চলমান সংবাদ

মিতু হত্যা: ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে বাবুল আক্তারের হাতের লেখার নমুনা সংগ্রহ

স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলার আসামি সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের হাতের লেখার নমুনা আদালতের নির্দেশে সংগ্রহ করেছে মামলার তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-পিবিআই। মঙ্গলবার (২২ মার্চ) বিকেলে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ আবদুল হালিমের উপস্থিতিতে তাঁর খাস কামরায় এই নমুনা নেওয়া হয়। এর আগে গত ৭ মার্চ মামলার পিবিআই বাবুল আক্তারের হাতের লেখা পরীক্ষা করতে আদালতে আবেদন করেন। কথিত বান্ধবীর কাছ থেকে উপহার হিসেবে পাওয়া বইয়ে থাকা কিছু হাতের লেখা বাবুল আক্তারের লেখার সঙ্গে মেলে কি না, সেটা জানতেই তদন্তকারী কর্মকর্তা হাতের লেখা সংগ্রহের আবেদন করেন। আবেদনের প্রেক্ষিতে গতকাল সোমবার (২২ মার্চ) সকালে শুনানিতে একই আদালত বাবুল আক্তারের হাতের লেখা পরীক্ষা করতে আদালতের সামনেই নমুনা সংগ্রহের আদেশ দেন। এসময় তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই চট্টগ্রাম মহানগরের পরিদর্শক আবু জাফর মোহাম্মদ ওমর ফারুক সেখানে উপস্থিত থেকে নমুনা সংগ্রহ করেন। চট্টগ্রাম নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (প্রসিকিউশন) কামরুল ইসলাম বলেন, আদালতের নির্দেশে বাবুল আক্তার হাতের লেখার নমুনা দিয়েছেন। এখন সেটা তদন্তকারী কর্মকর্তা হাতের লেখা বিশারদের কাছে উপস্থাপন করবেন। ল্যাবের এক্সপার্টদের কাছেও নিয়ে যেতে পারবেন। তখন উনারা মতামত দেবেন যে, বইয়ের লেখার সঙ্গে সেটা মিলে কি না। পিবিআই পরিদর্শক আবু জাফর মোহাম্মদ ওমর ফারুক বলেন, মিতু হত্যা মামলায় জব্দ করা আলামতের মধ্যে একটি বই আছে। ওই বই বাবুল আক্তার তার কথিত বান্ধবীর কাছ থেকে উপহার পেয়েছেন বলে জানা গেছে। ওই বইয়ের তৃতীয় পাতায় কিছু হাতের লেখা আছে। ২৭৬ পৃষ্ঠায়ও কিছু লেখা আছে। এখানে বাবুলের হাতের লেখা আছে কি না, তা পরীক্ষার জন্য নমুনা নিতে আদালতে আবেদন করা হয়েছিল। ম্যাজিস্ট্রেট মহোদয়ের খাস কামরায় আসামির হাতের লেখার নমুনা সংগ্রহ করা হয়। সেখানে ম্যাজিস্ট্রেট মহোদয় নিজেই উপস্থিত থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছেন। কত পৃষ্ঠার হাতের লেখা নেওয়া হয়েছে জানতে চাইলে তিনি তা জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেন। প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে নগরীর পাঁচলাইশ থানার জিইসি মোড়ে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে বাসার অদূরে গুলি ও কুপিয়ে খুন করা হয় বাবুলের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতুকে। স্ত্রী খুনের ঘটনায় বাবুল আক্তার বাদি হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছিলেন। মামলা তদন্তের দায়িত্ব প্রথমে নগর গোয়েন্দা পুলিশ-ডিবি’র কাছে থাকলেও ২০২০ সালের জানুয়ারিতে তদন্তভার পড়ে পিবিআই’র ওপর। গতবছরের ১১ মে বাবুল আক্তারকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পিবিআই। তদন্তে বাবুল আক্তারের সম্পৃক্ততা পাওয়ায় ১২ মে ওই মামলার তার বিরুদ্ধে ৫৭৫ পৃষ্ঠার চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেয় পিবিআই। একইদিন মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন বাদি হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় বাবুল আক্তারসহ আটজনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় মোশাররফ অভিযোগ করেন, বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত এক নারীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কের জেরে বাবুল আক্তার তার স্ত্রীকে হত্যা করে। এই মামলায় ওইদিনই বাবুল আক্তারকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পিবিআই’র দেয়া চার্জশিটের বিষয়ে বাবুল গত বছর আদালতে আপত্তি জানিয়ে অন্য কোন সংস্থার সিনিয়র কর্মকর্তা দিয়ে মিতু হত্যার ঘটনা পুনঃতদন্ত চান। শুনানি শেষে আদালত বাবুলের নারাজি আবেদন নামঞ্জুর করেন। আদালতের নির্দেশে এখন শুধুমাত্র বাবুল আক্তারের দায়ের করা মামলাটির অধিকতর তদন্ত চলছে।
# ২২.০৩.২০২২ চট্টগ্রাম #