চলমান সংবাদ

মিরসরাইয়ের খৈয়াছড়া ট্র্যাজেডি আহত একজনের অবস্থা এখনো আশংকাজনক, রয়েছে আইসিইউ’তে

-৫জনের মাথায় আঘাত, মস্তিস্কে রক্তক্ষরণ, হাঁড় ভাঙা

 চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের খৈয়াছড়া রেল ক্রসিংয়ে ট্রেনের সাথে মাইক্রোবাসের ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনায় আহত একজনের অবস্থা এখনো আশংকাজনক। তাসরিফ হাসান পাভেল নামে ওই শিক্ষার্থী এখন নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র-আইসিইউ’তে চিকিৎসাধীন। এছাড়া আহত পাঁচজনের মধ্যে দুজনের এখনো জ্ঞান ফিরেনি। তারা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ২৮ নম্বর নিউরো সার্জারি বিভাগে চিকিৎসাধীন। বাকি ৩ জন ধীরে ধীরে হয়ে উঠছেন। তবে সকলেরই মাথায় আঘাত, মস্তিস্কে রক্তক্ষরণ ও শরীরের বিভিন্ন অংশের হাঁড় ভাঙা বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। এদিকে আহতদের একজন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। সুস্থ রোগীদের সঙ্গে আগামী ৮ দিন দুর্ঘটনা বিষয়ক কোন আলাপ করতে নিষেধ করেছেন চিকিৎসকরা। রবিবার (৩১ জুলাই) চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. নোমান খালেদ চৌধুরী এসব তথ্য জানান। আইসিইউতে ভর্তি রোগীর বিষয়ে নিউরো সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ সানাউল্লাহ শামীম বলেন, মাথার রগে আঘাত থাকায় আইসিইউতে পাঠানো হয়েছে তাসরিফ হাসান পাভেলকে। তবে তার ব্রেনে কোন আঘাত নেই। আইসিইউতে নেয়ার পর তার অবস্থা আগের চেয়েও খানিকটা ইমপ্রুভ হলেও এখন পর্যন্ত আহতদের মধ্যে সবচেয়ে গুরুতর অবস্থা তার। এখনো আশংকাজনক অবস্থায় সে। অন্যদিকে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরা ব্যক্তি হলেন জুনায়েদ কায়সার ইমন। গত ৩০ জুলাই রাতে তাকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। তবে আগামী ৮ দিন তার সাথে দুর্ঘটনা বিষয়ক কোন আলাপই না করতে চিকিৎসকরা নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন ইমনের বাবা আবুল কাশেম। এ ঘটনায় আহতদের মধ্যে সবচেয়ে কম আঘাত পেয়েছেন ইমন। ইমন চিকিৎসা নেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ২৪ নম্বর সার্জারি বিভাগে। বাকি ৫ জনের মধ্যে তানভির হাসান হৃদয়ের (১৮) জ্ঞান ফিরেছে রোববার (৩১ জুলাই)। মাথায় আঘাত ও ব্যাকপেইন নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। মাইক্রোবাসের সহকারী তৌকির ইবনে শাওনের (২০) মাথায় আঘাত ছাড়াও বাম পায়ের দুইটি হাঁড় ও বাম হাত ভাঙ্গা। তার জ্ঞান এখনো পুরোপুরি ফিরেনি। এছাড়া সৈকতের (১৮) মাথায় আঘাতের পাশাপাশি পায়ের উপরের দিকে হাড় ভেঙ্গে গেছে। তবে তার জ্ঞান ফিরেছে। অল্প অল্প কথাও বলছেন তিনি। আয়াতের (১৬) মাথায় কোন ইনজুরি না থাকলেও ডান হাত ও গলার হাঁড় ভাঙা। গলার হাঁড় ভাঙা থাকায় তাকে খাবার খাওয়াতে হচ্ছে রাইস টিউবের সাহায্যে। মো. মাহিনের (১৮) মাথায় আঘাত ছাড়াও ঘাড় ও হাতে আঘাত রয়েছে। তবে তার শরীরে ইন্টার্নাল কোন ব্লিডিং নেই। ডা. নোমান খালেদ চৌধুরী বলেন, বেশিরভাগই মাথায় আঘাত ও মস্তিস্কে রক্তক্ষরণ নিয়ে ভর্তি হয়েছেন। তারা অনেকটা শকে চলে গেছেন। এটা থেকে তারা পলিট্রমায় ভুগছেন। তাদের মধ্যে একজনের মাত্র পূর্ণ জ্ঞান ফিরেছে। বাকিরাও ধীরে ধীরে ইমপ্রুভ করছে। এদের ৬ জনকেই আশংকামুক্ত বলা যায়। কারও শাহী রগে বা ব্রেনে মারাত্মক কোন ইনজুরি নেই। প্রসঙ্গত শুক্রবার (২৯ জুলাই) দুপুরে মিরসরাইয়ের বড়তাকিয়া রেলস্টেশনের কাছে রেলক্রসিংয়ে রেললাইনে উঠে পড়া একটি মাইক্রোবাসে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামমুখী মহানগর প্রভাতী এক্সপ্রেস ট্রেন ধাক্কা দেয়। এতে মাইক্রোবাসের আরোহী ১১ জন নিহত হন। আহত সাতজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তারা মিরসরাইয়ের খৈয়াছড়া ঝর্ণা দেখে ফেরার পথে এই দুর্ঘটনা ঘটে। যারা সকলেই হাটহাজারীর আমান বাজার এলাকার একটি কোচিং সেন্টারের শিক্ষক-শিক্ষার্থী। এই ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠনের পাশাপাশি ওই রেলক্রসিংয়ের গেটম্যান সাদ্দামকে আসামি করে মামলা করা হয়। ওই মামলায় গেটম্যান গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে রয়েছেন। তাকে সাময়িক বহিস্কার করেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
# ৩১.০৭.২০২২ চট্টগ্রাম #