চলমান সংবাদ

সীতাকুন্ডের বি এম কনটেইনার ডিপো এখনো ঝুঁকিমুক্ত নয়

-ডিপোর কনটেইনারে আগুন জ্বলছে

 সীতাকুন্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোতে ভয়াবহ বিস্ফোরণ-অগ্নিকান্ডের তিনদিন পেরিয়ে গেলেও আগুন এখনো পুরোপুরি নেভানো সম্ভব হয়নি। এখনো বিভিন্ন কনটেইনারে জ্বলছে আগুন। উঠছে ধোঁয়া। আগুন নেভাতে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিস। পাশাপাশি বিএম ডিপোতে দায়িত্ব পালন করছে সেনাবাহিনী, র‌্যাব, পুলিশ ও আনসার সদস্যরা। ডিপোটি একনো ঝুঁকিমুক্ত নয় বলে জানিয়েছেন এসব সংস্থাসমূহ। ফায়ার সার্ভিস চট্টগ্রাম বিভাগের উপ-পরিচালক মো. আনিসুর রহমান মঙ্গলবার দুপুরে ডিপো এলাকায় সাংবাদিকদের বলেন, আগুন এখন অনেকটা নিয়ন্ত্রণে। সীমিত হয়ে এসেছে। কিছু কন্টেইনার থেকে এখনো ধোঁয়া বের হচ্ছে। এখন না জেনে যদি ফায়ার ফাইটিং করতে যাই, তাহলে কন্টেইনারের ভিতরে দাহ্য বস্তু থাকলে আগুন বাড়তে পারে। যাতে আর কোনো দুর্ঘটনা না হয় সেজন্য রাসায়নিকের কন্টেইনার রিমুভ করে ডিপোর অন্য অংশে নিতে বলা হয়েছে। রোববার ডিপোতে ফায়ার সার্ভিসের ২৫টি ইউনিট কাজ করলেও এখন দুটি ইউনিট কাজ করছে। আশপাশের প্রায় সব পুকুরের পানি শেষ হয়ে যাওয়ায় ফায়ার সার্ভিসের পানির গাড়িতে করে দূর থেকে পানি এনে আগুন নেভানোর কাজ চলছে। ডিপোতে রাসায়নিকের কত কন্টেইনার আছে জানতে চাইলে আনিসুর রহমান বলেন, কন্টেইনারের বিষয়ে এখনো ডিপোর মালিকপক্ষ নিশ্চিত করেনি। কখনো ২৮টি, কখনো ৩০টি বলছে। তাদের বলেছি, রাসায়নিকের কন্টেইনারগুলো সরিয়ে নিতে। মালিকপক্ষ বলেছে- তারা চেষ্টা করছে। তবে রিমুভ করাও ঝুঁকিপূর্ণ, দ্রুত করা সম্ভব নয়। এদিকে সেই ডিপো ধ্বংসস্তুপ থেকে আরো দুটি দেহাবশেষ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস। মঙ্গলবার দুপুরে মরদেহের অংশবিশেষগুলো উদ্ধার করা হয়। এ নিয়ে গত তিনদিনে ৪৩ জনের লাশ উদ্ধার করা হলো। এর আগে ৪১ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছিল। এবিষয়ে ফায়ার সার্ভিস চট্টগ্রাম বিভাগের উপ-পরিচালক মো. আনিসুর রহমান বলেন, দুইজনের দেহাবশেষ আমরা পেয়েছি আজ। দুইটা লাশের মধ্যে একটির পাশে ফায়ার সার্ভিসের পিপি পাওয়া গেছে। তাই সেটি আমাদের ফায়ারের কর্মী বলে মনে হচ্ছে আলামত দেখে। আরেকটির পাশে ছিল সিকিউরিটি গার্ডের ড্রেস। সেটি তখন ডিউটিতে থাকা ডিপোর সিকিউরিটি বিভাগের কর্মী বলে মনে হচ্ছে। ডিএনএ টেস্টের পর চূড়ান্ত হওয়া যাবে। তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের নয়জন নিহতের তথ্য নিশ্চিত। আরো তিনজন এখনো নিখোঁজ রয়েছেন। তাদের পরিবারের সদস্যরা এসে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য নমুনা দিয়ে গেছেন। এছাড়া ফায়ার সার্ভিসের ১২ জন সিএমএইচে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এছাড়া ঘটনাস্থলের মূল অংশ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে পুড়ে যাওয়া ছয়টি অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন। তবে এসব মোবাইল ফোনের মালিক কারা, তা এখনো জানা যায়নি। ফায়ার সার্ভিস কর্মী আল-আমিন হোসেন বলেন, মোবাইলগুলো বিস্ফোরণের কারণে পুড়ে গেছে। ছয়টি মোবাইলের মধ্যে চারটিতে সিম লাগানো ছিল। সিমগুলোও পুড়ে গেছে। ফরেনসিক করার পর এসব মোবাইলের প্রকৃত মালিককে শনাক্ত করা যেতে পারে। ধারণা করা হচ্ছে, ডিপোতে কেমিক্যালের কনটেইনারে বিস্ফোরণের আগে ফায়ার সার্ভিসের যেসব কর্মী আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছিলেন অথবা উৎসুক যারা আগুন নিয়ন্ত্রণ দেখছিলেন এই মোবাইলগুলো তাদের হতে পারে। উদ্ধার মোবাইলের প্রকৃত মালিক বেঁচে আছেন নাকি আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন, তা ফরেনসিক রিপোট পেলে জানা যাবে। # ০৭.০৬.২০২২ চট্টগ্রাম #