চলমান সংবাদ

স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়ে বিতর্ক শুনলে জিয়াউর রহমান নিজেই লজ্জা পেতেন- স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

একাত্তরে চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতারকেন্দ্র থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়ে বিতর্ক ও সত্যের অপলাপ শুনলে জিয়াউর রহমান নিজেই লজ্জা পেতেন বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। গতকাল বুধবার (২৯ ডিসেম্বর) বিকেলে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষ উপলক্ষে চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী-চান্দগাঁও) আসনের আওতাধীন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই মন্তব্য করেন। একাত্তরে স্বাধীনতার ঘোষণা প্রচার হয়েছিল যে বেতার কেন্দ্র থেকে, নগরীর চান্দগাঁওয়ে সেই বেতারকেন্দ্রের সামনে এই সভার আয়োজন করা হয়। সভায় অপারেশন সার্চলাইটের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘গভীর রাতে হঠাৎ আক্রমণ। গুলি চলছিল। নৃশংস হত্যাযজ্ঞ। আমরা তখন কিংকর্তব্যবিমূঢ়, কি করবো আমরা, কোথায় যাব? তখন বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে বেতারের মাধ্যমে দেওয়া হান্নান ভাইয়ের (এম এ হান্নান) স্বাধীনতার ঘোষণা শুনেছিলাম। আমরা দেশের জনগণ ঘুরে দাঁড়িয়েছিলাম হান্নান ভাইয়ের সেই আহ্বানে।’ জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এরপর এই চট্টগ্রামের যারা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বস্থানীয় ছিলেন, মোশাররফ ভাই (ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন) এখনও বেঁচে আছেন, তারা একত্রিত হয়ে সিদ্ধান্ত নিলেন যে- এই যে যুদ্ধ চলছে, ঘোষণা দেওয়ার জন্য একজন আর্মির অফিসার দরকার। তখন ক্যাপ্টেন রফিক চট্টগ্রামে যুদ্ধ মোকাবেলা করে যাচ্ছিলেন, তাকে আহ্বান করা হয়েছিল। কিন্তু যুদ্ধে থাকায় তিনি আসেননি। ২৭ তারিখ দুপুরে হঠাৎ আমি বেতারে শুনলাম মেজর জিয়ার আহ্বান। প্রথমে তিনি নিজেকে অনেককিছু বলেছেন, পরে অবশ্য সংশোধন করে বঙ্গবন্ধুর নামে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন। এটাই হল সত্যিকারের ঘটনা।’ তিনি বলেন, ‘কিন্তু পরে এটাকে বিকৃত করে কতভাবে যে ব্যবহার করা হয়েছে, সত্যের অপলাপ করা হয়েছে, জিয়াউর রহমান যদি ফিরে আসতেন তাহলে তিনি শুনে নিজেই লজ্জা পেতেন। কারণ জীবিত অবস্থায় এ ধরনের উচ্চবাচ্য তিনি কখনও করেননি। তার মৃত্যুর পর আমরা অনেককিছু দেখেছি, অনেককিছু শুনেছি, অনেককিছু সহ্য করেছি’। সভা শেষে কক্সবাজারে নারীকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘কক্সবাজারের ঘটনায় মামলা রেকর্ড হয়েছে, এটা তদন্তাধীন আছে। তদন্তাধীন কোনো মামলায় আমরা মন্তব্য করতে পারি না। তদন্তের পরে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়া প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর বিষয়ে আইনমন্ত্রী তার নথিতে বলেছেন, আইনে এর কোনো সুযোগ নেই। কাজেই আমরা এখন আর এটা নিয়ে কিছু করতে পারছি না।’ চট্টগ্রাম-৮ আসনের সাংসদ ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন, নগর কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী এবং নগর মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাসিনা মহিউদ্দিন। সঞ্চালনা করেন নগর কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ।
# ৩০.১২.২০২১ চট্টগ্রাম #