নবজাতক বিক্রির অভিযোগে নানিসহ গ্রেপ্তার ৩
টাকার বিনিময়ে নবজাতককে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগে নানিসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল থেকে চার দিন বয়সী ওই শিশুকে বিক্রি করে দিয়ে চুরির নাটক সাজিয়েছিলেন শিশুটির নানি। পরে শিশুটির মা বিষয়টি থানায় অবহিত করলে পুলিশের অভিযানে চুরির নাটক ফাঁস হয়। বুধবার (৬ অক্টোবর) চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার ফতেয়াবাদ এলাকা থেকে নবজাতককে উদ্ধারের পাশাপাশি তিনজনকে গ্রেপ্তার করা ঞয়। গ্রেপ্তাররা হলেন- মো. হারুন (৫৫), মনোয়ারা বেগম (৩৭) ও রাবেয়া খাতুন (৩৫)। পুলিশ জানায়, নবজাতকের মা তানিয়া বেগমকে তার স্বামী বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন। গর্ভাবস্থায় তিনি তার মায়ের বাড়িতে অবস্থান নেন। একসময় তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে দারিদ্রতার কারণে তার মা রাবেয়া বেগম চিকিৎসা করতে অপারগ হন। পরে হারুন ও মনোয়ারা বেগম নামে দুজনের সঙ্গে শিশুটি পাচারের পরিকল্পনা করেন রাবেয়া। তিনি ওই দুজনের কাছ থেকে বিভিন্ন সময়ে মোট ৫৭ হাজার টাকা নেন। গত ২ অক্টোবর নবজাতকটি জন্মের পর অসুস্থ হলে চিকিৎসার জন্য চমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাবেয়া খাতুন পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী কৌশলে মেয়ে তানিয়াকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। মঙ্গলবার দুপুরে কোনো এক সময় সবার অজান্তে নবজাতকটিকে হারুন ও মনোয়ারার কাছে দিয়ে দেন রাবেয়া। পরে নবজাতকের মা হাসপাতালে এসে সন্তান কোথায় জানতে চান। জবাবে নবজাতকটি চুরি হয়ে গেছে বলে জানান রাবেয়া। পাঁচলাইশ মডেল থানার ওসি জাহিদুল কবির বলেন, শিশুটির মা থানায় অভিযোগ করলে পুলিশ রাবেয়াকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে তিনি স্বীকার করেন, শিশুটিকে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। এর কারণ সম্পর্কে তিনি জানান, গর্ভাবস্থায় তানিয়া তার মায়ের কাছে চলে গিয়েছিল। দরিদ্র রাবেয়া মেয়ের প্রয়োজনীয় খরচ জোগাতে হিমশিম খাচ্ছিলেন। মেয়ের গর্ভাবস্থায় তিনি সিদ্ধান্ত নেন, প্রসবের পর শিশুটি তিনি বিক্রি করে দেবেন। বুধবার হাটহাজারী উপজেলার ফতেয়াবাদ এলাকায় অভিযান চালিয়ে চার দিন বয়সী শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। পরে রাবেয়ার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী হারুন ও মনোয়ারাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় থানায় ২০১২ সালের মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে মামলা করা হয়েছে। এই মামলায় তিনজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে শিশুটি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
# ০৬.১০.২০২১ চট্টগ্রাম #