চলমান সংবাদ

শুল্কমুক্ত পণ্যের আড়ালে উচ্চশুল্কের সিগারেট আমদানি সাড়ে ১৪ কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকির চেষ্টা

 শুল্কমুক্ত সুবিধার প্লাস্টিক হ্যাঙ্গার আমদানির মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে উচ্চশুল্কের বিদেশি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ৬০ লাখ সিগারেট এনেছে ঢাকার একটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান। চট্টগ্রাম বন্দরে কাস্টমস কর্মকর্তারা সিগারেটগুলো জব্দ করেন। এর মধ্য দিয়ে প্রায় সাড়ে ১৪ কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকির চেষ্টা করা হয়েছিল বলে জানিয়েছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার (৩ জুন) রাতে চট্টগ্রাম বন্দরের এনসিটি জেটি থেকে ঘোষিত আমদানি পণ্য খালাসের সময় সিগারেটগুলো জব্দ করা হয়। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের এআইআর (অডিট, ইনভেস্টগেশন অ্যান্ড রিসার্চ) টিম সিগারেটগুলো জব্দ করে। চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ জানায়, আমদানি চালানে মোট ৩০০ কার্টন ছিল। প্রতিটি কার্টনের ভেতরে আরও দুটি লুকায়িত কার্টন ছিল। সেখানে মূলত সিগারেট ছিল। সিগারেটের মধ্যে ইজি, মন্ড ও অরিস ব্র্যান্ডের প্রতিটি ২০ লাখ করে মোট ৬০ লাখ শলাকা পাওয়া যায়। এর ওজন প্রায় ৩ মেট্রিকটন এবং বাজারমূল্য আনুমানিক সাড়ে চার কোটি টাকা। চট্টগ্রাম কাস্টমসের এআইআর শাখার সহকারী কমিশনার রেজাউল করিম বলেন, সাভারের রাজ ফুলবাড়িয়া এলাকার ভার্সেটাইল এটায়ার চীন থেকে এক কন্টেইনার (দুই লাখ ৪১ হাজার ৫০০ পিস) প্লাস্টিক হ্যাংগার আমদানির ঘোষণা দেয়। ‘এমভি অ্যালিয়ন’ জাহাজে করে ২৮ মে কন্টেইনারটি বন্দরে এসে পৌঁছায়। স্থানীয় সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট জয়িতা ট্রেড কর্পোরেশন কনটেইনারটি খালাসের জন্য গত ১ জুন কাস্টমসে বিল অব এন্ট্রি দাখিল করে। শুল্কায়ন প্রক্রিয়া শেষ করে বৃহস্পতিবার বিকেলে বন্দরের এনসিটি ইয়ার্ডে কনটেইনার থেকে কাভার্ড ভ্যানে কার্টনগুলো খালাস শুরু হয়। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সন্ধ্যা ৬টার দিকে কাস্টমসের এআইআর টিম গিয়ে খালাস বন্ধের নির্দেশ দেয়। এরপর কাভার্ড ভ্যান থেকে কনটেইনারগুলো নামিয়ে কায়িক পরীক্ষা করা হয়। সেখানে প্রতিটি কার্টনের ভেতরে লুকায়িত অবস্থায় আরও দু’টি করে কার্টন পাওয়া যায়। রাতে কাস্টমস, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট, বন্দর ও নিরাপত্তা বাহিনীর প্রতিনিধির উপস্থিতিতে চালানটি তল্লাশি করে কাস্টমসের কর্মকর্তারা। কাস্টমস কর্মকর্তা বলেন, ওই চালানে একটি কার্টন পরীক্ষা করে ভেতরে অন্য আমদানিকারকের নাম পাওয়া যায়। কার্টনগুলোর প্রতিটির গায়ে গাজীপুরের তুরাগ গার্মেন্টস অ্যান্ড হোসিয়ারি মিলস লিমিটেড নামে একটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের স্টিকার লাগানো আছে। চালানের ৩০০ কার্টনের ভেতরে আলাদা ৬০০ কার্টনে ইজি, মন্ড ও ওরিস ব্রান্ডের মোট ৬০ লাখ শলাকা বিদেশি সিগারেট পাওয়া যায় যার বাজার মূল্য প্রায় চার কোটি টাকা। কাস্টমস কর্মকর্তা রেজাউল করিম বলেন, প্রথমত হ্যাঙ্গার আমদানির ঘোষণা দেওয়া হলেও কোনো হ্যাঙ্গারই কার্টনে পাওয়া যায়নি। দ্বিতীয়ত তুরাগ গার্মেন্টসের নামে কোনো আমদানির ঘোষণা ছিল না। হ্যাঙ্গার শুল্কমুক্ত আমদানি পণ্য। আর বিদেশি সিগারেট শর্তযুক্ত উচ্চশুল্কের আমদানি পণ্য। ঘোষণা দিয়ে এই বিদেশি সিগারেট আমদানি করলে প্রায় সাড়ে ১৪ কোটি টাকা শুল্ক নির্ধারণ হত। সেটা ফাঁকি দেওয়ার জন্যই আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান এই জালিয়াতি করেছে। আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানসহ জালিয়াতির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। # ০৪.০৬.২০২১ চট্টগ্রাম #