চলমান সংবাদ

চট্টগ্রামে ক্রমেই করোনার সংক্রমণ বাড়ছে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে হাসপাতালে রোগী সংখ্যাও

চট্টগ্রামে করোনার সংক্রমণ ক্রমেই বেড়ে চলেছে। সর্বশেষ নতুন করে আরও ১০৪ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। সংক্রমণ হার ছিল ৫ দশমিক ৮৯ শতাংশ। চট্টগ্রামে সাড়ে তিন মাস পর ২৪ ঘণ্টায় ১০০ জনের বেশি করোনায় আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হলো। গত এক সপ্তাহে চট্টগ্রামে করোনার সংক্রমণ পুরোনো সেই রূপে ফিরে যাচ্ছে। এদিকে সংক্রমণের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে হাসপাতালে বাড়ছে রোগী সংখ্যাও। রোববার (৯ জানুয়ারি) চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে প্রকাশিত করোনা সংক্রান্ত সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে ১ হাজার ১৭৬৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে ১০৪ জনের করোনা পজেটিভ আসে। ২৪ ঘণ্টায় করোনা শনাক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে নগরীর ৮৮ জন এবং উপজেলার ১৬ জন। শনাক্তের হার ৫ দশমিক ৮৯ শতাংশ। এই সময়ে করোনায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। এর আগে, গত বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর করোনায় আক্রান্ত হিসেবে ১১২ জন শনাক্ত হয়েছিল। এরপর গত তিন মাস ২৩ দিনে প্রতিদিন শনাক্তের সংখ্যা ১০০ জনের কম ছিল। সরকারি হিসাব অনুসারে, চট্টগ্রামে এখন পর্যন্ত করোনায় সংক্রমিত হয়ে মারা গেছেন ১ হাজার ৩৩৪ জন। জেলায় করোনা শনাক্ত হয়েছে মোট ১ লাখ ৩ হাজার ৮৪ জনের। সিভিল কার্যালয়ের প্রতিবেদন বিশ্লেষন করে দেখা গেছে, গত বছরের নভেম্বরে করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে ১৫৭ জন এবং ডিসেম্বরে এই সংখ্যা ছিল ২২৫ জনে। তবে চলতি বছরের প্রথম মাসের আটদিইেন সেই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৪৭ জনে। বছরের শুরু থেকেই প্রতিদিন করোনা শনাক্তের সংখ্যা আগের দিনের রেকর্ড ভাঙছে। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছিলেন, জানুয়ারি শেষ থেকে মার্চ পর্যন্ত করোনার সংক্রমণ দ্বিগুণ-তিনগুণ হারে বাড়বে। অথচ তার আগেই সংক্রমণের হার বেড়েই চলেছে। তাই করোনার তৃতীয় ঢেউ মোকাবিলায় এখনই কঠোর বিধিনিষেধের ওপর গুরুত্ব দিতে বলেছেন বিশেষজ্ঞরা। চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের উপ-পরিচালক ও তত্ত্বাবধায়ক ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, আমরা স্বাস্থ্যবিধি মানছি না। ওমিক্রন বা নতুন যে ভ্যারিয়েন্ট আসছে বা যেগুলো সামনে আসবে সেগুলো একজনের হলে সঙ্গে সঙ্গে বাড়ির সবার হয়ে যাবে। মানে যেটা হচ্ছে খুবই সংক্রামক। তবে আতঙ্কিত হবার কিছু নেই। মানুষজন ভ্যাক্সিন দিবে, সার্বক্ষণিক মাস্ক ব্যবহার করবে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবে। সেই সঙ্গে জনসমাগম কমাতে হবে। পাশাপাশি যে নীতিমালাগুলো দেওয়া হয়েছে, সেসব মানতে হবে। না হলে সংক্রমণ হু হু করে বাড়বে।’ হাসপাতাগুলোতে সংক্রমণ মোকাবেলায় প্রস্তুতি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. ইলিয়াস চৌধুরী বলেন, ‘করোনার নতুন ধরন বা তৃতীয় ঢেউ মোকাবেলায় হাসপাতালগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে। নগরের সব সরকারি হাসপাতাল ছাড়াও উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতালগুলোতেও যথেষ্ট প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। সংক্রমণরোধে সরকারের পক্ষ থেকে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা সকলকে মানতে হবে। চমেক হাসপাতালের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ডা. আফতাবুল ইসলাম বলেন, আগে থেকে তুলনামূলকভাবে হাসপাতালে রোগী ভর্তি বাড়ছে। কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। প্রসঙ্গত ২০২০ সালের ৩ এপ্রিল চট্টগ্রামে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। ওই বছরের ৯ এপ্রিল করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রথম একজন মারা যান।

# ০৯.০১.২০২২ চট্টগ্রাম #