চলমান সংবাদ

ছাত্রীদের খেলতে না দেয়ায় চুল কেটে শিক্ষিকার প্রতিবাদ, তিন সদস্যের কমিটি

চট্টগ্রামের এয়াকুব আলী দোভাষ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের কাবাডি দলের ছাত্রীদের বকা, চুল ধরে টানাটানি ও খেলতে না দেয়ার প্রতিবাদে নিজের মাথার চুল কেটে ন্যাড়া হয়েছিলেন স্কুলেরই শরীরচর্চার শিক্ষিকা জাহিদা পারভীন। কাবাডির দলের ছাত্রীরা ফ্রেঞ্চ স্টাইলে বেণী করার কারণে চুল ধরে টানাটানি করার অভিযোগ ওঠে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা নিপা চৌধুরীর বিরুদ্ধে। এসব অভিযোগ তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন। চট্টগ্রাম জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে প্রধান করে গঠিত এ তদন্ত কমিটিকে আগামী তিন কার্যদিবসের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনায় ইতোমধ্যেই কাজ শুরু করেছে কমিটি। কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন- জেলা ক্রীড়া কর্মকর্তা ও জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা। শুক্রবার (২৩ সেপ্টেম্বর) রাতে এ তদন্ত কমিটি করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (আইসিটি ও শিক্ষা) আবু রায়হান দোলন। শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও কমিটির প্রধান ফরিদুল ইসলাম হোসাইনী বলেন, ‘ঘটনাটি সরেজমিনে তদন্ত করার জন্য চট্টগ্রামের জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ও জেলা ক্রীড়া কর্মকর্তাকে সদস্য করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে কর্তৃপক্ষ। তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। ঘটনাকে ঘিরে যেন কোনো ইস্যু তৈরি না হয়, সে জন্য আমরা ইতোমধ্যে কাজ শুরু করে দিয়েছি।’ চুল ফ্রেঞ্চ বেণি করায় কাবাডি দলের ছাত্রীদের মারধরের অভিযোগ ওঠে চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানার এয়াকুব আলী দোভাষ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিপা চৌধুরীর বিরুদ্ধে। শিক্ষার্থীদের বকা, অপমান ও চুল ধরে টানাটানির প্রতিবাদে মাথা ন্যাড়া করেন শিক্ষক জাহিদা পারভীন। এ নিয়ে ২২ সেপ্টেম্বর তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকেও লিখেছেন। বৃহস্পতিবার রাতে ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডি থেকে নিজের মাথা ন্যাড়া করা একটি ছবি পোস্টও করেন জাহিদা। জাহিদা পারভীন বলেন, থানা পর্যায়ের গ্রীষ্মকালীন ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার জন্য ইয়াকুব আলী দোভাষ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ১২ ছাত্রীর একটি কাবাডি দল গঠন করা হয়। গত ৮ সেপ্টেম্বর ম্যাচ ছিল। কাবাডির নিয়ম অনুযায়ী চুলে ক্লিপ লাগানো যায় না। চুল চোখের সামনে চলে আসায় মেয়েদের খেলতে অসুবিধা হয়। এ কারণে তারা ফ্রেঞ্চ স্টাইলে বেণী করে। তিনি বলেন, নিয়ম অনুযায়ী ম্যাচের এক দিন আগে অংশগ্রহণকারী দলের ছবি তুলে কো-অর্ডিনেটরের কাছে জমা দিতে হয়। ছাত্রীদের মাঠে নামানোর আগের দিন (৭ সেপ্টেম্বর) ছাত্রীদের পরীক্ষা ছিল। পরীক্ষা শেষে ছবি তোলার জন্য ছাত্রীদের জার্সি পরে তৈরি হতে বলি। তারা বেণী করে জার্সি পরে তৈরি হয়। এর মধ্যে আমি টয়লেটে যাই। সেখান থেকেই আমাদের স্কুলের প্রধান শিক্ষিকার চিৎকার-চেঁচামেচি শুনতে পাই। টয়লেট থেকে বের হয়ে শুনি- প্রধান শিক্ষিকা ছাত্রীদের বকাঝকা করেছেন। কয়েকজন ছাত্রীকে চুল ধরে মারধর করেছেন। তখন দুই মেয়েকে কান্না করতে দেখি। প্রধান শিক্ষিকাকে জানাই যে, আমি ছাত্রীদের বেণী করতে বলেছি। এ কথা শুনে তিনি আমার সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। পরে ছাত্রীদের সান্তনা দিই। প্রধান শিক্ষিকার কারণে খেলার দিন আমরা নির্দিষ্ট সময়ে মাঠে পৌঁছাতে পারিনি। তিনি ইচ্ছকৃতভাবে আমাদের দেরি করিয়ে দেন। একারণে ম্যাচে অংশ নিতে পারিনি। এতে প্রতিপক্ষ ওয়াকওভার পেয়ে যায়। # ২৪.০৯.২০২২ চট্টগ্রাম #