চলমান সংবাদ

এসকে সিনহা: সাবেক প্রধান বিচারপতিকে ঢাকার আদালতে ১১ বছরের কারাদণ্ড

 

ঋণ জালিয়াতি এবং অর্থ পাচারের মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহাকে ১১ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। এর মধ্যে ঋণ জালিয়াতির মামলায় চার বছর এবং অর্থ পাচারের মামলায় সাত বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক শেখ নাজমুল আলম এ রায় ঘোষণা করেন। তৎকালীন ফারমার্স ব্যাংক (বর্তমানে পদ্মা ব্যাংক) থেকে চার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাতের মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাসহ ১১ জন আসামির আটজনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয়েছে। বাকি দুইজনকে খালাস দেয়া হয়েছে। রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক উল্লেখ করেছেন, তৎকালীন ফারমার্স ব্যাংক নেয়া থেকে ঋণের টাকা অবৈধভাবে মি. সিনহার অ্যাকাউন্টে স্থানান্তরিত হয়েছিল। এর আগে গত ৫ই অক্টোবরে রায় ঘোষণার দিন ধার্য ছিল। বিচারক ছুটিতে থাকায় তখন তারিখ পিছিয়ে রায় ঘোষণার জন্য পরবর্তী তারিখ ২১শে অক্টোবর ধার্য করা হয়।

সুরেন্দ্র কুমার সিনহার বইয়ের প্রচ্ছদ
এসকে সিনহা’র লেখা বইয়ের প্রচ্ছদ

কিন্তু ২১শে অক্টোবরেও রায় ঘোষণা হয়নি। কারণ হিসেবে জানানো হয় রায় প্রস্তুত না হওয়ায় বিচারক নতুন তারিখ দিয়েছেন। এর আগে ২০২০ সালের ৫ই জানুয়ারি তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে ঢাকার একটি আদালত। সরকারের সঙ্গে প্রচণ্ড মতবিরোধের জের ধরে ২০১৭ সালে দেশ ছেড়ে বিদেশে গিয়ে প্রধান বিচারপতির পদ থেকে পদত্যাগ করেছিলেন মিস্টার সিনহা। প্রথমে কিছুদিন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করে পরে কানাডায় বসবাস করতে শুরু করেন তিনি। বিদেশে বসে এসকে সিনহা নিজের জীবন ও কর্ম নিয়ে ‘এ ব্রোকেন ড্রিম’ নামে একটি বই লেখেন মি. সিনহা, যেটা নিয়ে বেশ বিতর্ক হয়েছে। এর আগে ২০১৯ সালের ৯ই ডিসেম্বর বিচারপতি সিনহাসহ এগার জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দাখিল করেছিলো দুর্নীতি দমন কমিশন। অভিযোগপত্রে বলা হয়েছিলো, ‘আসামীরা পরস্পর যোগসাজশে অসৎ উদ্দেশ্যে ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে প্রভাব বিস্তার করে নিজেরা লাভবান হয়ে এবং অন্যদের লাভবান করে অবৈধভাবে ভুয়া ঋণ সৃষ্টির মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তর করে নগদে উত্তোলন ও পে-অর্ডারের মাধ্যমে গোপনে পাচার করেছেন’। অভিযোগপত্রে আরো যাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছিলো তারা হলেন:

  • ফারমার্স ব্যাংকের অডিট কমিটির চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক চিশতী ওরফে বাবুল চিশত
  • সাবেক এমডি এ কে এম শামীম
  • সাবেক এসইভিপি গাজী সালাহউদ্দিন
  • ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট স্বপন কুমার রায়
  • ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট সাফিউদ্দিন আসকারী
  • ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ লুৎফুল হক
  • টাঙ্গাইলের বাসিন্দা মোহাম্মদ শাহজাহান
  • সেখানকার বাসিন্দা নিরঞ্জন চন্দ্র সাহা
  • রনজিৎ চন্দ্র সাহা এবং তার স্ত্রী সান্ত্রী রায়।

এদের মধ্যে মাহবুবুল হক চিশতী কারাগারে রয়েছেন। তার আগে এস কে সিনহার ব্যাংক হিসাবের চার কোটি টাকা জব্দ করা হয়। এ মামলায় সাক্ষী দিয়েছেন ২১ জন। ২০১৯ সালের ১০ জুলাই এস কে সিনহাসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন দুদক। মামলার বাদী দুদকের পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন। আসামিদের বিরুদ্ধে ঋণ জালিয়াতি ও চার কোটি টাকা আত্মসাতে জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়।

সূত্রঃ বিবিসি বাংলা