চলমান সংবাদ

নগরীর বিভিন্ন এলাকায় তীব্র পানি সংকটে মেয়রের ক্ষোভ

বিনা অনুমতিতে চট্টগ্রাম ওয়াসা নগরীর বিভিন্ন রাস্তা কর্তন করলে সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলী, গ্রাহক ও চসিক প্রকৌশলীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী। তিনি নগরীর বিভিন্ন এলাকায় তীব্র পানি সংকটে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, নগরীর পতেঙ্গা, হালিশহর, কাট্টলীসহ যেসব উপকূলীয় ওয়ার্ড আছে সেখানে খাওয়ার পানি সংকট তীব্রতর, বিষয়টি সর্ম্পকে চট্টগ্রাম ওয়াসা কর্তৃপক্ষকে বারবার অবগত করা হলেও তারা যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করেন নাই। মেয়র অবিলম্বে উপকূলীয় ওয়ার্ডগুলোতে খাবার পানি সংকট নিরসনে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চট্টগ্রাম ওয়াসা কর্তৃপক্ষের প্রতি আহবান জানান। মেয়র ডেঙ্গু ও চিকনগুনিয়ার প্রকোপ রোধে ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের সমন্বয়ে জনসচেতনতামুলক ক্যাম্পেইন ও এডিস মশার উৎপত্তি স্থান ধবংস এবং নিয়মিতভাবে মশার ওষুধ ছিটানোর জন্য ক্র্যাস প্রোগ্রাম অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান।

গতকাল বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকালে নগরীর আন্দরকিল্লাস্থ পুরাতন নগর ভবনে কে.বি আব্দুস ছাত্তার মিলনায়তনে চসিকের ৬ষ্ঠ নির্বাচিত পরিষদের ২০তম সাধারণ সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। চসিকের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সচিব খালেদ মাহমুদের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন প্যানেল মেয়র, ওয়ার্ড কাউন্সিলর, সংরক্ষিত কাউন্সিলর, বিভিন্ন সেবা সংস্থার প্রতিনিধি ও বিভাগীয় প্রধানগণ। সিটি মেয়র রেজাউল করিম বলেন, চট্টগ্রাম নগরীকে একটি নান্দনিক নগরী গড়তে হলে সকল সেবা সংস্থা ও বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ এবং সহযোগিতা প্রয়োজন। বিশেষ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী, চসিকের নির্বাচিত কাউন্সিলর, জনপ্রতিনিধ ও নাগরিক সমাজের যে কোন সমস্যার জবাবদিহি করতে হয় তাদেরকে। তাই নগরীর প্রতিটি উন্নয়ন কাজে তাদের সম্পৃক্ত করা ছাড়া কোন বিকল্প নেই। জলাবদ্ধতা নিরসন ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসের যে কাজ চলমান আছে সেখানে অনেক সমস্যা এখনো দৃশ্যমান। এই সমস্যাগুলো সমাধানকল্পে জরুরি ভিত্তিতে সমন্বয় সভার আয়োজন করা হবে বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন। তিনি চসিকের রাজস্ব আয় বৃদ্ধির ব্যাপারে বন্দর, কাষ্টম থেকে যে কর আদায় করার পরিকল্পনা আছে তা বাস্তাবায়নে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর সাথে পত্র প্রেরণসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তাকে নির্দেশনা প্রদান করেন। তিনি জানান দুই হাজার পাঁচশত কোটি টাকার নগর উন্নয়ন প্রকল্প সম্পূর্ন সরকারী ব্যয়ে করার জন্য প্রধানমন্ত্রী যে বরাদ্দ দিয়েছেন তা বাস্তবায়নের জন্য নতুনভাবে প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তার অভিজ্ঞতার আলোকে এই উন্নয়ন প্রকল্পগুলো যথাসময়ে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে। তিনি নগরীতে ম্যাজিষ্ট্রেট ও পরিচ্ছন্ন বিভাগ কর্তৃক অবৈধ দখল উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে তা আরো জোরদার করার জন্য আহবান জানিয়ে বলেন, উচ্ছেদকৃত অবৈধ স্থাপনাসমুহ যাতে পুন:দখল হতে না পারে সেই জন্য সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য বেষ্টনি দিয়ে বাগান তৈরি অথবা ফেন্সিং এর ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি নির্দেশনা দেন। এছাড়া স্থানীয় থানা সমুহের তদারকীর ব্যবস্থা নিতে চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশ কমিশনারের সহযোগিতা কামনা করে পত্র প্রেরণের নির্দেশনা দেন। মেয়র আরো বলেন, এছাড়াও মেয়র নগরীর যে সব স্থানে এলইডি টেলিভিশন স্থাপনের মাধ্যমে অবৈধ ব্যবসা পরিচালনা করছে তাদের তালিকা তৈরী করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি নির্দেশনা প্রদান করেন। প্রকৌশলীদের উদ্দেশ্যে সেবক কলোনীর বহুতল ভবন নির্মাণ কাজ ও বাস টার্মিনাল প্রকল্প বাস্তবায়নের উপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, এই প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়নের সময় ক্ষেপন ও জটিলতা নিরসনের যে দীর্ঘসূত্রীতার সৃষ্টি হচ্ছে তাতে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন বিব্রতকর অবস্থার সম্মুখীন হচ্ছে। এই ব্যাপারে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেন। তিনি বিদ্যুৎ উন্নয়ণ বোর্ড কর্তৃক রাস্তা সংস্কারের পর যে সব পোল সরিয়ে নেয়া হয়নি তা অতি দ্রুত সরিয়ে নিতে এবং আগ্রাবাদসহ নগরীর বিভিন্ন এলাকায় পরিত্যক্ত বৈদ্যুতিক পোলগুলো নালার উপর রাখার কারণে পানি চলাচলে যে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে তা দ্রুত অপসারনের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগকে নির্দেশনা দেন।

# ১৬.০৯.২০২২ চট্টগ্রাম #