চলমান সংবাদ

চট্টগ্রামসহ সারাদেশের শহরে শিক্ষার্থীদের হাফ ভাড়া কার্যকর হবে শনিবার থেকে সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

 শিক্ষার্থীদের টানা আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার পর চট্টগ্রামসহ সারাদেশে শহরে গণপরিবহনে শিক্ষার্থীদের জন্য হাফ ভাড়া কার্যকরের ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি। আগামী ১১ ডিসেম্বর থেকে মেট্রোপলিটনসহ দেশের সব শহরেই শিক্ষার্থীদের জন্য হাফ পাস কার্যকর হবে। রোববার চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন সমিতির কেন্দ্রীয় মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ। তিনি বলেন, সরকারি ছুটির দিন ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটির দিন ব্যতীত এ নিয়ম চলবে। সকাল ৭টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা এ সুবিধা পাবেন। শিক্ষার্থীদের ইউনিফর্ম ও ছবিযুক্ত পরিচয়পত্র প্রদর্শন করতে হবে। যেসব শহরে সিটি সার্ভিস চালু আছে, সেখানে এটা কার্যকর হবে। উপজেলা বা দূরপাল্লার রুটে এ নিয়ম চলবে না। শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি সম্মান জানিয়ে হাফ ভাড়া কার্যকর করেছি। সুতরাং তারা তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফিরে যাবে বলে আশা করছি। এদিকে শর্তদিয়ে সড়ক ও পরিবহন মালিক সমিতির অর্ধেক ভাড়া কার্যকরের ঘোষণা প্রত্যাখান করেছে শিক্ষার্থীরা। একইসঙ্গে শিক্ষার্থীদের ৯ দফা সরকারকে প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে মেনে নেওয়ার দাবি জানিয়েছে তারা। রোববার (৫ ডিসেম্বর) সকালে নগরের ওয়ার্লেস মোড়ে চট্টগ্রামের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে শর্তসাপেক্ষে হাফ ভাড়া প্রত্যাখ্যান ও শিক্ষার্থী সাতরাজ হত্যার বিচারের দাবিতে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল থেকে শিক্ষার্থীরা পরিবহন মালিক সমিতির সিদ্ধান্ত প্রত্যাখান করে এ দাবি জানান। হাফ ভাড়া চাই, চট্টগ্রামের আন্দোলনকর্মী শিক্ষার্থী অবিধা ফাইরুজ বলেন, ‘আমরা মালিক সমিতির কাছে দাবি জানাইনি, আর শুধু মেট্রোপলিটন এলাকাতেও হাফ ভাড়া চাইনি। আমরা সারাদেশে প্রজ্ঞাপন জারির মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের গণপরিবহনে হাফ পাসের দাবি জানিয়েছি। আমরা মালিক সমিতির এ ঘোষণা প্রত্যাখান করি। একই সমাবেশে পাহড়তলী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের শিক্ষার্থী ওয়াহিদুল রনি বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছর পেরিয়ে গেলেও প্রতিনিয়ত শিক্ষার্থীদের রাস্তায় মরতে হচ্ছে। আমরা সড়কে আর কোন হত্যাকান্ড চাইনা। অবিলম্বে ছাত্রদের ৯ দফা দাবি মেনে নিয়ে নিরাপদ সড়ক বাস্তবায়নে সড়কে উদ্যোগী হতে হবে। হাফ ভাড়া চাই, চট্টগ্রামের আন্দোলনকর্মী সাইফুর রুদ্র বলেন, পাহাড়তলী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের শিক্ষার্থী সাতরাজ হত্যায় জড়িত সকলকে অবিলম্বে গ্রেপ্তারপূর্বক বিচারের আওতায় নিয়ে আসতে হবে এবং পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। একইসাথে হাফ পাস ও নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের দাবিতে ছাত্রদের ৯ দফা দাবি সরকারকে প্রজ্ঞাপন জারির মধ্য দিয়ে মেনে নিতে হবে। সড়ক পরিবহন নেতা এনায়েত উল্যাহ বলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীদের হাফ ভাড়ার দাবি শহরগুলোতে মেনে নিয়েছি। শহরের বাইরে উপজেলায়, গ্রামগঞ্জে এবং দূরপাল্লার যানবাহনে শিক্ষার্থীরা এ সুযোগ পাবেন না। এই দাবি আমাদের পক্ষে মানা সম্ভব নয়। গ্রামগঞ্জের যানবাহনের বিষয়ে আমরা এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নিইনি। এটি আমরা বৈষম্য বলে মনে করছি না। সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সহ-সভাপতি কফিল উদ্দিন, চট্টগ্রাম সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের সভাপতি খোরশেদ আলম, মহাসচিব গোলাম রসুল বাবুল, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পরিবহন মালিক গ্রুপের সভাপতি বেলায়েত হোসেন বেলাল, মহাসচিব মো. জিয়াউদ্দিন শরীফ মিজান, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি মৃণাল চৌধুরী, একই সংগঠনের চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি মোহাম্মদ মুসা ও সাধারণ সম্পাদক অলি আহমদ উপস্থিত ছিলেন।
# ০৫.১২.২০২১ চট্টগ্রাম #