চলমান সংবাদ

পিবিআই এসপি নাইমার মামলায় গ্রেফতার দেখানো হলো বাবুল আক্তারকে

সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তারকে পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর পুলিশ সুপার নাইমা সুলতানার মামলায় গ্রেফতার দেখানোর আদেশ দিয়েছেন চট্টগ্রামের একটি আদালত।

তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) সকালে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ আবদুল হালিমের আদালত এ আদেশ দেন।

আদেশের বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন সিএমপির অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (প্রশিকিউশন) মো. কামরুল হাসান। মামলার অন্য আসামিরা হলেন- প্রবাসী সাংবাদিক ইলিয়াস হোসাইন, বাবুল আক্তারের ভাই হাবিবুর রহমান লাবু এবং বাবা আবদুল ওয়াদুদ মিয়া।

গত ১৭ অক্টোবর রাতে চট্টগ্রাম নগরীর খুলশী থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলাটি করেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) চট্টগ্রাম মেট্রোর ইনচার্জ পুলিশ সুপার নাইমা সুলতানা।

মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, বাবুল আক্তারসহ অন্য আসামিরা মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলার তদন্ত ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার ষড়যন্ত্র করছেন। এর অংশ হিসেবে ইউটিউবার ইলিয়াস হোসাইনকে দিয়ে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য দিয়ে ফেসবুক ও ইউটিউবে ডকুমেন্টারি ভিডিও প্রচার করেন। ভিডিওতে যে বক্তব্য রয়েছে তার মাধ্যমে রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি এবং বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত করার চেষ্টা করা হয়েছে।

এর আগে একই ঘটনা এবং একই অভিযোগে গত ২৭ সেপ্টেম্বর পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার বাদী হয়ে রাজধানীর ধানমন্ডি থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে আরেকটি মামলা করেছিলেন।

২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরীর নিজাম রোডে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে দুর্বৃত্তদের গুলি ও ছুরিকাঘাতে খুন হন বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু। ওই সময় এ ঘটনা দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচিত হয়। ঘটনার সময় মিতুর স্বামী তৎকালীন পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার অবস্থান করছিলেন ঢাকায়। ঘটনার পর চট্টগ্রামে ফিরে তিনি পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন।

পরে বাবুল আক্তারের দায়ের করা মামলায় স্ত্রী হত্যাকাণ্ডে তারই সম্পৃক্ততা পায় পিবিআই। এরপর গত বছরের ১২ মে আগের মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার দিন বাবুল আক্তারকে প্রধান আসামি করে চট্টগ্রাম নগরের পাঁচলাইশ থানায় আরেকটি মামলা করেন মিতুর বাবা অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন। ওইদিনই ওই মামলায় বাবুল আক্তারকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠায় পিবিআই। সেই থেকে কারাগারে আছেন তিনি। তবে আইনি জটিলতায় পরবর্তীতে বাবুল আকতারের শ্বশুর মোশাররফ হোসেনের দায়ের করা মামলাটিতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়ে বাবুল আক্তারের করা মামলাতেই তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় তদন্তকারী সংস্থা পিবিআই। এরইমধ্যে অভিযোগপত্রটি গ্রহণ করেছেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে। এটি বিচারের জন্য মহানগর দায়রা জজ আদালতে পাঠানোর প্রক্রিয়ায় রয়েছে।

এরমধ্যে পিবিআই হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগ বনজ কুমার মজুমদারসহ ৬ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করেছিলেন বাবুল আক্তার। স্বীকারোক্তি আদায়ে হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগ তুলে গত ৮ সেপ্টেম্বর এই আবেদন করেছিলেন তিনি। ১১ সেপ্টেম্বর একই আদালতে ফেনী কারাগারে নিজের জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে আরেকটি আবেদন করেন বাবুল। গত ২৫ সেপ্টেম্বর বাবুল আক্তারের এসব আবেদন খারিজ করে দেন চট্টগ্রামের মহানগর দায়রা জজ আদালত।

# ২৪/১১/২০২২, চট্টগ্রাম #