বিজ্ঞান প্রযুক্তি

বিজ্ঞান ভাবনা (১৪৩): ক্রকুস সিটি হলে সন্ত্রাসী হামলা

– বিজন সাহা

বিজন সাহা (ফাইল ছবি)

প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের রেশ মুছতে না মুছতেই রাশিয়ায় নেমে এলো শোকের কালো ছায়া। সন্ত্রাসবাদীরা হামলা করল ক্রকুস সিটি হলে। যে সার্কেল লাইন মস্কো শহর থেকে মস্কো বিভাগকে আলাদা করছে সেই হাইওয়ের পাশে এই আধুনিক কনসার্ট কাম রিক্রিয়েশন হল অবস্থিত। নতুন রাশিয়ায় পশ্চিমা ধাঁচের সংস্কৃতি প্রবেশের পথম জানালাগুলোর একটি। বিশাল এই কেন্দ্রে বিভিন্ন ধরণের প্রদর্শনী একের পর এক লেগেই আছে। মানুষের যাতায়াতের সুবিধার জন্য কয়েক বছর আগে সেখানে নতুন মেট্রো স্টেশন পর্যন্ত খোলা হয়েছে। ইদানিং অবশ্য মেট্রো লাইন মস্কোর বাইরে অনেক জায়গায়ই চলে গেছে। অনেকগুলো হলের সমন্বয়ে গঠিত এই মিনি শহরে একই সাথে চলে বিভিন্ন প্রতিযোগিতা, কনসার্ট আরও কত কী। এক সময় বিভিন্ন নামী দামী বিদেশী কোম্পানির বিভিন্ন ব্র্যান্ডের প্রদর্শনীও এখানে হত। ক্যানন, নাইকন এরাও বিভিন্ন সময়ে এদের প্রোডাক্ট এখানেই দেখাত। ভৌগলিক অবস্থান, জনপ্রিয়তা এসব এখানে যেকোনো ধরণের আক্রমণ রুশ প্রশাসনের বিরোধীদের জন্য বাড়তি দৃষ্টি আকর্ষণ করার সুযোগ করে দেয়। আর এই আক্রমণ যে ঠিক নির্বাচনের পর পর প্রশাসনের গাফিলতি বা শিথিলতা দেখিয়ে জন মনে এদের কার্যকারিতা সম্পর্কে প্রশ্ন জাগানোর প্রচেষ্টা সেটা বোঝা কষ্টকর নয়। কিন্তু এ ধরণের কাজ যখন বাসায়েভ বা কোন সন্ত্রাসবাদী দল করে তখন এক কথা, আর যখন কোন দেশ করে সেটা ভিন্ন কথা। আর তাই ঘটনার প্রায় সাথে সাথেই এ নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্ন দেখা দেয়, প্রচেষ্টা চলে কোন সন্ত্রাসী সংগঠনের কাঁধে এর দায় চাপিয়ে দেবার।

২২ শে মার্চ ক্রকুস সিটি হলে আক্রমণের সাথে সাথেই সে খবর ছড়িয়ে পড়ে। ঐ সময় মস্কোর অন্যান্য জনবহুল স্থান থেকে দ্রুত লোকজনদের সরিয়ে নেবার ব্যবস্থা করা হয়। যেহেতু আমার বড় মেয়ে সেই সময় মস্কো সিটি নামে আরও এক জনপ্রিয় স্থানে ছিল আর ওদের সেখান থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছিল তাই জানি এসব করা হয়েছে কোন রকম প্যানিক সৃষ্টি না করে। এটা অবশ্য নতুন কিছু নয়। এদেশে সব সময়ই এ ধরণের কাজ করা হয় ঠাণ্ডা মাথায়, প্যানিক সৃষ্টি না করে। আর একই সাথে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে এর পেছনে কারা। তখন পর্যন্ত ভিডিও ফুটেজে চার জন সন্ত্রাসবাদীর ছবি দেখা যাচ্ছিল, বোঝা যাচ্ছিল ওরা মধ্য এশিয়ার। কিন্তু এর বেশি কিছু জানা যাচ্ছিল না। যদিও একটা জিনিস প্রথম থেকেই পরিষ্কার ছিল যে পেছন থেকে কোন শক্তিশালী গোয়েন্দা সংস্থার সমর্থন না থাকলে এ ধরণের আক্রমণ করা সম্ভব ছিল না। এটাও শোনা যাচ্ছিল যে নির্বাচন উপলক্ষ্যে আগের দিন পর্যন্ত রসগভারদিয়া বা রুশ গার্ড এখানে নিরাপত্তার দায়িত্বে লিপ্ত ছিল। যেহেতু এটা প্রাইভেট স্থাপনা তাই নির্বাচনের পরে দায়িত্ব চলে যায় অন্যদের হাতে। হয়তো সেই সুযোগ ব্যবহার করেই আক্রমণ করা হয়। পরে ভিডিও ফুটেজ থেকে জানা যায় যে হামলাকারীরা এর আগে বিভিন্ন সময় এখানে এসেছে। এসবও প্রমাণ করে যে আক্রমণ ছিল পূর্বপরিকল্পিত।

দেশের খবর শুনে মনে হয় তারা ওভার কনফিডেন্ট যে এই হামলা করেছে আইএস। আসলে হামলার খবর প্রচার হবের পর থেকে প্রথম কয়েক ঘণ্টা পশ্চিমা মাধ্যম এ নিয়ে কোন উচ্চ্যবাচ্য করেনি। তাদের অনেকেই তখন ব্যস্ত ছিল ব্রিটেনের প্রিন্সেসের ক্যান্সার নিয়ে। তারপর হঠাৎ করেই সব জায়গা থেকে একযোগে এর পিছনে আইএস-এর হাত আছে বলে প্রচার করা হয়। বলা হয় আমেরিকা তার নাগরিকদের এই হামলা সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়েছিল। এও বলা হয় মধ্য এশিয়ার চার জন যোদ্ধা এর পেছনে। এভাবে একদিকে তারা রুশ সরকারকে গাফিলতির জন্য দোষী সাব্যস্ত করতে চায়। অন্য দিকে এই প্রচারে জনমনে মধ্য এশিয়ার মানুষ সম্পর্কে ক্ষোভের সৃষ্টি করে জাতীয়তাবাদী সেন্টিমেন্ট উস্কে দেবার প্রয়াস দেখা যায়। দু একটি জায়গার রাশিয়া রাশ্যানিদের জন্য এমন স্লোগান শোনা যায়। এ নিয়ে ভ্লাদিমির পুতিন বলেন এ ধরণের স্লোগান, এ ধরণের প্রচেষ্টা রুশদের জন্যই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিকর। পরে মার্কিন পত্রপত্রিকার খবর অনুযায়ী হোয়াইট হাউজ সব খবর রাশিয়াকে দেয়নি তাদের উৎস উদ্ঘাটন হতে পারে এই আশঙ্কায়। কিন্তু এ নিয়ে এখানকার ও বাইরের অনেক বিশেষজ্ঞ কী ভাবছে সেটাও জানা দরকার। এখনও তদন্ত চলছে। তাই আজকের লেখার উদ্দেশ্য পশ্চিমা ভার্সনের সাথে দ্বিমত পোষণকারী মানুষ কী ভাবছে সেটা তুলে ধরা।

আইএস এর আগেও বিভিন্ন দেশে আক্রমণ চালিয়েছে। প্রতিটি সংগঠনের আক্রমণের নিজস্ব স্টাইল থাকে। প্রথম থেকেই বোঝা গেছে যে এদের কোন রাজনৈতিক বা অর্থনৈতিক দাবি দাওয়া ছিল না। তারা শুরু থেকেই হত্যা যজ্ঞ চালিয়ে গেছে। এর আগে রাশিয়ায় একাধিক বার মৌলবাদীরা আক্রমণ করেছে, কিন্তু যখনই জিম্মি নিতে পেরেছে তখনই তারা রাজনৈতিক দাবি দাওয়া সামনে এনেছে। সেটা আমরা দেখেছি নরড অস্ট, বিসলান এসব ক্ষেত্রে। তার মানে যদিও আমেরিকা বলেছিল সিরিয়ায় রাশিয়ার ব্যবহারে অখুশি বলেই তারা আক্রমণ করেছে, সেটা ধোপে টেকে না। কারণ শুধু যে রাজনৈতিক দাবি দাওয়া ছিল না তাই নয়, তারা আইএসের পক্ষে কোন স্লোগান পর্যন্ত দেয়নি। আক্রমণের কয়েক ঘণ্টা পরে ইউক্রেনে পালানোর পথে হামলাকারীরা ধরা পড়ে। তারা যে অর্থের বিনিময়ে হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে সেটা তারা তখনই স্বীকার করেছে। যারা ধর্মের দোহাই দিয়ে সব সময় আক্রমণ চালায় তারা হঠাৎ অর্থের জন্য এটা করবে কেন? তাছাড়া এসব হামলাকারীরা হয় আত্মঘাতী। সেদিক থেকে ভাবলেও এরা আইএসের লোক কিনা সেটা নিয়েও সন্দেহ জাগে। তাছাড়া আইএসের লোকেরা আসে আত্মঘাতী আঘাত হানতে। সেই পরিকল্পনা এই চার জনের ছিল না। বরং ছিল পালিয়ে যাবার পরিকল্পনা। আর ঐ পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই তারা হলে আগুন লাগায়। উল্লেখ করা যেতে পারে যে এ পর্যন্ত ১৪৪ জন মারা গেছে, তাদের মধ্যে মাত্র ৪০ জন গুলির আঘতে, বেশির ভাগ অগ্নিকান্ডে শ্বাস রোধ হয়ে, অনেকে পরে হাসপাতালে। আর পালিয়ে যাবার রাস্তা তারা বেছে নিয়েছে ইউক্রেন। যতদূর জানা গেছে সেখানে তাদের জন্য অপেক্ষা করছিল বীরের সম্বর্ধনা। পরবর্তীতে এদের টেলিফোনে অর্থ লেনদেনের যে ট্র্যাক পাওয়া যায় সেটাও ইউক্রেনের দিকেই ইঙ্গিত করে। কিন্তু পশ্চিমা বিশ্ব এমনকি হামলাকারীরা ধরা পড়ার আগেই বলতে শুরু করে এতে ইউক্রেনের হাত নেই। এটা অনেকটা “ঠাকুর ঘরে কে রে? আমি কলা খাই না” র মত। তাছাড়া সন্ত্রাসবাদী হামলা ইউক্রেনের জন্য নতুন কিছু নয়। প্রায় প্রতিদিনই এরা বেসামরিক মানুষদের লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে। ২০১৪ থেকে এরা সেটাই চালিয়ে গেছে দনবাসের সাধারণ মানুষের উপর। ইতিমধ্যে দারিয়া দুগিনা সহ অনেককে হত্যা করার দায় ইউক্রেনের গোয়েন্দা সংস্থা স্বীকার করেছে। ০২ এপ্রিল এদের গোয়েন্দা বাহিনী ইউক্রেন থেকে আগত একটি ট্রাক আটক করে। সেখানে ছিল ৯৫ টি আইকন। ইউরোপের ছয়টি দেশ ঘুরে এই ট্রাক রাশিয়ায় প্রবেশ করে। আইকনগুলো হেক্সাগন দিয়ে ভরা ছিল। এর মানে সেগুলো ব্যবহার করে তারা রাশিয়ার বিভিন্ন গির্জায় হামলা চালাতে চেয়েছিল। শুধু তাই নয়, ইতিমধ্যে তারা তাতারস্তানের দুটো শহরে আক্রমণ চালিয়েছে। অর্থাৎ সর্বান্তকরণে চেষ্টা করছে যুদ্ধের পরিসর বাড়াতে। ওদিকে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন যুদ্ধ বাবদ ১০০ বিলিয়ন ইউরো দেবার পরিকল্পনা করছে যাতে কম করে হলেও আরও পাঁচ বছর যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া যায়। হয়তো সেক্ষেত্রে ইউক্রেনে সৈন্য সংকট দেখা দেবে। ইউরোপের অনেক দেশই সৈন্য পাঠানোর কথা ভাবছে।

পড়ুন:  বিজ্ঞান ভাবনা (১৪৪):এক হয়ে নয় এক সাথে   – বিজন সাহা

ক্রকস সিটি হলে হামলার উদ্দেশ্য ছিল এখানকার সমাজকে দ্বিধা বিভক্ত করা। সেই উদ্দেশ্য সফল হয়নি। মানুষ নিজের জীবনে ঝুঁকি নিয়ে সেদিন ক্রকসের ক্ষতিগ্রস্থদের বাঁচিয়েছে, পরের কয়েক দিন ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে হাজার হাজার মানুষ রক্ত দিয়েছে, ক্রকসে মৃতদের উদ্দেশ্যে সেখানেই এক বিশাল কনসার্ট বা রেকভিউমের আয়োজন করা হলে শীত বৃষ্টি উপেক্ষা করে হাজার হাজার মানুষ সেখানে গিয়ে সংহতি জানিয়েছে। এখন নতুন করে আরও প্রচুর মানুষ যুদ্ধে যেতে ভলেন্টিয়ার হিসেবে নাম লেখাচ্ছে। পশ্চিমা বিশ্ব বার বার রাশিয়ার মানুষের চিনতে, বুঝতে ভুল করেছে। তারা যতই আঘাত হানে এদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করতে, এরা তত বেশি করে ঐক্যবদ্ধ হয়।

সেনাদের সাথে কথা প্রসঙ্গে প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেছেন আমেরিকা বা ন্যাটো যদি ইউক্রেনে এফ-১৬ দেয় সেটা রাশিয়ার টার্গেট হবে আর আব্রাহামস, লেপার্ড ইত্যাদির মতই ধ্বংস করা হবে। যদি অন্য কোন দেশ থেকে এসব বিমান রুশ বাহিনী আক্রমণ করে তাহলে সেই দেশ রাশিয়ার লিগ্যাল টার্গেট হবে। তাছাড়া এফ-১৬ পারমানবিক বোমা বহন করতে পারে, সেটাও রাশিয়া মাথায় রাখবে বলে পুতিন জানান। রাশিয়ার সাংসদ ও পার্লামেন্টের ডেপুটি প্রধান পিওতর তলস্তয় ফ্রান্সের সেনা পাঠানো সম্পর্কে বলেছেন যারাই আসবে তাদের খুন করা হবে। নেপোলিয়নের সময় রাশিয়ার এলিট শ্রেণি ফ্রেঞ্চ ভাষায় কথা বলত, ফ্রান্স সম্পর্কে তাদের দুর্বলতা ছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে জেনারেল দ্য গলের কারণে এরা ফ্রান্স সম্পর্কে বেশ আবেগপ্রবণ ছিল। দিন দিন সেটা কমছে। এছাড়া এরা ইতিমধ্যে ইউক্রেন গোয়েন্দা সংস্থার প্রাক্তন প্রধান দানিলভ এদের লিগ্যাল টার্গেট বলে ঘোষণা করেছে। ফ্রান্সের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী শইগুকে ফোন করে ইউক্রেন দায়ী নয় বলে বোঝানো চেষ্টা করলে শইগু সেটা নাকচ করে দেন। রুশ নিরাপত্তা পরিষদ প্রধান পাত্রুশভ ও এফএসবি প্রধান বোরতনিকভ উভয়েই বলছেন যে সব কিছু এই আক্রমণের পেছনে ইউক্রেনের যোগাযোগ ছিল বলে নির্দেশ করে। শুধু তাই নয় এর পেছনে ইংল্যান্ড ও আমেরিকার হাত ছিল বলেও তারা মনে করেন। ইতিমধ্যে পশ্চিমা পত্রপত্রিকায় খবর বেড়িয়েছে যে ক্রকস সিটি হলে আক্রমণ করা হবে সেটা পশ্চিমা গোয়েন্দা সংস্থার জানা ছিল না। সব দেখে মনে হয় যুদ্ধক্ষেত্রে সুবিধা করতে না পেরে ইউক্রেন সন্ত্রাসের পথ বেছে নিয়েছে। পশ্চিমা বিশ্ব বিশেষ করে ইউকে ও ইউএস এসব জানলেও রাশিয়াকে সতর্ক করেনি, শুধু ভাসা ভাসা ইঙ্গিত দেয়া ছাড়া। গত বছরের শেষ দিকে আমেরিকান জেনারেল মিলি পারতপক্ষে ইউক্রেনকে সন্ত্রাসের পথ বেছে নিতে বলেন যাতে রুশরা রাতে ঘুমুতে না পারে। ভিকি নুল্যান্ড পদত্যাগের আগে আবার সেই ইঙ্গিতই দেন। ন্যাটো এক দিকে বলছে রাশিয়ার সাথে সে যুদ্ধরত নয়, অন্য দিকে বলছে ইউক্রেনের জয় তাদের অস্তিত্বের জন্য অপরিহার্য। ফ্রান্স বাদে বাল্টিকের ছোট ছোট দেশগুলো ও ফিনল্যান্ড সেনা পাঠানোর কথা ভাবছে। আমেরিকা ইউক্রেনে সেনা পাঠানোর সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছে। সে এখন চাইছে ইউরোপের কাঁধে সব চাপিয়ে নিজেরা কেটে পড়তে যা অনেক বারই তারা করেছে। তাদের মিশন সফল। ইউরোপের বাজার তাদের। ইউরোপের অর্থনীতি বিধ্বস্ত। এখন মধ্যপ্রাচ্য ও তাইওয়ান তার মূল প্রায়োরিটি। রাশিয়া থেকে আমেরিকায় পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য ইউরেনিয়াম বহনকারী জাহাজ ইউরোপে আটক। লভেভের পাশে বিশাল গ্যাস সংরক্ষণ কেন্দ্র প্রায় ধ্বংস। দনেপর জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র রুশ রকেট হামলায় বিধ্বস্ত। পোল্যান্ড ও জার্মানির রেকর্ড পরিমাণ রুশ গ্যাস আমদানি। ইউক্রেনের শস্য আটকে দিয়ে ইউরোপের বিভিন্ন দেশের রুশ শস্য ক্রয়। স্ব আরোপিত নিষেধাজ্ঞার ধাক্কায় জার্মানির অর্থনীতিটিতে রিসেশন। রাশিয়ার অর্থনীতি বিভিন্ন সুচকে ইউরোপের এক নম্বর আর আমেরিকা, চীন, ভারত ও জাপানের পরে পঞ্চম স্থানে। এলন মাস্ক বলেছেন ওদেসা হাতছাড়া হবার আগেই ইউক্রেনের শান্তি চুক্তি করা উচিৎ। কিন্তু রুশ দেশের বিভিন্ন শহরে সন্ত্রাসী আক্রমণ সেই সম্ভাবনা দূর করে দিচ্ছে। ইতিমধ্যে ব্রিটেনের পত্রপত্রিকা জানাচ্ছে ইউক্রেনের ক্রিমিয়ার সেতু আক্রমণের পরিকল্পনা। এরা বলছে যাতে ইউক্রেন থেকে আর কোন অস্ত্র রুশ শহর টার্গেট করতে না পারে সেই ব্যবস্থা নেবে। এর মানে হয়তো সমস্ত ইউক্রেনের দখল নিতে হবে। এত দিন ন্যাটো রাশিয়ার কাছে আসত, এবার রাশিয়া যাবে ন্যাটোর দোরগোড়ায়। তবে এটাও ঠিক কালিনিনগ্রাদ একাধিক ন্যাটো দেশের সাথে সীমান্ত ভাগাভাগি করে। সেদিন এক পত্রিকায় দেখলাম পশ্চিমা বিশ্বে আটককৃত রাশিয়ার ৪০০ বিলিয়ন ডলার গায়েব করলে পশ্চিমা বিশ্ব বিশেষ করে জি-৭ এর অর্থনীতি ব্ল্যাক হোলে পরিণত হবে। আমরা জানি ব্ল্যাক হোলে ফিজিক্সের কোন নিয়মই কাজ করে না। ইউক্রেন যুদ্ধেও মনে হয় কোন নিয়ম, কোন ভবিষ্যৎ বাণী আর কাজ করছে না।

গবেষক, জয়েন্ট ইনস্টিটিউট ফর নিউক্লিয়ার রিসার্চ
শিক্ষক, রাশিয়ান পিপলস ফ্রেন্ডশিপ ইউনিভার্সিটি, মস্কো