চলমান সংবাদ

এসএসসি পরীক্ষা শুরু চট্টগ্রামে কেন্দ্রের বাইরে অভিভাবকদের ভিড়

মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষায় চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের অধীনে এ বছর ১৭ হাজার ৩২ জন পরীক্ষার্থী বেড়েছে। পাশাপাশি বেড়েছে স্কুল ও কেন্দ্রর সংখ্যাও। এবছর চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের অধীনে ২০৪টি কেন্দ্রে ১ হাজার ৭৭টি প্রতিষ্ঠানের মোট ১ লাখ ৬১ হাজার ১২২ জন পরীক্ষার্থী এ পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। যেখানে গতবছর ছিল ১৯৬টি কেন্দ্রে ১ হাজার ৪৮টি প্রতিষ্ঠানের মোট ১ লাখ ৪৪ হাজার ৯০ জন পরীক্ষার্থী। এদিকে করোনা কারণে এবারের পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি মেনে। পরীক্ষাকেন্দ্রে সব ধরনের স্বাস্থ্যবিধি মানা হলেও বাইরে অভিভাবকদের জটলা দেখা গেছে। পরীক্ষা শেষে কে কার আগে গেইটের কাছে ছুটে যাবেন তার প্রতিযোগিতা লক্ষ্য করা গেছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে কেন্দ্রের সামনে অভিভাবকদের ভিড় না করার এবং একজন পরীক্ষার্থীর সাথে একজনের বেশি অভিভাবক না আসারও নির্দেশ দেয়া হলেও নগরের পরীক্ষাকেন্দ্রগুলোর সামনে অভিভাবকদের প্রচন্ড ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। অনেকের মুখে ছিল না মাস্কও। সামাজিক দূরত্বের কোন বালাই ছিল না। প্রায় প্রতিটি পরীক্ষা কেন্দ্রের সামনে অভিভাবকদের জটলা দেখা গেছে। রোববার (১৪ নভেম্বর) পরীক্ষা শুরুর আগ থেকেই নগরের বিভিন্ন পরীক্ষা কেন্দ্রের সামনে অভিভাবকদের ভিড় না করতে পুলিশ অনুরোধ জানালেও তাতে কাজ হয়নি। চট্টগ্রাম বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নারায়ণ চন্দ্র নাথ বলেন, এবার করোনা ঝুঁকি এড়াতে পরীক্ষার্থীদের আসন বিন্যাসের ক্ষেত্রে ইংরেজি বর্ণ জেড আকারে সিট সাজিয়েছি। প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে বোর্ড থেকে সর্বোচ্চ সর্তকতা রয়েছে। পরীক্ষা সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে সম্পন্ন করতে ১২টি বিশেষ ভিজিল্যান্স টিম দায়িত্ব পালন করছে।’ কেন্দ্রের বাইরে অভিভাবকদের জটলা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড চট্টগ্রামের চেয়ারম্যান অধ্যাপক প্রদীপ চক্রবর্তী বলেন, পরীক্ষা শুরুর আগে আমরা যখন বিভিন্ন কেন্দ্র পরিদর্শনে গিয়েছি তখন অভিভাবকদের বুঝিয়েছি- যাতে তারা এভাবে পরীক্ষা কেন্দ্রের সামনে জটলা না করে। তারা যদি এভাবে ভিড় জমায়, তাহলে সংক্রমণের শঙ্কা থেকে যায়। জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনও তাদেরকে বুঝিয়েছে। পরের পরীক্ষায় আমরা আরও কঠোর হবো। বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক ড. বিপ্লব গাঙ্গুলী বলেন, পরীক্ষার শেষ হওয়ার পর অভিভাবকদের আর নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি। অভিভাবকরা যদি সচেতন না হয়, সেক্ষেত্রে সবাইকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব না। পরীক্ষাকেন্দ্রের পরিবেশ ঠিক রাখতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও জেলা প্রশাসনে কাজ করছে। চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ড সূত্রে জানা যায়, এবার অংশ নেয়া মোট ১ লাখ ৬১ হাজার ১২২ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ছাত্র ৭৫ হাজার ২৫৩ জন এবং ছাত্রী ৮৫ হাজার ৮৬৯ জন। গতবারের মত এবারেও ছাত্রের চেয়ে ছাত্রী পরীক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি। পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে বাড়ানো হয়েছে কেন্দ্রের সংখ্যা। এছাড়া এবারেও এসএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে। বিজ্ঞান বিভাগে ৩১ হাজার ৭৩ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১৫ হাজার ৭১৭ জন ছাত্র ও ১৫ হাজার ৩৫৬ জন ছাত্রী। অন্যদিকে, মানবিক এবং ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের পরীক্ষার্থীর সংখ্যা গতবারের চেয়ে বেড়েছে। মানবিক বিভাগ থেকে ২৩ হাজার ২২৬ জন ছাত্র ও ৪২ হাজার ২০ জন ছাত্রীসহ মোট ৬৫ হাজার ২৪৬ জন পরীক্ষার্থী। ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে ৩৬ হাজার ৩১০ জন ছাত্র ও ২৮ হাজার ৪৯৩ জন ছাত্রীসহ মোট ৬৪ হাজার ৮০৩ জন পরীক্ষার্থী। মহানগরসহ চট্টগ্রাম জেলায় এবার ১১২টি কেন্দ্রে ৭১০টি প্রতিষ্ঠানের ১ লাখ ৯ হাজার ৯৪৭ জন পরীক্ষার্থী এ পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। এরমধ্যে ছাত্র ৫০ হাজার ৯৪১ জন এবং ছাত্রী ৫৯ হাজার ৬ জন। কক্সবাজার জেলায় মোট ২৮টি কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে ২৫ হাজার ৯৩৭ জন পরীক্ষার্থী। রাঙ্গামাটি জেলায় ২০টি কেন্দ্রে ৯ হাজার ৩৭২ জন, খাগড়াছড়ির ২২ টি কেন্দ্রে ১০ হাজার ৬৩৭ জন, বান্দরবানের ১২টি কেন্দ্রে ৫ হাজার ২২৯ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিচ্ছে। চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মু. মাহমুদ উলাøহ মারুফ বলেন, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন থেকে মহানগরসহ চট্টগ্রামের বিভিন্ন কেন্দ্রে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হয়েছে। শুধু নগরে ১১ জন ম্যাজিস্ট্রেট পরীক্ষারকেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করছের। বোর্ডের নির্দেশনা অনুযায়ী পরীক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যবিধি যথাযথও নিশ্চিত করা হয়েছে। তবে কেন্দ্রের বাইরে অভিভাবকদের জটলা না করতে আমরা সচেতনতা বাড়ানোর চেষ্টা করেছি।
# ১৪.১১.২০২১ চট্টগ্রাম #