মতামত

আইন মেনেই বলছি 

-উত্তর পুরুষ

ফুল নিয়ে কত কত গল্প, কবিতা, উপন্যাস যে লেখা হয়েছে তার ইয়ত্তা নাই। ফুল নিশ্চয় জীবনের একটা অংশ। জন্ম হলে ফুল নিয়ে অভিনন্দন, বিয়েতে ফুল, মৃত্যুর পর ফুল দিয়ে শোক প্রকাশ, কোথায় ফুল নেই। ওহ, ফুল তো প্রেম নিবেদনের সময়ও লাগে। প্রেমিক প্রেমিকার হাতে, প্রেমিকা প্রেমিকের হাতে ফুল তুলে দিয়ে  যে আনন্দ পায় তা কি আর বলতে হয়? তা যারা প্রেম করেন সবাই আমার থেকে বেশি জানেন।  ভালবাসা দিবসে তো দোকানে ফুলই পাওয়া যায় না। আরে পাগল, ভালবাসার জন্য আবার দিবস লাগে নাকি ? পাগল কারে বলে।   পুরাই, এডভেঞ্চার, বুঝলেন না, পুরাই এডভেঞ্চার। যাকগে, ভালবাসা দিবস নিয়ে আমার কি বলার আছে, যা বলার আপনারাই বলবেন। আমি বলি কি ফুল ছাড়া তো কোনই কাজ হয় না। এক কবি তো বলেছিলেন- ফুল খেলবার দিন নয় অদ্য/ ধবংসের মুখোমুখি আমরা। বাবা ধংসের মুখোমুখি বলে কি ফুল খেলবো না? কি কথা এটা। বকুল ফুল আর শালুক ফুল বলে তো আজকের দিনের ছেলে মেয়েরা জীবন শেষ করে দিচ্ছে। কি বলে- শালুক ফুলের লাজ নাই/ রাইতের বেলা ফুটে লো । দেখেন তো, কি কথা? 

বাদ দেন  উপরের ফালতু কথাবার্তা । ফুলের কথা বলতেই মনে হল শাহজালাল ইউনিভার্সিটির ছাত্ররা খুব জোর আন্দোলন করছে সেটা তো আপনারা সবাই জানেন। এখন ঘটনাটা কি জানেন, তাদের দমানোর জন্য পুলিশ ডাকা হয়েছে। কে ডাকলেন, নিশ্চয় প্রশাসন। আরে, শিক্ষক  হচ্ছেন অভিভাবক।ছাত্রদের অভিযোগ থাকতেই পারে। সেটা কোন ব্যক্তির বিরুদ্ধে, কোন সিস্টেম এর বিরুদ্ধে । সেটা সমাধান করার পথ কি পুলিশ দিয়ে পিটিয়ে? কি যে বলেন এই সব নতুন নতুন কাহিনী সব। পুলিশ হামলা করলো ছাত্রদের উপর। ছাত্ররা কিন্তু দেখালো কি ভাবে এর প্রতিবাদ করতে হয়। তারা পুলিশের সামনে হাটু গেড়ে বসে ফুল নিয়ে বললো – ভাই পুলিশ আমাদের ঘরের সমস্যায় আপনারা কেনো? যান আপনারা ফিরে যান, আমরা সমস্যার সমাধান করবো। আরে ভাই, এই সব কর্ম তো পাকিস্তানিরা করতো, দেশ স্বাধীন হওয়ার আগে। আর কে করত? স্বৈর শাসকরা দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে। এখন কেন এগুলো হচ্ছে? দেশে কি কথা বলার লোক নাই ? আমরা কি স্বৈর- শাসকের হাতে আছি এখন? জানি নারে ভাই জানি না। কি হচ্ছে এই সব বুঝি না। তবে আমরা তো ৫২, ৬২, ৬৯ দেখেছি। ৯০ ও দেখেছি। ছাত্ররা একবার যদি জেগে উঠে তাহলে পরিস্থিতি কোনদিকে যায়, তা উনারাই  জানেন। মানে ঐ সময় যারা দেশের ক্ষমতায় ছিলেন তারা। 

থাক থাক, যতোসব ছোট মুখে বড় কথা। ইউনিভার্সিটি যারা চালান, তাঁরা সব জ্ঞানী-গুনী পন্ডিত জন। আমার মত মুখ্যু- সুখ্যু তো আর না। উনারা নিশ্চয় ছাত্রদের কথা শুনবেন, বলবেন -আসো তোমাদের কথা শুনি। সবাই মিলে একসাথে কাজ করি। কি বলেন- এইভাবে বলা যায় না? 

আসেন না দেশের বিষয়ে সবাই সহনশীল হই। আমরা সরকারে থাকি  বা ইউনিভার্সিটির প্রশাসনের থাকি আমাদের দায়িত্ব তো অনেক বেশি। আমাদের দিকেই তো পুরা জাতি তাকিয়ে আছে। তারা কি ভাবছে বলেন তো। ছাত্রদের পুলিশ দিয়ে তার শিক্ষকরা পিটাচ্ছে। এ কেমন কথা ? পরিবারে অশান্তি হয় না? বাবা কি বাইরের লোক ডেকে সমাধান করেন নাকি নিজে করেন? 

অনেক কথাই বলেছি। বেশি কথা না বলাই ভাল। তবে শেষ করার আগে আর একটি কথা বলি। তা হচ্ছে দেশে করোনার সংক্রমণ বাড়ছে। বছরের প্রথম দিন থেকে পরবর্তী ১২ দিনের মাথায় আক্রান্তের সংখ্যা এক হাজার থেকে আট হাজারে পৌঁছে গেছে। কাজেই সবাই একটু সাবধানে থাকেন। কিছুদিন না হয় মুখ বন্ধ রাখলেন। বেশি মানুষের মধ্যে না গেলেন।  সুস্থ থাকেন।