চলমান সংবাদ

মেলা কমিটির কার্যালয় উদ্বোধন

-খেলার স্থান পরির্দশনে মেয়র

ঐতিহ্যবাহী জব্বারের বলী খেলা ও মেলার সম্পূর্ণ ব্যয়ভার চসিক’র চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী আব্দুল জব্বারের বলী খেলা ও বৈশাখী মেলা আয়োজনের সম্পূর্ণ ব্যয়ভার চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন বহন করবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী। করোনা পরিস্থিতির কারণে গত দুই বছর মেলা বন্ধ থাকার পর এবার ঐতিহ্যবাহী জব্বারের বলী খেলার আসর আগামী ২৪-২৬ এপ্রিল তিনদিন বৈশাখী মেলা অনুষ্ঠিত হবে। ১২ বৈশাখ অর্থাৎ ২৫ এপ্রিল বিকেল ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত বলী খেলা চলবে। জেলা পরিষদের চত্বরের ২০ ফুট বাই ২০ ফুটের মঞ্চ তৈরি করে বলী খেলা চলবে। বাঙালি সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের অন্যতম অংশ চট্টগ্রামের আবদুল জব্বারের বলীখেলা। রোববার (১৭ এপ্রিল) দুপুরে নগরীর লালদিঘীর মাঠে বলী খেলা ও মেলার স্থান পরির্দশন এবং মেলা কমিটির কার্যালয়ের উদ্বোধন করেন মেয়র রেজাউল করিম। এসময় মেয়র বলেন, জব্বারের বলী খেলা শুধু একটি খেলা নয়- এটি আমাদের ঐতিহ্য। এই ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে আমাদেরকে সকলের সহযোগিতা করতে হবে। সময় স্বল্পতার কারণে স্পন্সরের বদলে আয়োজনের সম্পূর্ণ ব্যয়ভার চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন গ্রহণ করবে। এ মেলায় সাথে আমাদের প্রান্তিক গ্রামের অর্থনৈতিক নিবিড় সর্ম্পক রয়েছে। বৈশাখ মাসকে ঘিরে মেলায় নানাবিদ শৈল্পিক ও গৃহস্থালী পণ্য বিক্রি করার জন্য গ্রামের হস্ত শিল্পের কারিগরগণ ব্যস্ত থাকে, অন্য দিকে নানা খাবারের পসরা তৈরিতে ব্যস্ত সময় কাটাতো। করোনা পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক হওয়ার কারণে তাদের উৎসাহ ও জীবন জীবিকার স্বার্থ বিবেচনায় এই মেলার আয়োজন। মেলার আগের যে জৌলুস ছিল, এখনো সবকিছুই থাকবে। মেলা বন্ধের সিন্ধান্তে চট্টগ্রামের মানুষের মধ্যে যে হতাশা ও ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল, তা পুরোপুরি নিরসন হবে আশা করে তিনি এই ঐতিহ্যবাহী আয়োজনে রাজনৈতিক, প্রসাশনসহ সকলের সহয়োগিতা কামনা করেন। পরে তিনি লালদীঘি পাড়স্থ চকিস লাইব্রেরির দ্বিতীয় তলায় মেলা কমিটির কার্যালয়ের শুভ উদ্বোধন করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন মেলা কমিটির সভাপতি চসিক ওয়ার্ড কাউন্সিলর জহুর লাল হাজারী, আতাউল্লা চৌধুরী, ওয়াসিম উদ্দিন চৌধুরী, পুলক খাস্তগীর, সংরক্ষিত কাউন্সিলর রুমকী সেনগুপ্ত, মেলা কমিটির সহ-সভাপতি ও প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, সদস্য সচিব শওকত আনোয়ার বাদল, সাবেক কাউন্সিলর জামাল উদ্দিন, বলী খেলার রেফারি ও সাবেক কাউন্সিলর আব্দুল মালেক, মো. চঞ্চল, মো. ইউছুপ, জিয়াউল হক সোহেল ও কোতেয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহিদ হোসেন প্রমুখ। প্রসঙ্গত, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে দেশের যুব সমাজকে সংগঠিত করতে ১৯০৯ সালে বদরপাতির আব্দুল জব্বার সওদাগর নগরীর লালদীঘি মাঠে কুস্তি প্রতিযোগিতার আয়োজন করেন। পরে যা আব্দুল জব্বারের বলী খেলা নামে পরিচিত ও বৈশাখী মেলায় পরিণত হয়। বাংলা পঞ্জিকা অনুসারে ১২ বৈশাখ জব্বারের বলী খেলা অনুষ্ঠিত হয়। জব্বারের বলীখেলা একটি জনপ্রিয় ও ঐতিহ্যমন্ডিত প্রতিযোগিতা হিসেবে বিবেচিত। বলীখেলাকে কেন্দ্র করে লালদীঘি ময়দানের আশপাশে প্রায় তিন কিলোমিটারজুড়ে বৈশাখী মেলার আয়োজন হয়। ১২ বৈশাখের দুই-তিন দিন আগে থেকে লালদীঘির মাঠ ও আশপাশের এলাকা নানা গ্রামীন ও হস্ত তৈরি পণ্যে ভরে ওঠে। তিন দিনের মেলা হলেও সপ্তাহব্যাপী নানা পণ্যের পসরা সাজিয়ে চলে বিকিকিনি। বাঙালি সংস্কৃতির বিকাশ এবং একই সঙ্গে বাঙালি যুব সম্প্রদায়ের মধ্যে ব্রিটিশবিরোধী মনোভাব গড়ে তোলা, শক্তিমত্তা প্রদর্শনের মাধ্যমে তাদের মনোবল বাড়ানোর প্রেরণা থেকেই এই বলীখেলার আয়োজন। জব্বার মিয়ার বলীখেলা ও বৈশাখী মেলা চট্টগ্রামের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও অহংকারে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে দেশের সবচেয়ে বড় লোকজ উৎসব হিসেবে এটিকে চিহ্নিত করা হয়।
# ১৭.০৪.২০২২ চট্টগ্রাম #