চলমান সংবাদ

আসামি ধরতে গিয়ে ‘স্ত্রীকে মারধর ও লুটপাট’, এসআই প্রত্যাহার

চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত আসামি ধরতে গিয়ে তার স্ত্রী ও সন্তানকে মারধর, ঘরের আলমারি খুলে টাকা-স্বর্ণালঙ্কার লুটের অভিযোগে পুলিশের এক উপ-পরিদর্শককে (এসআই) দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। মাহবুব মোরশেদ ওই এসআই’কে সীতাকুন্ড থানা থেকে প্রত্যাহার করে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। সোমবার (১৮ এপ্রিল) দুপুরে প্রত্যাহারের বিষয়টি নিশ্চিত ওই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করা হচ্ছে বলেও পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। জেলা পুলিশ সূত্র জানায়, প্রাথমিক তদন্তে আসামির স্ত্রীর অভিযোগের সত্যতা পেয়ে রোববার (১৭ এপ্রিল) রাতে এসআই মাহবুব মোরশেদের বিরুদ্ধে এই শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত ওই আসামি হলেন, সীতাকুন্ড উপজেলার মুরাদপুর ইউনিয়নের ভাটেরখীল গ্রামের বাসিন্দা নুরুল ইসলাম। তার স্ত্রী খালেদা আক্তার রোববার এসআই মাহবুব মোরশেদের বিরুদ্ধে জেলা পুলিশ সুপার ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বরাবরে লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, জায়গা-জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে প্রতিবেশীর করা একটি মামলার আসামি নুরুল ইসলামকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানামূলে ধরতে শনিবার দুপুরে তাদের বাড়িতে যান এসআই মাহবুব মোরশেদ, সোর্স নুরুজ্জামান ও সাদা পোশাকে থাকা দুই পুলিশ সদস্য। ঘরে ঢুকেই মাহবুব গালিগালাজ শুরু করেন। নুরুল ইসলামকে খুঁজে না পেয়ে তার স্ত্রীকে আলমারির চাবি দিতে বলেন। তিনি চাবি না দিলে তাকে লাথি দেন। চাবি দেওয়ার পর আলমারি খুলে এক লাখ ৪২ হাজার টাকা, স্বর্ণের কানের দুল, আট আনা স্বর্ণালংকার, দুটি মোবাইল এবং তিন সন্তানের জন্মনিবন্ধন ও শিক্ষাগত বিভিন্ন সনদ নিয়ে যান। সেগুলো নেওয়ার সময় বাধা দিলে নুরুল ইসলামের এক ছেলেকেও মারধর করা হয় এবং অস্ত্র তাক করে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। চট্টগ্রাম জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সীতাকুন্ড সার্কেল) আশরাফুল করিম বলেন, গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত আসামির স্ত্রী আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। প্রাথমিক তদন্তে আমরা এসআই মাহবুব মোরশেদের অপেশাদার আচরণের সত্যতা পেয়েছি। এজন্য তাকে দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তাকে চট্টগ্রামের পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে। অভিযোগের পূর্ণাঙ্গ তদন্ত চলছে। তথ্যপ্রমাণ পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সীতাকুন্ড থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘আসামির বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট ছিল এবং গ্রেপ্তার অভিযানে যাওয়ার বিষয়ে থানা অবগত ছিল। তবে আসামির স্ত্রীর সঙ্গে এমন খারাপ ব্যবহার করার বিষয়টি জানা ছিল না। ওই নারী পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ দিয়েছেন। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। তবে অভিযুক্ত এসআই মাহবুব মোরশেদ তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে বলেন, ‘একজন ওয়ারেন্টের আসামিকে গ্রেপ্তার করতে গেলে সে পালিয়ে যায়। আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমি কোন লুট বা খারাপ ব্যবহার করিনি। তারা আমাকে ফাঁসাতে চেষ্টা করছে।’
# ১৮.০৪.২০২২ চট্টগ্রাম #