চলমান সংবাদ

চাপাতি নিয়ে বউ-শ্বাশুড়ি-শ্বশুরকে হত্যাচেষ্টা, যুবক গ্রেপ্তার

দুই হাতে দুই ধারালো চাপাতি নিয়ে স্ত্রীকে এবং শ্বশুর-শাশুড়িকে খুন করতে গিয়েছিলেন এক ব্যক্তি। দাম্পত্য কলহের জেরে সম্মতি না নিয়ে স্ত্রী বাপের বাড়ি চলে যাওয়ায় তাকে খুন করতে গিয়েছিলেন তিনি। দরজা ভাঙতে দেরি হওয়ায় এবং ততক্ষণে পুলিশ পৌঁছে যাওয়ায় ‘খুনোখুনির’ হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে পরিবারটি। এমনকি পুলিশ দেখে ওই ব্যক্তি নিজের গলায় চাপাতি চালিয়ে আত্মহত্যারও চেষ্টা করেন সুজন দাশ (৪২) নামে ওই ব্যক্তি। কিন্তু রূদ্ধশ্বাস এক ঘণ্টার অভিযানে ওই পরিবারকে উদ্ধার করেছে পুলিশ, কৌশলে নিবৃত্ত করে সুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পুলিশী তৎপরতায় হত্যাকান্ড থেকে যেমন রক্ষা পেয়েছে এক পরিবার, একইসঙ্গে একটি আত্মহত্যার প্রচেষ্টাও পুলিশ রুখে দিয়েছে।  শনিবার (৭ আগস্ট) রাত ১১টার দিকে নগরীর ডবলমুরিং থানার পূর্ব গোসাইলডাঙ্গা এলাকায় মিনু ম্যানশনের ৫ম তলায় এ ঘটনা ঘটে। গ্রেপ্তার সুজন হাটহাজারী উপজেলার পূর্ব মেখল গ্রামের মৃত সাধন দাশের ছেলে। পরিবার নিয়ে সুজন থাকেন নগরীর আসকার দিঘির পাড়ে। সুজনের স্ত্রী সুতৃঞ্চা দাশ পূর্ব গোসাইলডাঙ্গা এলাকার তপন দাশের মেয়ে। ডবলমুরিং থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন বলেন, ১৩ বছর আগে সুজনের বিয়ে হয় সুতৃষ্ণা দাশের সাথে। এই ঘরে তাদের দুই সন্তান রয়েছে। সুজন পুরনো গাড়ি কিনে মেরামতের পর বিক্রি করে থাকেন। তার স্ত্রীর অভিযোগ, তাদের সংসারে ১০ বছর ও ১০ মাস বয়সী দুই মেয়ে আছে। সুজন মাদকাসক্ত। সম্প্রতি পরকীয়ায়ও জড়িয়ে পড়েছে। সুতৃঞ্চা বিষয়টি জানার পর প্রতিবাদ করলে তার সঙ্গে প্রতিদিন ঝগড়া হয়। এমনকি সুজন তাকে কয়েকবার মারধরও করেছে। ঝগড়ার জেরে শুক্রবার সুজনের বাসা থেকে তার অমতে সতৃৃঞ্চা বাবার বাসায় চলে যান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সুজন দুটি চাপাতি কিনে যান স্ত্রীকে খুন করতে। দুই হাতে দুই চাপাতি নিয়ে ভবনের ৫ম তলায় ওঠার সময় জানালা দিয়ে দেখে ফেলেন সুতৃঞ্চা। এরপর তিনি দ্রুত দরজা বন্ধ করে দেন। সুজন প্রথমে দরজায় ধাক্কা দেন। পরে দরজায় এলোপাতাড়ি চাপাতি দিয়ে আঘাত করতে থাকেন। এতে দরজা কিছুটা নড়বড়ে হয়ে গেলে সুতৃঞ্চার বাবা-কাকা মিলে আলনা, টেবিল, সোফা দিয়ে দরজা আটকে রাখেন। এরপর আমাদের খবর দেয়া হয় পুলিশে। ডবলমুরিং থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) অর্ণব বড়ুয়া বলেন, খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি, সুজন চাপাতি দিয়ে বারবার দরজায় আঘাত করছে এবং স্ত্রী ও তার পরিবারের লোকজনকে হত্যার হুমকি দিচ্ছে। আমরা ওঠার সময় সে চাপাতি উঁচিয়ে আমাদের দিকেও কয়েকবার তেড়ে আসে। আমরা দূরে দাঁড়িয়ে তাকে বারবার শান্ত থাকার অনুরোধ করি। এসময় সুজন আমরা চলে না গেলে নিজের গলায় চাপাতি চালিয়ে আত্মহত্যার হুমকি দেন। আমরা তাকে বারবার বোঝাই, চাপাতি ফেলে দিলে তার বিরুদ্ধে কোনো আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে না। আমাদের কথা বিশ্বাস করে একপর্যায়ে সে চাপাতি ফেলে দেয়। তখন আমরা তাকে গ্রেপ্তার করি। তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় দুইটি চাপাতি। তাকে শান্ত করতে আমাদের প্রায় একঘণ্টা সময় লেগেছে। আমরা যদি ঘটনাস্থলে সময়মতো না পৌঁছাতাম তাহলে সে দরজা ভেঙ্গে ফেলত। তখন বড় ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারত। এ ঘটনায় সুতৃঞ্চা বাদি হয়ে সুজনের বিরুদ্ধে আত্মহত্যার চেষ্টা, হত্যাপ্রচেষ্টা ও হুমকি প্রদর্শনের অভিযোগে মামলা দায়ের করেছেন। মামলার এজাহারে তিনি সুজনের বিরুদ্ধে মাদক ও পরকীয়ায় আসক্ত হওয়ার অভিযোগ করেন। ১৩ আগস্ট ভাইয়ের বিয়ে উপলক্ষে সুতৃঞ্চা বাবার বাড়িতে এসেছিলেন বলে এতে উল্লেখ করা হয়। # ০৮.০৮.২০২১ চট্টগ্রাম #