চলমান সংবাদ

তেলের ট্যাংকারের ভেতর কম্বল মোড়ানো ট্যাংকলরির চালকের সহকারীর মরদেহ

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সীতাকুন্ডে তেলের ট্যাংকারের ভেতরে কম্বল মোড়ানো এক যুবকের মরদেহ পেয়েছে পুলিশ। নুরুল ইসলাম শাহীন (২২) নামে নিহত ওই যুবক তেলবাহী ওই ট্যাংকলরির চালকের সহকারী। নিজের চালানো তেলের লরি চাপায় আহত সহকারীকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে মৃত্যু হলে বিপদে পড়ার আশঙ্কায় চালক লাশ কম্বলে মুড়িয়ে গাড়িতে রেখে পালিয়ে গেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। শনিবার (১৫ জানুয়ারি) গভীর রাতে সীতাকুন্ড পৌরসভার বটতল এলাকায় ‘সীতাকুন্ড ফিলিং স্টেশনের’ সামনে রাখা ট্যাংকলরি থেকে নিহত যুবকের মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। সীতাকুন্ড থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুমন বণিক জানান, শনিবার রাত ১১টার দিকে একটি নম্বর থেকে ফোন করে ফিলিং স্টেশনের ব্যবস্থাপককে তথ্য দেওয়া যে, ফিলিং স্টেশনের সামনে পার্কিং করা লরির ভেতরে লাশ আছে। ব্যবস্থাপকের কাছ থেকে সেই তথ্য পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লরির ভেতর থেকে কম্বল পেঁচানো অবস্থায় মরদেহটি উদ্ধার করে। লাশ উদ্ধারের সময় আমরা মাথায় রক্তাক্ত জখম পেয়েছি। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এটি দুর্ঘটনা। শাহীন লরির পেছনে ছিল। চালক হঠাৎ গাড়ি স্টার্ট দিলে সে পেছন থেকে পড়ে গিয়ে মাথায় আঘাত পায়। গাড়ির চাকার সঙ্গে রক্তের দাগ দেখা গেছে। আসলে দুর্ঘটনার পর বিপদে পড়ার আশঙ্কায় হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে চালক লরি চালক বাবুল মরদেহটি ফেলে পালিয়ে গেছে বলে আমাদের ধারণা। নিহতের স্বজনদের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, লরি চালক শাহীনের স্বজনদের ফোন করে জানায়, কুমিরা এলাকায় শাহীন প্রশ্রাব করতে গাড়ি থেকে নামেন। সেসময় সে গাড়ির পেছনে দাঁড়িয়ে থাকলেও চালক বুঝতে পারেনি। গাড়ি স্টার্ট দিলে ধাক্কা খেয়ে শাহীন পেছনের চাকার নিচে চাপা পড়ে। আহত অবস্থায় চালক তাকে নিয়ে হাসপাতালের দিকে রওনা হলে পথেই মারা যায়। ওসি (তদন্ত) সুমন জানান, পরবর্তীতে স্বজনদের ফোন করে চালক গাড়ি ঘুরিয়ে সোনাগাজীতে শাহীনের বাড়িতে নিয়ে যেতে চাইলে স্বজনরা থানায় নিয়ে যেতে বলেন। স্বজনরা লাশ থানায় নিতে বললে চালক থানায় না নিয়ে বটতল এলাকায় ফিলিং স্টেশনের সামনে গাড়ি রেখে চলে যান এবং বিষয়টি শাহীনের পরিবারকে জানিয়ে দেন। পুলিশ কর্মকর্তা সুমন বণিক জানান, নিহত নুরুল ইসলাম শাহীনের বাড়ি ফেনীর সোনাগাজী উপজেলায়। শাহীনের পরিবারের সদস্যরাও তেলের লরি চালানোর সঙ্গে জড়িত। যে কারণে তাদের কাছে ফিলিং স্টেশনের ব্যবস্থাপকের ফোন নম্বর ছিল। বিষয়টি তারা ব্যবস্থাপককে জানালে তিনি পুলিশকে জানান। এ ঘটনায় ট্যাংকারবাহী ট্রাকটি জব্দ করা হয়েছে। তবে চালক পলাতক। লরিচালক মো. বাবুলকে (৫০) আটকের চেষ্টা চলছে। হাইওয়ে পুলিশ কুমিরা ফাঁড়ির পরিদর্শক মো. আব্দুল্লাহ বলেন, আমরাও প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছি যে, এটি আসলেই একটি দুর্ঘটনা। আমরা দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যুর একটি মামলাও দায়ের করছি। তবে যেহেতু চালক পলাতক আছে, তাকে ধরার চেষ্টা চলছে, তাকে পাওয়া গেলে যদি ভিন্ন কোনো তথ্য পাওয়া যায়, তখন সে অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সীতাকুন্ড থানা পুলিশ আমাদের কাছে নিহতের মরদেহ হস্তান্তর করেন। রোববার সকালে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহটি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
# ১৬.০১.২০২২ চট্টগ্রাম #