চলমান সংবাদ

যুবকের মুখে এসিড নিক্ষেপ, অপরাধীর যাবজ্জীবন কারাদন্ড

চট্টগ্রামে এসিড নিক্ষেপ করে তমাল চন্দ্র দে (৩০) নামে এক তরুণের দুই চোখসহ মুখমন্ডল ঝলসে দেওয়ার মামলায় সুমিত ধর (৩০) নামে এক ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। তবে অভিযোগ প্রমাণ না হওয়ায় দন্ডিত সুমিতের স্ত্রী মৌমিতা দত্ত (২৬)কে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে। রোববার (২৭ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রামের চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ শরীফুল ইসলাম ভূঁইয়া এ রায় দেন। ওই আদালতের অতিরিক্ত পিপি মোহাম্মদ নোমান চৌধুরী জানান, এসিড নিক্ষেপের মামলায় ২৪ জনের সাক্ষীর ভিত্তিতে এসিড নিয়ন্ত্রণ আইনের ৫ ধারায় সুমিত ধরকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরো এক বছরের কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে। তার স্ত্রী মৌমিতা দত্ত এ্যানিকে খালাস দিয়েছেন আদালত। দন্ডিত সুমিত কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার হারবাং গ্রামের দেবব্রত ধরের ছেলে। সুমিত ও তার স্ত্রী উভয়ই বর্তমানে পলাতক আছেন। এসিড নিক্ষেপের শিকার তমাল চট্টগ্রাম ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেডের (সিইউএফএল) কর্মকর্তা বাবুল চন্দ্র দে’র ছেলে। আদালত সূত্র জানায়, ২০১৬ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি নগরীর কোতয়ালি থানার রহমতগঞ্জে গুডস হিলের পাশে তমাল এসিড নিক্ষেপের শিকার হন। ২৩ ফেব্রুয়ারি তার বাবা বাবুল দে বাদী হয়ে সুমিত ধর ও তার স্ত্রী মৌমিতা দত্ত এবং অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজনকে আসামি করে কোতোয়ালি থানায় মামলা দায়ের করেছিলেন। ঘটনার পর সুমিত ও মৌমিতা গ্রেপ্তার এড়াতে ঢাকা চলে যান। ২০১৮ সালের ৩০ মার্চ রাজধানীর ভাটারা থানার ভাড়া বাসা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে চট্টগ্রাম নগর গোয়েন্দা পুলিশ। এসিড নিক্ষেপের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় দায় স্বীকার করে সুমিত আদালতে জবানবন্দি দেন। তবে একবছর পর জামিনে বেরিয়ে দু’জনই পালিয়ে যান। অভিযোগপত্র দায়েরের পর ২০১৯ সালের ২৩ এপ্রিল তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। অভিযোগ প্রমাণে রাষ্ট্রপক্ষ মোট ২৪ জন সাক্ষীকে আদালতে উপস্থাপন করে। মামলার নথিপত্র থেকে জানা গেছে, মৌমিতা ও সুমিত পরিবারের অজ্ঞাতে ২০১৫ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর বিয়ে করে আলাদাভাবে বসবাস শুরু করেছিলেন। তমাল ছিলেন মৌমিতার দূর সম্পর্কের আত্মীয়। সেই সুবাদে বিয়ের কিছুদিন পর মৌমিতা আবার গোপনে তমালের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলেন। তারা বিভিন্ন স্থানে দেখা-সাক্ষাৎও করেন। তমাল এক বছর পর মৌমিতার সঙ্গে সুমিতের সম্পর্কের বিষয়টি জানতে পারেন। এরপর মৌমিতাকে একটি রেস্টুরেন্টে ডেকে নিয়ে যান তমাল। মৌমিতা সেখানে সুমিতের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি স্বীকার করে এবং তাদের কোর্ট ম্যারেজ হয়েছে বলেও জানায়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে মৌমিতাকে চড় মারেন তমাল। এ ঘটনার মাসখানেক পর প্রজাপতির ডানা নামে একটি ফেসবুক আইডি থেকে বন্ধু হওয়ার আমন্ত্রণ পান তমাল। নিয়মিত কথাবার্তার এক পর্যায়ে তাকে ওই আইডি থেকে তমালকে দেখা করার অনুরোধ করা হয়। সাক্ষাতের জন্য গেলে সুমিত তার মুখে এসিড ছুড়ে মারে। এসিডে আক্রান্ত হয়ে তমালের দুই চোখ পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যায়। এছাড়া তার মুখমন্ডলও ঝলসে যায়। # ২৭.০২.২০২২ চট্টগ্রাম #