতিক্রম করছি একই সঙ্গে মুদ্রাস্ফীতির (Stagflation) এক অর্থনৈতিক সংকট। প্রধান মন্ত্রী স্বয়ং দুর্ভিক্ষের আশংকা প্রকাশ করেছেন। যদিও পরবর্তীতে তিনি তা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। দেশে শুধু অর্থনৈতিক সংকট তীব্র নয়,  রাজনৈতিক সংকটও যথেষ্ট তীব্র হয়ে উঠেছে। আগামী বছর হচ্ছে নির্বাচনের বছর এবং সময়মত আদৌ হবে কি না এবং হলে তা শান্তিপূর্ণ কোন মিমাংসায় উপনীত হবে কি না তা নিয়ে প্রচুর অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে। সুতরাং রাজনৈতিক সংকটও আজ তীব্র।

এই অবস্থায় বাংলাদেশের শ্রমিকশ্রেণি কেমন দিন কাটাচ্ছেন তার সুস্পষ্ট সহজ নিশ্চিত উত্তর হচ্ছে – ‘ভালো নয়’। তাদের অবস্থা অর্থনোইতিকভাবে নিম্নগামী ও রাজনৈতিকভাবে অনিশ্চিত। তবে পরিস্থিতি এখনো নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়নি বা Irreversible Crisis –এ পরিনত হয়নি।

মানুষের সামনে প্রশন হচ্ছে-

১) এতকাল যে উন্নয়নের ন্যারেটিভ বা আখ্যান শোনা যেত তার মধ্যে হঠাৎ এই অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সমস্যাগুলি কীভাবে সৃষ্টি হলো?

২) এর সম্ভাব্য কারন, অভিঘাত, ফলাফল ও পরিণতি কতদূর গভীর ও বিস্তৃত হতে পারে? এর পরিনতি কি স্থায়ী সংকট (Irreversible Crisis)?

৩) অবশ্যই শ্রমিক শ্রেণি জানতে চান এই ধরণের নেতিবাচক পরিনতি থেকে আত্মরক্ষার কোন পথ আছে কি? নাকি যা হওয়ার তাই হবে বা হতে যাচ্ছে?

আজ এই সব প্রশ্নের উত্তর নিয়েই আলোচনাকরার চেষ্টা করবো। আমার উদ্দেশ্য অনর্থক আতংক সৃষ্টিও নয়, অবাস্তব আশাবাদ সৃষ্টিও নয়। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে শ্রমিকশ্রেণির অর্থনৈতিক সংকট-তিনটি পর্ব।

স্বাধীনতার পর আমরা পঞ্চাশ বছর অতিক্রম করেছি এবং ২০২১ সাল হচ্ছে আমাদের স্বধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী বছর। এই সমগ্র ইতিহাসকে আমরা তিনটি পর্বে ভাগ করতে পারি।

চলবে . . .

(প্রবন্ধটি বিগত ১৮ নভেমবর ‘২২ তারিখে টিইউসি চট্টগ্রাম জেলা কমিটি কর্তৃক আয়োজিত জননেতা চৌধুরী হারুনর রশীদের ২২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্মারক বক্তৃতা অনুষ্ঠানে পঠিত হয়েছে)

লেখকঃ রাজনীতিবিদ, অর্থনীতিবিদ ও অধ্যাপক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, অর্থনীতি বিবিভাগ