চলমান সংবাদ

চা শ্রমিকদের দৈনিক ন্যূনতম মজুরি ৩০০ টাকা মেনে নেওয়ার আহবান জানিয়েছে স্কপ

চা শ্রমিকদের দাবির প্রতি সংহতি, নিত্যপণ্যের দাম কমানো, মজুরি বৃদ্ধি ও রেশনের দাবিতে আগামীকাল জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশের ঘোষণা এবং টালবাহানা না করে চা শ্রমিকদের দৈনিক ন্যূনতম ৩০০ টাকা মজুরিসহ সকল ন্যায্য দাবি সমুহ মেনে নেওয়ার আহবান জানিয়েছে শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ) কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদ।
গতকাল ২১ আগষ্ট ২০২২, বিকাল ৪টায়, স্কপ কার্যালয়ে শ্রমিক নেতা শহীদুল্লাহ চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় উপস্থিত ছিলেন স্কপ যুগ্ম সমন্বয়ক চৌধুরী আশিকুল আলম ও আহসান হাবিব বুলবুল এবং স্কপ নেতা, আনোয়ার হোসেন, শাহ মোহাম্মদ জাফর, রাজেকুজ্জামান রতন, সাইফুজ্জামান বাদশা, কামরুল আহসান, ডাঃ ওয়াজেদুল ইসলাম খান, নঈমুল আহসান জুয়েল, শাকীল আক্তার চৌধুরী, বাদল খান, নুরুল আমিন প্রমুখ।
সভায় নেতৃবৃন্দ বলেন, এটা অত্যন্ত লজ্জাজনক যে, বাংলাদেশের চা শিল্পের ১৬৮ বছর পরেও চা শ্রমিকদের মজুরি ১৬৮ টাকাও হয়নি। বর্তমান বাজারে যখন ১ হালি ডিমের দাম ৫০-৫৫ টাকা, তেলের লিটার ২০০ টাকার উপরে, ডালের কেজি ১৪০ টাকা সেই সময়ে একজন শ্রমজীবী মানুষের দৈনিক ৩ হাজার কিলো ক্যালরি শক্তি উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্যের হিসাবে ১৪৫ টাকায় কি একটি পরিবারের খাদ্য সংস্থান সম্ভব?
প্রতিবছর কয়েক হাজার কোটি টাকার চা উৎপাদন হচ্ছে। অথচ এই উৎপাদনের কারিগররা পরিবারের সদস্যদের পুষ্টিকর খাদ্য যোগানেরই নিশ্চয়তা দিতে পারবেনা, ন্যূনতম মান সম্পন্ন জীবনযাপনের অধিকার তাদের থাকবেনা এটা বর্বরতা ছাড়া মানবিক সমাজের বৈশিষ্ট্য নয়। মাত্র ২৫ টাকা মজুরি বৃদ্ধির অমানবিক প্রস্তাবনার সাথে প্রধানমন্ত্রীর নাম ব্যবহার করে প্রকৃতপক্ষে তার পদমর্যদা কে হানী করা হয়েছে।
নেতৃবৃন্দ চা শ্রমিকদের হুমকি দেওয়া এবং তাদের ওপর চাপ প্রয়োগের নিন্দা জানিয়ে বলেন, স্থিতিশিল শিল্প সম্পর্ক নিশ্চিত করার পাশাপাশি শ্রমিকদের সংগঠিত হওয়া, স্বাধীন ভাবে মত প্রকাশ, স্বাধীন ভাবে যৌথদরকষাকষি এবং উন্নত জীবনমান নিশ্চিত করাও শ্রম অধিদপ্তরের দায়িত্ব। সেই দায়িত্ব পালনের পরিবর্তে শ্রম অধিদপ্তরের বিরুদ্ধে মালিকের প্রতি পক্ষপাতিত্বমুলক আচরণের অভিযোগ ওঠা দুঃখজনক। অনগ্রসর জনগোষ্টিকে এগিয়ে নেওয়ার পরিবর্তে মুনাফা সর্বোচ্চকরণের নীতিতে অনগ্রসরতার সুযোগ নিয়ে দাস ব্যবস্থার নতুন সংস্করণ চালু রাখা সভ্য সমাজের বৈশিষ্ট্য নয়।
নেতৃবৃন্দ চা শ্রমিকদের মজুরি বিষয়ে মালিকদের বিভ্রান্তি তৈরীর প্রচেষ্টার নিন্দা জানিয়ে বলেন, শ্রমিকদের দৈনিক ৩০০ টাকা মজুরির দাবি পার্শ¦বর্তী চা উৎপাদনকারী দেশসমুহের শ্রমিকদের মজুরির তুলনায় কম। একজন দিনমজুরের সরকার নির্ধারীত মজুরি হারের প্রায় অর্ধেক। তাই টালবাহানা না করে ৩০০ টাকা মজুরি বৃদ্ধি, ছুটির বৈষম্য নিরষণসহ চা শ্রমিকদের ন্যায্য দাবিসমুহ অবিলম্বে মেনে নিন এবং ধর্মঘটকালিন সময়ের মজুরি ও রেশন পরিশোধ করেন। নেতৃবৃন্দ আন্দোলনরত চা শ্রমিকদের প্রতি সংহতি জানান, তাদের উপর কোনো ধরণের হয়রানি বা নিপিড়ন হলে সহ্য করা হবেনা বলে হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করেন এবং চা শ্রমিকদের আন্দোলনের প্রতি সংহতি এবং মজুরি বৃদ্ধি ও নিত্যপণ্যের দাম কমানোর দাবিতে আগামীকাল ২৩ আগষ্ট ২০২২, সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশের ঘোষণা দেন।
# ২২/০৮/২০২২, ঢাকা #