মতামত

ভবিষ্যতে কমিনিউনিটি সেন্টার ও ডেকোরেটার্স শ্রমিকদের ঈদ বোনাসের দাবি জোরালো করা হবে

– মোহাম্মদ পারভেজ

মোহাম্মদ পারভেজ, চট্টগ্রাম জেলা ও মহানগর কমিউনিটি সেন্টার ও ডেকোরেটার্স শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক। দুই ছেলে ও এক মেয়ের জনক। যার ভাবনা জুড়ে রয়েছে কমিউনিটি সেন্টার ও ডেকোরেটার্স শ্রমিক। মুসলিম সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় উৎসব ঈদ সমাগত। করোনার কারনে বিগত দুই  বৎসর কমিউনিটি সেন্টার  (ওয়েটার) ও ডেকোরেটার্স শ্রমিকদের তেমন কোন আয়-রোজগার ছিলনা ফলে তাদেরকে কঠিন সময় অতিক্রম করতে হয়েছে। অনেককে না খেয়ে কিংবা অর্ধ আহার করে দিন যাপন করতে হয়েছে।

পারভেজের মতে বর্তমানে রমজান মাসে বিয়ে সাদী বা অন্য বিশেষ কোন অনুষ্ঠান না থাকায় এখনও বেশির ভাগ শ্রমিক তীব্র আর্থিক সংকটে দিন কাটাচ্ছে। এই সংকট মোকাবেলায় বেশির ভাগ কমিউনিটি সেন্টার ও ডেকোরেটার্স শ্রমিক বর্তমানে ভিন্ন পেশায় যুক্ত হয়ে কোন রকমে পরিস্থিতি সামাল দেয়ার প্রাণপন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, শ্রমিকেরা দারোয়ানের কাজ, রিক্সা চালানো ইত্যাদিতে যুক্ত হয়ে যাচ্ছে এমনকি সুইপারের কাজ পেলেও তাও করছে। দেশের অন্যান্য পেশার মানুষেরা যখন ঈদ উৎসব নিয়ে ব্যস্ত তখন আমরা দুমুটো ভাত খাওয়ার লড়াই করছি। জীবনে এত কঠিন দুঃসময় আমরা আর কখনো পার করিনি।

যে যা পাচ্ছে তাতে ঝাপিয়ে পড়লেও সবাই কিন্তু কাজ পাচ্ছেনা। ফলে এখনও কমপক্ষে ৪০ শতাংশ শ্রমিক ধার দেনা করে চলছে। সুতরাং তাদের কাছে ঈদ বা উৎসব বিলাসিতা ছাড়া কিছুই নয়। বাকী ৬০ শতাংশ যারা কোন একটি কাজ যোগাড় করে কোন রকম পরিস্থিতি সামাল দিচ্ছে তাদের কাছেও ঈদ করার মত তেমন অতিরিক্ত টাকা জমা নেই। ফলে তাদেরকেও  বিভিন্ন এনজিও অথবা কো-অপারেটিভ প্রতিষ্ঠান থেকে উচ্চ সুদে ঋন নিয়ে ঈদ উদ যাপন করতে হবে।

তিনি আরো বলেন, কমিউনিটি সেন্টার ও ডেকোরেটার্স শ্রমিকরা যে আর্থিক কষ্টে নিপতিত হয়েছে, সেখান থেকে উত্তরণের জন্য স্থায়ী রেশনিং ব্যবস্থা চালু করতে হবে। না হলে আমাদের পক্ষে টিকে থাকা কঠিন হয়ে  যাবে।

পারভেজ বলেন, শ্রম আইন এবং বিধিমালা অনুসারে শ্রমিকদের ঈদ বোনাস দেয়ার কথা উল্লেখ থাকলেও আমরা কমিউনিটি সেন্টার ও ডেকোরেটার্স শ্রমিকরা ঈদ বোনাস পায়না। তিনি বলেন আমাদের শ্রম, ঘাম ও রক্তে পরিচালিত প্রতিষ্ঠানগুলোর মালিকদের কী আমাদের প্রতি কোন দায় নেই? মালিকের পরিবারের সদস্যরা ঈদ করবে আর আমরা কী ঈদ করবো না? এটা খুবই অমানবিক ও মর্মান্তিক বিষয়। সরকার এবং মালিক সমিতিকে এব্যাপারে ভাববার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি। তবে ঈদ বোনাসের ব্যাপারে ভবিষ্যতে আমাদের দাবি আরো জোরালো করা হবে ইনশাআল্লাহ।

এই ব্যাপারে শ্রমিকদেরকে ঐক্যবদ্ধ থেকে আমাদের হাতকে শক্তিশালী করা জন্য অনুরোধ করছি। শ্রমিকরা ঐক্যবদ্ধ ছিল বলে সম্প্রতি আমাদের মজুরি বৃদ্ধির আন্দোলন সফল হয়েছে। ভবিষ্যতে ঈদ বোনাস আদায়ের আন্দোলনও সফল হবে কোন সন্দেহ নাই। জনাব পারভেজ জোরালো কন্ঠে বলেন, বোনাস প্রত্যেক শ্রমিকের আইনগত ন্যায্য অধিকার। বোনাস কারও দান বা ভিক্ষা নয়। সুতরাং বর্তমানে আমাদেরকে বোনাস না দিয়ে ঠকানো হচ্ছে। এ সুযোগ আর বেশীদিন দেয়া হবেনা। আমরা প্রতিরোধ গড়ে তুলবোই। ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ আন্দোলন করেই মালিক পক্ষকে বোনাস দিতে বাধ্য করা হবে।

মোহাম্মদ পারভেজঃ সাধারণ সম্পাদক, চট্টগ্রাম জেলা ও মহানগর কমিউনিটি সেন্টার ও মহানগর শ্রমিক ইউনিয়ন