চলমান সংবাদ

জাহাজভাঙা শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন ফোরামের মে দিবসের সভায় বক্তারা

-স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মানে স্মার্ট শ্রমিকের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে

জাহাজভাঙা শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন ফোরামের মে দিবসের সমাবেশে বক্তব্য রাখছেন সংগঠনের আহ্বায়ক তপন দত্ত

গত্যকাল বিকাল সাড়ে ৩টায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব প্রাঙ্গণে মহান মে দিবস উপলক্ষে জাহাজভাঙা শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন ফোরামের এক মানববন্ধন, সমাবেশ ও র‍্যালি অনুষ্ঠিত হয়। ফোরামের সভাপতি শ্রমিকনেতা তপন দত্তের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব ফজলুল কবির মিন্টুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত উক্ত মানববন্ধন ও সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, ফোরামের যুগ্ম আহ্বায়ক এবং জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিটির সভাপতি এ এম নাজিম উদ্দিন, জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক শ ম জামাল, জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশনের  সাধারণ সম্পাদক দিদারুল আলম চৌধুরী, বাংলাদেশ লেবার ফেডারেশনের সাংগঠনিক সম্পাদক রবিউল হক শিমুল, বাংলাদেশ মেটাল ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের যুগ্ম সম্পাদক মোঃ আলী, বাংলাদেশ মুক্ত শ্রমিক ফেডারেশনের যুগ্ম সম্পাদক মোঃ ইদ্রিছ, বাংলাদেশ ফ্রি ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেস এর সাধারণ সম্পাদক কে এম শহিদুল্লাহ, বাংলাদেশ লেবার ফেডারেশনের চট্টগ্রাম মহানগর সাধারণ সম্পাদক আবু আহমেদ মিয়া, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের নেতা মোঃ মানিক মণ্ডল, জাতীয় শ্রমিক লীগনেতা মোঃ সোলায়মান, জাহাজভাঙা শ্রমিক মোঃ শহীদ এবং মাহাবুব ভাণ্ডারী প্রমুখ।

সভায় বক্তারা বলেন, মে দিবসের প্রধান দাবি ছিল কর্মক্ষেত্রে দৈনিক ৮ ঘন্টা শ্রম প্রতিষ্ঠা করা। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) মে দিবসে উত্থাপিত প্রধান দাবি অনুযায়ী দৈনিক ৮ ঘন্টা শ্রমকে তাদের ১ নং কনভেনশন হিসাবে গ্রহণ করে। তারই ধারাবাহিকতায় পৃথিবীর দেশে দেশে দৈনিক ৮ ঘণ্টা শ্রম প্রতিষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ শ্রম আইনে দৈনিক ৮ ঘন্টা শ্রমের বিষয়টি যুক্ত করা হলেও জাহাজভাঙা সেক্টরসহ সমগ্র বাংলাদেশের বাস্তব চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। এখানে শ্রমিকেরা এত কম মজুরি পায় যে, তা দিয়ে জীবনধারণ করা একেবারেই অসম্ভব। এই সুযোগটাকে কাজে লাগিয়ে মালিকপক্ষ শ্রমিকদেরকে অতিরিক্ত কাজ করতে বাধ্য করে অন্যদিকে শ্রমিকরাও তাদের প্রয়োজনীয় খরচের ঘাটতি মেটানোর জন্য অতিরিক্ত কাজ করতে আগ্রহী হয় –যা মে দিবিসের চেতনার সাথে সাংঘর্ষিক।

নেতৃবৃন্দ বলেন,  দৈনিক ৮ ঘন্টা শ্রমের বিনিময়ে জীবনধারণ উপযোগী মজুরি নিশ্চিত করা না গেলে, দৈনিক ৮ ঘন্টা শ্রম কখনোই বাস্তবায়ন হবে না। তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলে জাহাজভাঙা শ্রমিকদের জন্য ২০১৮ সালে ঘোষিত নিম্নতম মজুরি আজও বাস্তবায়িত হয়নি। ইতোমধ্যে নিম্নতম মজুরি ঘোষণার সময়কাল ৫ বৎসর অতিক্রান্ত হওয়ায় শ্রম আইন অনুযায়ী নতুন করে নিম্নতম মজুরি ঘোষনা আবশ্যক হলেও সরকার এবং মালিকপক্ষ সেই ব্যাপারেও নীরব ভূমিকা পালন করছে।

এবারের মে দিবসের প্রতিপাদ্য ছিল “শ্রমিক-মালিক গড়বো দেশ, স্মার্ট হবে বাংলাদেশ”  উল্লেখ করে শ্রমিকনেতারা বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে হলে স্মার্ট শ্রমিক প্রয়োজন এবং স্মার্ট মজুরি ছাড়া স্মার্ট শ্রমিক পাওয়া যাবে না। সুতরাং প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মান করতে হলে শ্রমিকদের স্মার্ট মজুরি দিতে হবে।  অন্যথায়” স্মার্ট বাংলাদেশ” প্রতিষ্ঠা একটি অন্তঃসারশূন্য শ্লোগানে পরিনত হবে। সমাবেশ থেকে জাহাজভাঙা শ্রমিকদের অবিলম্বে ন্যায্যমূল্যে রেশনিং ব্যবস্থা চালু করার জোর দাবি জানানো হয়।

মানববন্ধন ও সমাবেশ শেষে লাল ছাতা সম্বলিত জাহাজভাঙা শ্রমিকদের এক বিশাল র‍্যালি নগরীর মূল মূল সড়ক সমূহ প্রদক্ষিণ শেষে আন্দরকিল্লা মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।